অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়, নয়াদিল্লিলোকসভা ভোটে দেশে ৪০০-এর বেশি আসনে ইতিমধ্যেই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। এই লোকসভা কেন্দ্রগুলির মধ্যে বাছাই করা অন্তত একশোটি কেন্দ্রে একশোজন প্রার্থীর হয়ে বিশেষ প্রচারসভায় যোগ দেবেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজেপি সূত্রের খবর, এই প্রচারপর্ব শুরু হচ্ছে আগামী ৩১ মার্চ থেকে। ওই দিন মিরাটের বিজেপি প্রার্থী, ‘রামায়ণ’ সিরিয়াল খ্যাত অরুণ গোভিলের সমর্থনে প্রচারসভায় হাজির থাকার কথা নমোর।
মোদীর এই একশোটি প্রচারসভার তালিকায় বাংলার কমপক্ষে ১২ জন বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে সভাও থাকতে পারে বলে বিজেপি সূত্রের দাবি। এর পাশাপাশি চলবে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বিজেপি প্রার্থীদের সঙ্গে টেলিফোনে কথোপকথনও৷ এই পরোক্ষ প্রচারও অত্যন্ত কার্যকরী হবে বলেই বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের বিশ্বাস৷
নয়াদিল্লিতে দলীয় সূত্রের দাবি, এই প্রচারপর্বে মহিলা প্রার্থীদের বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে। একই পন্থা অবলম্বন করা হবে টেলিফোনিক কথোপকথনের ক্ষেত্রেও। ইতিমধ্যে বাংলায় বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র এবং কৃষ্ণনগরের দলীয় প্রার্থী অমৃতা রায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই কথোপকথনের অডিয়ো ইতিমধ্যেই গেরুয়া শিবিরের তরফ থেকে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই দু’জনের মতো বাংলা তথা দেশের অন্যান্য প্রান্তেও আরও বেশ কয়েকজন প্রার্থীর সঙ্গেও মোদী টেলিফোনিক কথোপকথন চালাবেন বলে প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হয়েছে গেরুয়া শিবিরের তরফে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই এবারের লোকসভা ভোটে এনডিএ চারশো পার করবে এবং বিজেপি একাই ৩৭০-এর বেশি সিট পাবে বলে ঘোষণা করেছেন। সেই লক্ষ্যে মোদীকে সামনে রেখে গেরুয়া শিবিরের এই নতুন প্রচার কৌশল কতখানি কাজে আসে, সেটাই এখন দেখার।
পদ্ম-নেতৃত্ব এখনও পর্যন্ত যে চারশোর বেশি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন, সেই তালিকায় সিটিং এমপি-দের মধ্যে অন্তত একশোজন বাদ পড়েছেন। এখনও তালিকায় নাম নেই কয়েকজন মন্ত্রীরও। ২৪-র লোকসভা ভোটে দলের প্রার্থী তালিকা তৈরি করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া রুখতে সবার আগে উদ্যোগী হয়েছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডারা৷ এই কারণেই গাজিয়াবাদে জেনারেল ভিকে সিং, বক্সারে অশ্বিনী চৌবে, নতুন দিল্লিতে মীনাক্ষী লেখির মতো তিন-তিনজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে টিকিট দেওয়া হয়নি৷
একইসঙ্গে বাদ দেওয়া হয়েছে প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর, রমেশ বিধুরী, পরবেশ বর্মা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হর্ষবর্ধনের মতো বর্তমান সাংসদকেও৷ এঁদের মধ্যে কতজন, কীভাবে আবার ফিরে আসবেন সক্রিয় রাজনীতির মূল স্রোতে, তা নিয়ে দলের অন্দরেই ধন্দ রয়েছে৷ যদিও এই নেতাদের প্রত্যেককেই আপাতত নিজেদের কেন্দ্রে দলকে জেতাতে পূর্ণ উদ্যমে ঝাঁপানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভোট মিটলে তাঁদের ‘পুনর্বাসনে’র ব্যাপারে ভাবা হবে বলেও জানানো হয়েছে।