• Rabindra Bharati University : ছাত্রেরা নন, ফ্রেশার্স দিলেন কর্তৃপক্ষ, মামলা হাইকোর্টে
    এই সময় | ২৮ মার্চ ২০২৪
  • এই সময়: এমন প্রশ্ন সম্ভবত সাম্প্রতিক অতীতে ওঠেনি। ফ্রেশার্স ওয়েলকামের রাশ কার হাতে থাকা উচিত? এই প্রশ্ন তুলে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করলেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই দু’জন পড়ুয়া। তাঁদের অভিযোগ, গত ২১ ও ২২ মার্চ রবীন্দ্র ভারতীতে নবীনবরণ অনুষ্ঠান হয়েছে। এতকাল এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে এসেছেন ছাত্রেরা অথবা ছাত্র সংসদ।কিন্তু এই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেই ফ্রেশার্স ওয়েলকামের আয়োজন করেন। কিন্তু কেন রীতি না-মেনে, যথাযথ জায়গায় আলোচনা ছাড়াই পড়ুয়াদের বাদ দিয়ে এই ভাবে নবীনবরণ অনুষ্ঠান করা হলো, সেই প্রশ্ন তুলে ওই দুই পড়ুয়া আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। মামলাকারী দু’জনকে সমর্থন করছেন আরও বেশ কয়েক জন পড়ুয়া। একই সঙ্গে ওই অনুষ্ঠানে টাকার লেনদেন নিয়েও অভিযোগ উঠেছে। সব পক্ষের যুক্তি-পাল্টা যুক্তি শুনে আদালত আপাতত রাজ্য সরকারকে এই মামলায় পক্ষ করার নির্দেশ দিয়েছে।

    আদালতের দ্বারস্থ হওয়া পড়ুয়াদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কার্যত একতরফা ভাবে নবীনবরণের গোটা দায়িত্ব পড়ুয়াদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছেন। গোটা অনুষ্ঠান পরিচালনার ভার দেওয়া হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের হাতে। মামলাকারীদের অভিযোগ, এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের রীতি অনুযায়ী সেটা সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক সংস্থা, এগজি়কিউটিভ কাউন্সিল বা ইসি-তে অবশ্যই আলোচনা করার দরকার ছিল। যা এ ক্ষেত্রে করা হয়নি।

    ফ্রেশার্স ওয়েলকামের আয়োজনে মোট ৭ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। অভিযোগ, সেই টাকা নেওয়া হয়েছে ধুঁকতে থাকা দূরশিক্ষার তহবিল থেকে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের দাবি, এমন কথা তাঁর জানা নেই। মামলাকারীদের পাল্টা দাবি, আদালতেই কর্তৃপক্ষ সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন।

    ওই অনুষ্ঠানে প্রাক্তনীদের উপস্থিতি নিয়েও নানা অভিযোগ। পড়ুয়াদের একাংশের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে, এমন প্রাক্তনীদেরই ওই অনুষ্ঠানে ডাকা হয়েছিল। যাঁদের একাংশের বিরুদ্ধে আবার ২০১৯ সালে তফসিলি উপজাতির এক মহিলা অধ্যাপককে জাতিবিদ্বেষী হেনস্থা করার অভিযোগ রয়েছে।

    এই সব নানা অভিযোগ তুলে ফ্রেশার্স ওয়েলকামের রাশ পড়ুয়াদেরই হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে হাইকোর্টের মামলায়। কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই বিষয়ে সরকারি ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও দেননি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শীর্ষকর্তার ব্যাখ্যা, প্রথমত, এই মুহূর্তে ক্যাম্পাসে কোনও নির্বাচিত ছাত্র সংসদ নেই। সেই কারণে ছাত্রছাত্রীদের হাতে নবীনবরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।

    ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের নির্দেশ মতো আধিকারিকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। প্রতিটি কাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। প্রতিটি টাকা খরচের হিসেব সম্বলিত কাগজপত্র রয়েছে। দ্বিতীয়ত, হাইকোর্টে পড়ুয়াদের মামলা আসলে একটি ছাত্র সংগঠনের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। ইসি-তে কেন আলোচনা করা হলো না? ওই কর্তার বক্তব্য, ‘এটা ঠিক, ইসি-তে আলোচনা হয়নি। তবে ইসি-র চেয়ারম্যান হিসেবে ভিসি-র হাতে এই ক্ষমতা রয়েছে যে, কোনও ক্ষেত্রে তিনি পদক্ষেপ করে পরে ইসি-র মিটিংয়ে তা পাশ করিয়ে নিতে পারেন।’
  • Link to this news (এই সময়)