রাজা কৃষ্ণচন্দ্র না রামমোহন? ‘সমাজ সংস্কারক’ হিসেবে মোদীর দাবি নিয়ে কটাক্ষ মহুয়ার
এই সময় | ২৮ মার্চ ২০২৪
কৃষ্ণনগরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অমৃতা রায়ের পরিবারের পূর্ব পুরুষ রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়কে নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। তার মাঝে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটি বক্তব্য নিয়ে খোঁচা মহুয়া মৈত্রের।কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী রাজ পরিবারের বধূ অমৃতা রায়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর টেলিফোনিক কথোপকথন প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানেই একাধিক বিষয় নিয়ে মোদীর সঙ্গে অমৃতা রায়ের কথোপকথন হয়। ওই অডিয়ো বার্তায় (যাচাই করেনি এই সময় ডিজিটাল) মোদীকে বলতে শোনা যায়, রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সমাজ সংস্কারের কথা ছোটবেলায় স্কুলের পাঠ্য বইতে পড়ানো হতো। সেই বিষয় নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দেন মহুয়া।
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে ওই অডিয়ো বার্তার কিছুটা অংশ শেয়ার করে মহুয়া বলেন, ‘মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের সমাজ সংস্কারের কথা আমাদের শেখানো হতো। উনি বোধহয় রাজা রামমোহন রায়ের সঙ্গে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়কে গুলিয়ে ফেলছেন।’ এরপরেই মহুয়ার খোঁচা, ‘খারাপ হোমওয়ার্ক করছেন উনি।’
প্রসঙ্গত, রাজ পরিবারের বধূ অমৃতা রায়কে প্রার্থী করার পর পুরনো ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটকে টেনে এনে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সঙ্গে ব্রিটিশদের কথা তুলে ধরে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়, ১৯৫৭ সালে কৃষ্ণনগরের মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র মীর জাফর, জগৎ শেখ ও উমি চাঁদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছিলেন। মেরুদণ্ডহীন হয়ে নিজেকে ইংরেজেদের কাছে বিক্রি করে দেন বলেও মন্তব্য করা হয় তৃণমূলের তরফে। সিরাজদ্দৌলাকে হারাতে ব্রিটিশদের সঙ্গে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের যোগসাজশ ছিল বলে জানানো হয়।
তবে বিষয়টি নিয়ে পালটা জবাব দেন বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়। তিনি মোদীর সঙ্গে কথোপকথনে জানান, সিরাজদ্দৌলা অত্যাচারী রাজা ছিলেন। সেই কারণেই অনেক রাজা একসঙ্গে মিলিত হন। সকলের প্রচেষ্টায় তাঁকে সরানো হয়েছিল। সেটা যদি না হতো, তাহলে আজকে আমরা হিন্দুরা থাকতে পারতাম না। আমাদের নাম, পদবী আলাদা হতো।
এর পরেই ওই অডিয়ো বার্তায় মোদীকে বলতে শোনা যায়, ছোটবেলায় রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সমাজ সংস্কারের কাজ, বাংলার বিকাশের কাজ আমাদের পড়ানো হতো। এঁরা অনেকেই ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতি করছেন। তাই এই ধরনের উল্টো পালটা কথা বলছেন। ভোটের আগে কৃষ্ণনগর তথা বাংলার ইতিহাস নিয়ে দুই রাজনৈতিক দলের বাদানুবাদকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত কৃষ্ণনগর কেন্দ্র। তৃণমূল কংগ্রেসের হেভিওয়েট প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে এবার রাজ পরিবারের বধূকে দাঁড় করানো হয়েছে রাজনীতির মঞ্চে বিজেপির তরফে। গতবার এই আসন থেকে জিতে আসা মহুয়া মৈত্রর ভোটব্যাঙ্ক কতোটা থাবা বসাতে পারবে রাজ পরিবারের বধূ সেটাই এখন দেখার অপেক্ষায়।