তুলি ধরেন শুধু তৃণমূলের জন্যই, ৮১-তেও দেওয়াল লিখন 'পার্টিজান' বোসদার
এই সময় | ২৮ মার্চ ২০২৪
তিনি আক্ষরিক অর্থে 'পার্টিজান'। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে পথ চলা শুরু বহু বছর আগে। তখন বিরোধী নেত্রী ছিলেন তিনি। ১৯৯৩ সালে ২১ জুলাই রাইটার্স বিল্ডিং অভিযানে ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় আঘাত পেয়ে ১৩ দিন খাওয়া দাওয়া বন্ধ রেখেছিলেন। পরে মায়ের অনুরোধে মুখে তুলেছিলেন অন্ন। ভোটের আগে হুগলির সেই 'বোসদা'-ই তৃণমূল প্রার্থী ‘দিদি নং ১’ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে হাতে তুলে নিয়েছেন তুলি। দেওয়ালে রং করেই উন্নয়নের বার্তা তিনি পৌঁছে দিতে চান মানুষের দরবারে।ছোটবেলা থেকেই দেওয়ালে আঁকিবুকি কাটতেন হুগলির পাণ্ডুয়ার দেবাশিস বসু। ১৯৬১ সালে ম্যাট্রিক পাশ করার পর হাওড়ায় আইটিআই-এ ভর্তি হন তিনি। সেখান থেকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ নেন তিনি। প্রথম প্রথম রাস্তার পাশে থাকা মাইল ফলকে লিখতেন।
পরে হোর্ডিং দেওয়াল লেখা শুরু করেন। বর্তমানে তিনি বেকারি মেনটেনেন্সের কাজ করেন। কিন্তু, ভোট এলেই রং-তুলি ধরেন তিনি। তবে তা শুধুমাত্র রাজ্যের শাসক দলের জন্য। দেবাশিসের পরিবার ছিল কংগ্রেস ঘরানার। ড. বিধানচন্দ্র রায়ের আমলে তাঁর কাকা অবনী কুমার বসু উলুবেড়িয়া দক্ষিণ থেকে কংগ্রেসের বিধায়ক হয়েছিলেন। সেই সময় তিনি কাকার জন্য দেওয়াল লিখতেন। বর্তমানে তিনি কেবলমাত্র তৃণমূলের জন্য দেওয়াল লেখেন। পাশাপাশি তিনি রাজ্যের শাসক দলের একজন সক্রিয় কর্মীও।
পান্ডুয়ার দীঘির উত্তর পাড়ের বাসিন্দা হওয়ায় সেই এলাকার দুটি বুথে তিনি বিনা পারিশ্রমিকে দেওয়াল লেখেন। তবে তৃণমূলেরই অন্য কেউ ডাকলে সেখান থেকে তিনি পারিশ্রমিক নেন। হুগলি লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার সমর্থনেই এখন চলছে দেওয়াল লিখন ।
ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় হাতে আর বেশি সময় নেই। এলাকায় কয়েকশো দেওয়াল লেখার দায়িত্ব এখন পড়েছে তাঁর কাঁধে। তাই সকাল হলেই রং তুলি নিয়ে তিনি বেরিয়ে পড়েন দেওয়াল লিখতে। এলাকায় সকলেই তাঁকে বোসদা বলেই চেনেন। ৮১ বছরেও কোনও ক্লান্তি নেই। 'বোসদা' জানান, তৃণমূলের জন্য দেওয়াল লিখতে হবে ভেবেই ক্লান্তি আর তাঁর কাছ ঘেঁষে না। দলের জন্য তাঁর জান কবুল। আপাতত তুলির টানে প্রার্থীদের বার্তা, দলের বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই তাঁর লক্ষ্য। উল্লেখ্য, আদতে উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা হলেও ৪৭ বছর আগে পান্ডুয়ায় চলে আসেন তিনি। বর্তমানে তিনি পাণ্ডুয়ার বাসিন্দা।