গার্ডেনরিচের ?অভিশপ্ত? বহুতলের ধ্বংসাবশেষেই তৈরি হবে ফুটপাথ! ব্যাপারটা কী?
প্রতিদিন | ২৮ মার্চ ২০২৪
অভিরূপ দাস: ধ্বংসের মধ্য থেকেই সৃষ্টির জয়গান। আকস্মিক ভেঙে পড়ে যে চাঙড় একাধিক প্রাণহানী ঘটিয়েছিল। তা দিয়েই তৈরি হবে ফুটপাথ। গার্ডেনরিচের ভেঙে পড়া বহুতলের ধ্বংসাবাশেষ দিয়ে তৈরি হচ্ছে ফুটপাথের পেভার ব্লক।
দ্রুত ভেঙে পড়া চাঙড়, ইটের গাথনি সরাতে বুধবার জেসিবি নামিয়েছে পুরসভা। কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ সূত্রে খবর, দু’টি লরি করে গার্ডেনরিচ থেকে সেই সমস্ত ইট,বালি, সিমেন্টের চাঙর নিয়ে আসা হচ্ছে রাজারহাটে। তার পর? পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সেখানে এই ধ্বংসস্তুপ প্রক্রিয়াকরণ করা হবে। প্রথমে আলাদা করা হবে ইট,বালি, পাথর, সিমেন্ট। এরপর প্লান্টে ফেলে প্রক্রিয়াকরণ করে তা দিয়ে তৈরি হবে ফুটপাথের পেভার ব্লক। রাজারহাট-নিউ টাউনের পাথরঘাটায় নির্মাণ-বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের এই প্লান্ট গড়েছে কলকাতা পুরসভা। ২০২৩ এর শুরুতে সেটির উদ্বোধন করেছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। দৈনিক ৫০০ টন নির্মাণ-বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ করে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার ক্ষমতা রয়েছে ওই প্লান্টের। সেখানেই এনে ফেলা হচ্ছে গার্ডেনরিচের ভেঙে পড়া বহুতলের ধ্বংসাবাশেষ।
গার্ডেনরিচ নিয়ে আজ কলকাতার প্রতিটি ডিসি-র কার্যালয়ে বৈঠকে বসছেন ডেপুটি কমিশনাররা। বৈঠকে হাজির থাকবেন সংশ্লিষ্ট বরোর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়াররা। কলকাতার ১৪৪ টি ওয়ার্ডের জন্য ষোলোটি বরো রয়েছে। রয়েছেন বিল্ডিং বিভাগের তেরোজন এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার। আজ ডিসিদের সঙ্গে তারা আলোচনায় বসবেন। কি আলোচনা হবে? সূত্রের খবর, শহরের কোন বরোয় কতগুলো বেআইনি নির্মাণ রয়েছে তা জানতে চান ডেপুটি কমিশনাররা। সম্প্রতি বেআইনি নির্মাণ ভাঙার জন্য পুলিশের সাহায্য চেয়েছে কলকাতা পুরসভা। এর কারণ, একাধিক ক্ষেত্রে বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন পুরসভার আধিকারিকরা। সেক্ষেত্রে পুলিশের সাহায্য একান্ত প্রয়োজন।
এদিকে এরই মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার সকালে গার্ডেনরিচে যাচ্ছে পুরসভার টিম। থাকবেন ডিসি পোর্টও। সূত্রের খবর, ভেঙে পড়া বহুতলের প্রভাবে পাশে একটি বাড়ি হেলে পড়েছে। আজ থেকে সেই বাড়ি ভাঙা শুরু হবে। দশটার মধ্যে বাড়ি ভাঙার সমস্ত শ্রমিকদের ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বিল্ডিং বিভাগ। ইতিমধ্যেই গার্ডেনরিচের বরোর ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য গুড ফ্রাইডের ছুটি বাতিল করেছে পুরসভা। পুরসভা সূত্রে খবর, এখন যেখানে বাড়ি ভাঙা হচ্ছে সেখানে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বাংলার বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‘মানুষকে বোঝাতে হবে। বাড়ি জীবনের থেকে আগে নয়।’’ গার্ডেনরিচে যেগুলি বিপজ্জনক বাড়ি সেগুলি ভেঙে বাংলার বাড়ি তৈরি করে দিতে চান মেয়র। এদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রাথমিক মাটির নমুনা তুলে দেওয়া হয়েছে পুলিশের হাতে। তা কেন্দ্রীয় স্তরে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে এমন সংস্থার হাতে দিয়েছে পুলিশ।