৮১ বছরের 'বোসদা' একুশে জুলাইয়ের স্মৃতিতে আজও আঙুলের ফাঁকে ধরে রেখেছেন রঙিন তুলি...
২৪ ঘন্টা | ২৮ মার্চ ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ছোটবেলায় বাঘ-সিংহর ছবি আঁকতেন। তখন থেকেই আঁকার প্রতি ছিল তাঁর টান। ক্রমে আঁকা হয়ে দাঁড়ায় তাঁর নেশা। পরে সেটাই পেশায় পরিণত করেন দেবাশীষ বসু। ১৯৬১ সালে ম্যাট্রিক পাস করার পরে হাওড়ায় আইটিআই-তে ভর্তি হন। সেখানে পেন্টার-ডেকরেটরের ট্রেনিং নেন। প্রথম-প্রথম রাস্তার পাশে থাকা মাইল ফলকে লিখতেন। পরে হোর্ডিং ও দেওয়াললেখা শুরু করেন।
এলাকার সকলে তাঁকে 'বোসদা' বলে চেনেন। ৮১ বছর বয়স। এই বয়সেও নিপুণ হাতের তুলিতে ফুটিয়ে তোলেন প্রার্থীদের নাম ও প্রতীক। আদতে উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা হলেও ৪৭ বছর আগে পান্ডুয়ায় চলে আসেন। বর্তমানে তিনি পান্ডুয়ারই বাসিন্দা। দেবাশীষবাবুর পরিবার ছিল কংগ্রেসি ঘরানার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের আমলে তাঁর কাকা অবনীকুমার বসু উলুবেড়িয়া দক্ষিণ থেকে কংগ্রেসের বিধায়ক হয়েছিলেন। তখন তিনি কাকার হয়ে দেওয়াল লিখতেন। এখন দেবাশীষবাবু তৃণমূল ছাড়া আর অন্য কারওর দেওয়াল লেখেন না। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী। পান্ডুয়ার দিঘির উত্তরপাড়ের বাসিন্দা হওয়ায় সেই এলাকার দুটি বুথে বিনা পারিশ্রমিকে দেওয়াল লেখেন। তবে তৃণমূলেরই অন্য কেউ ডাকলে সেখান থেকে তিনি পারিশ্রমিক নেন। হুগলি লোকসভায় এবার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সমর্থনেই এখন চলছে দেওয়াললিখন। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় তাঁর হাতে এখন আর বেশি সময় নেই। এলাকার কয়েকশো দেওয়াললেখার দায়িত্ব তার কাঁধে। তাই সকাল হলেই রং-তুলি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। দেবাশীষবাবু জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। ১৯৯৩ সালে ২১ জুলাই রাইটার্স ফিল্ডিং অভিযানে ১৩ জন যুব কংগ্রেসকর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। আঘাত পেয়েছিলেন তৎকালীন যুব কংগ্রেসনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দুঃখে ১৩ দিন খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। পরে মায়ের অনুরোধে খাওয়া-দাওয়া করেন। পান্ডুয়া তৃণমূল প্রাক্তন ব্লক সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ বলেন, বোসদা আমাদের পুরনো কর্মী। ভোটের সময় তিনিই আমাদের ভরসা।একুশে জুলাই এখন তৃণমূলের শহিদ দিবস। তবে একুশে জুলাইয়ের প্রেক্ষাপট জানতে গেলে পিছিয়ে গিয়ে পৌঁছতে হবে ১৯৯৩ সালে। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় মহাকরণ অভিযানের ডাক দেন। সেই অভিযানেই পুলিসের গুলিতে সেদিন প্রাণ হারান ১৩ জন। সেদিন পুলিসের গুলি চালানো নিয়ে তখনও প্রশ্ন উঠেছিল, আজও ওঠে। ২১ জুলাই নিয়ে বসে কমিশনও।