এই সময়: তাঁর বেতন, তাঁর উপার্জন এবং সঞ্চয়— সবই একান্ত ভাবে তাঁর সম্পত্তি। এমনকী, এ সম্পত্তি দেশেরও সম্পদ নয়। এর বাইরে তাঁর আর কোনও অর্থের সংস্থান নেই। সেই কারণেই তিনি লোকসভা ভোটে না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ কথা শুনিয়েছেন যিনি, সারা দেশের অর্থ ভাণ্ডার সামলানো তথা তহবিল বণ্টনের দায়িত্বভার তাঁরই হাতে। তিনি দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। দলের তরফ থেকে তামিলনাড়ু অথবা অন্ধ্রপ্রদেশের মধ্যে যে কোনও একটি রাজ্য থেকে লোকসভা ভোটে লড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু তিনি না করে দিয়েছেন। বুধবার নয়াদিল্লিতে আয়োজিত ‘টাইমস নাও সামিট-২০২৪’-এ একটি প্রশ্নের উত্তরে এমন অ-জানা কথা শোনালেন নির্মলা নিজেই।এদিন নির্মলা বলেন, ‘দল আমাকে ভোটে লড়ার কথা বলেছিল। কিন্তু ৭-১০ দিন চিন্তা করার পরে আমি বলেছিলাম, হয়তো, লড়তে পারব না। কারণ, ভোটে লড়ার মতো অর্থ আমার কাছে নেই।’ অন্য একটি প্রশ্নে নির্মলা বলেন, ‘আমারও একটি সমস্যা আছে। অন্ধ্র হোক বা তামিলনাড়ু—আরও একটি প্রশ্ন অবধারিত ভাবে উঠবে। আপনি কি সেই সম্প্রদায়ের, বা সেই ধর্মের।’ তাঁর সংযোজন, ‘দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বলেছিলেন, ওই দুই রাজ্যের যে কোনও একটি থেকে আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি।’
কিন্তু দেশের অর্থমন্ত্রীর কাছে তহবিল নেই কেন?
নির্মলার সপাট জবাব— ‘আমার বেতন, আমার উপার্জন এবং আমার সঞ্চয় একান্ত ভাবেই আমার। এটা দেশের কনসলিডেটেড ফান্ডও নয়।’ অন্য একটি প্রশ্নে সীতারামন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদী দলের জন্য ৩৭০টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন। আমরা তার জন্যই চেষ্টা চালাচ্ছি। এ ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসীও। কারণ, এই সরকার যা দিয়েছে, তা জনগণ দেখেছে।’ নির্মলার সংযোজন, ‘মোদী সরকার স্থিতিশীলতা দিয়েছে, তার উপরে কোনও দুর্নীতি নেই, বিনামূল্যে খাদ্য বণ্টন এবং ১০০ বছর জন্য স্থায়ী সম্পদ তৈরিতে বিনিয়োগ করেছে। সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন দৃশ্যমান। ফলে ৩৭০ কেবল স্বপ্ন নয়, একটি বাস্তব লক্ষ্য।’
কেন্দ্রীয় এজেন্সির সক্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। কংগ্রেস আমলে সিবিআইকে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল ‘খাচাবন্দি তোতা’। সে কথা স্মরণ করিয়ে নির্মলার জবাব, ‘২০০৪ থেকে ২০১৪ থেকে কোনও ব্যবস্থা না নিলেও খাঁচাবন্দি তোতা এখন কাজ করছে৷’ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আয়কর বিভাগের সক্রিয়তা প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘আদালত বা কোনও ট্রাইব্যুনাল তো এই পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি?’
থিম বক্তৃতায়, টাইমস গ্রুপের এমডি বিনীত জৈন বলেন, ‘ভারত এখন আর শুধু ক্রমবর্ধমান নয়, বরং নতুন উচ্চতা ছোঁয়ার লক্ষ্যে ছুটছে। ভারতবর্ষ বৈচিত্র্য ও ঐতিহ্যের দেশ, এবং এখন তা অপ্রতিরোধ্য। রাজনীতির ময়দান থেকে বিশ্বের অর্থনৈতিক মঞ্চ, কূটনৈতিক করিডর থেকে সামরিক সীমানা— বিশ্বের ভবিষ্যৎ গঠনের চেষ্টার পাশাপাশি ভারত সব ক্ষেত্রেই তার পদচিহ্ন রেখে যাচ্ছে।’