• আগামী দশকে দেশের ৭০-৮০ লক্ষ যুব শ্রমিকের কাজে করতে বাধ্য হবে
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৮ মার্চ ২০২৪
  • ৮৩ শতাংশই যুব, শিক্ষিত বেকার বেডে়ছে ১২ শতাংশ দিল্লি, ২৭ মার্চ? দেশের যুবসমাজকে নিয়ে বিস্ফোরক রিপোর্ট পেশ করল আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন৷ সংগঠনের ২০২৪ সালের রিপোর্ট বলছে, দেশে কর্মহীনদের মধ্যে ৮৩ শতাংশই হল যুবসমাজ৷ এই রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বেকারি দূরীকরণ, আত্মনির্ভর ভারত নিয়ে গালভরা প্রচারে একপ্রকচার জল ঢেলে দিয়েছে বলাই যায়৷ লোকসভা ভোটের আগে এই রিপোর্ট সাধারণত দেশের শাসকদলের কাছে খুব স্বস্তিরকর নয়৷ কারণ এই রিপোর্ট দেশের কর্মহীনতার কঙ্কালসার চেহারাটি বেরিয়ে এসেছে৷ সমীক্ষা রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে,  ২০০০ সালে শিক্ষিত যুবকদের ৫৪ শতাংশ ছিলেন কর্মহীন৷ ২০২২ সাল পর্যন্ত তা বেডে় হয়েছে ৬৬ শতাংশ৷
    আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন এবং ইনস্টিটিউট ফর হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট যৌথভাবে সমীক্ষাটি চালায়৷ চিফ ইকনমিক অ্যাডভাইজার ভি অনন্ত নাগেশ্বরন ইন্ডিয়া এমপ্লয়মেন্ট রিপোর্ট ২০২৪ প্রকাশ করেন৷ তাতে জানা গিয়েছে, বর্তমানে শিক্ষিত কর্মহীন যুবদের মধ্যে পুরুষের (৬২.২ শতাংশ) তুলনায় মেয়েদের (৭৬.৭ শতাংশ) সংখ্যা বেশি৷ গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে যে, ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কর্মরত এবং কর্মহীন যুবদের সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটেছে৷ কিন্ত্ত তা কমেছে কোভিড অতিমারির সময়৷ ২০০০ সালে কর্মরত যুবদের অর্ধেক স্বনিযুক্ত ছিলেন৷ মাত্র ১৩ শতাংশ চাকরি করতেন এবং ৩৭ শতাংশ অস্থায়ী কাজে নিযুক্ত ছিলেন৷ ২০১২তে সেটা ছিল ৪৬, ২১, ৩৩ শতাংশ৷ ২০১৯ সালে ৪২, ৩২, ২৬ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ৪৭, ২৮ ও ২৫ শতাংশ হয়৷
    সমীক্ষার মন্তব্য, আগামী দশকের মধ্যে দেশের ৭০-৮০ লক্ষ যুব শ্রমিকের কাজে করতে বাধ্য হবে৷ একইসঙ্গে পাঁচটি চাবিকাঠিও উল্লেখ করা হয়েছে সমীক্ষায়৷ সেগুলি হল, চাকরির ক্ষেত্র বৃদ্ধি, কর্মের দক্ষতা বৃদ্ধি, শ্রমবাজারে অসাম্য দূর করা, দক্ষ শ্রমিক ও শ্রমনীতির রূপায়ণ এবং শ্রমবাজারের কাঠামো ও যুব কর্মীর সেতুবন্ধনের ব্যাপারে অজ্ঞতা কাটিয়ে তোলা৷
    নাগেশ্বরন আরও বলেন, প্রতিটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যায় সরকার উদ্যোগ নেবে, একথা মাথায় আনা ঠিক নয়৷ আমাদের এই ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসা উচিত৷ এই রিপোর্ট প্রকাশ হতেই নরেন্দ্র মোদী সরকারকে তুলোধনা করতে লেগেছে বিরোধীরা৷ কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে বুধবার এক্সবার্তায় বলেছেন, মোদী সরকারের ব্যর্থতার কুফল ভুগছে দেশের যুবসমাজ৷ সরকার তাঁদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিয়েছে৷ রিপোর্টই বলছে, কর্মহীনতার সমস্যা ভারতের সামনে গভীর সঙ্কট ডেকে এনেছে৷
    তৃণমূলের রাজ্যসভা সদস্য সাগরিকা ঘোষও ফুসে উঠেছেন রিপোর্টে ব্যাপারে৷ নাগেশ্বরনের হাত গুটিয়ে নেওয়া মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এক্সে লিখেছেন, মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলছেন, বেকারির সমস্যা মেটাতে সরকারের কিছু করার নেই৷ মোদী কি গ্যারান্টি হল স্বপ্নো কি গ্যারান্টি৷ এখানে শুধু স্বপ্ন ফেরি করা হয়, তার বেশি কিছু নয়৷
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)