Varun Gandhi: ২ বছরের বরুণকে কোলে নিয়ে ঘর ছাড়েন মানেকা, কেন ভাঙে গান্ধীদের যৌথ পরিবার?
এই সময় | ২৮ মার্চ ২০২৪
তিনি গান্ধী পরিবারের উত্তরাধিকারীও। কিন্তু রাজনীতিতে একেবারে ভিন্ন মেরুতে অবস্থান করেন সোনিয়া-রাহুলদের থেকে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে দলের তিন বারের সাংসদ বরুণকে টিকিট দেয়নি বিজেপি। তাঁর জায়গায় দল পিলভিট আসনে প্রার্থী করেছে উত্তর প্রদেশের ক্য়াবিনেট মন্ত্রী জিতিন প্রসাদকে। প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বরুণ গান্ধী। তাঁকে যে এবার দল টিকিট দেবে না তা আগে থেকেই হয়তো আঁচ করেছিলেন বরুণ। শোনা গিয়েছিল, দল তাঁকে প্রার্থী না করলে তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়তে পারেন। আবারও এও শোনা যাচ্ছিল তিনি নাকি সমাজবাদী পার্টির হয়ে লড়তে পারেন।কেন বরুণ গান্ধীকে প্রার্থী করল না বিজেপি?
বিজেপির (BJP) সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও কৃষক আন্দোলন ইস্যুতে দলের বিরুদ্ধে একাধিকবার মুখ খুলেছেন বরুণ গান্ধী। যার জেরে গান্ধীর উপর বেশ অসন্তুষ্ঠ ছিল বিজেপি। বরুণ নিজেও সেটা জানতেন। সেকারণে দল টিকিট দেবে না ধরে নিয়েই লোকসভায় লড়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি। দলীয় সূত্রে খবর, উত্তর প্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের নিয়মিত সমালোচনা করার জন্যই শীর্ষ নেতৃত্বের বিরাগভাজন হয়েছেন তিনি। ২০২১-এ লখিমপুর খেরির ঘটনার সমালোচনা করেছিলেন বরুণ গান্ধী এবং মানেকা গান্ধী। তারপর, তাঁদের দু'জনকেই বিজেপির ৮০ সদস্যের জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।
সম্প্রতি তাঁকে 'স্বাগত' জানিয়েছেন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। অধীর বলেছেন, 'বরুণ যদি কংগ্রেসে যোগ দিতে চান তাহলে তাঁকে স্বাগত জানানো হবে।' তবে বরুণ নিজে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার তুরুপের তাস আস্তিনের তলাতেই রেখে দিয়েছেন বরুণ। শোনা যাচ্ছে তিনি মা মানেকা গান্ধীর হয়ে প্রচারে সাহায্য করবেন। তবে তাঁর অন্য কোনও কৌশল আছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। গান্ধী পরিবারের সদস্য বরুণ ও রাহুলদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্কের মধ্যেও মতাদর্শগত ফারাক থাকলেও সেভাবে কখনই গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে গলা তোলেননি বরুণ। তাই কি এবার তাঁকে ব্রাত্য় করে রাখল বিজেপি? সেই প্রশ্নও উঠছে।
তবে গান্ধী পরিবারের দুই ভিন্ন শিবিরের সম্পর্কে ফাটলের শুরু কবে?
১৯৭৪ সালে মানেকা গান্ধীর সঙ্গে বিয়ের সঞ্জয় গান্ধীর। সঞ্জয় গান্ধীর মৃত্যুর পর সোনিয়াদের সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে বিজেপিতে যোগ দেন মানেকা। গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান বরুণও। একটা সময় বিজেপিতে বেশ প্রতিপত্তিও তৈরি করে ফেলেছিলেন তাঁরা। মানেকা বিজেপির টিকিটে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন। আর বরুণ নিজে সাংসদ হওয়ার পাশাপাশি একটা সময় দলের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন। কিন্তু গত কয়েক বছরে গেরুয়া শিবির তাঁদের গুরুত্ব কমিয়ে দিয়েছিল।
১৯৮০ সালে বিমান দুর্ঘটনায় সঞ্জয়ের মৃত্যু হয়। তখন সঞ্জয়-মানেকার একমাত্র সন্তান বরুণ গান্ধীর বয়স মাত্র দুই বছর। এই ঘটনার কিছু মাস পরেই মানেকা-ইন্দিরার মতভেদ শুরু হয়। এক বছর পর তাঁদের সম্পর্ক এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মানেকা। ইতিহাস বলে, বিমান দুর্ঘটনায় সঞ্জয় গান্ধীর মৃত্যুর পরে ইন্দিরা গান্ধী যে ভাবে রাজীবকে তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী হিসেবে তুলে আনেন, তাতে রাজীব-সনিয়ার সঙ্গে মেনকার দূরত্ব বাড়ে। যার পরিণতিতে এক সময় মেনকা ছেলেকে নিয়ে পরিবার ছেড়ে বেরিয়ে যান। এর পরে মেনকা প্রথমে বিশ্বনাথপ্রতাপ সিংহের জনতা দলে যোগ দেন। তার পরে বিজেপিতে। ভাসুর রাজীবের বিরুদ্ধে আমেঠিতে প্রার্থী হয়ে ভোটেও লড়েছেন মেনকা।