অভিরূপ দাস: এবার নিয়ম বর্হিভূতভাবে অতিরিক্ত মাটি কেটে বাড়ি তৈরির অভিযোগ এল কসবা থেকে। পুরসভা সূত্রে খবর, আইন অনুযায়ী পাশের বাড়ি থেকে দুরত্ব রেখে যতটা মাটি কাটার কথা, তার বদলে কাটা হয়েছে তিনগুণ। অবস্থা এমনই, নির্মীয়মাণ বাড়িটির পাশের বাড়ির দেওয়াল যে কোনও মুহূর্তে হেলে পড়বে। ফলে ঘটে যেতে পারে বড়সড় দুর্ঘটনা। গার্ডেনরিচ দুর্ঘটনার পর ফের এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের ডিজি।
বিল্ডিং বিভাগ সূত্রে খবর, বেআইনি ওই বাড়ির প্রোমোটারকে কড়া ধমক দিয়ে ডিজি বলেছেন, ?শহরে বেআইনি বাড়িঘর পড়ে যাচ্ছে দেখতে পাচ্ছেন না। এই প্ল্যানে সই করেছে কারা? সমস্ত ইঞ্জিনিয়ারদের লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে।? জানা গিয়েছে, পাঁচ চিকিৎসক মিলে বাড়ি তৈরি করেছেন কসবা রাজডাঙায়। তারই মধ্যে একজন এসএসকেএম হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের অধ্যাপক ড. অরুণাভ সেনগুপ্ত। গোটা ঘটনায় কলকাতা পুরসভার দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। আপাতত চিকিৎসকদের পাশের ওই নির্মীয়মাণ বাড়িটির কাজ বন্ধ করে দিয়েছে পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ।
এনিয়ে পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যেভাবে মাটি তোলা হয়েছে তা অত্যন্ত বিপজ্জনক। ডাক্তারবাবুদের বাড়ির দেওয়ালের গোড়া পর্যন্ত নড়ে গিয়েছে। যদি দেওয়াল না থাকতো তাহলে বাড়ি হেলে পড়তে পারতো। প্রশ্ন উঠছে, শহরে প্রসিদ্ধ চিকিৎসকের সঙ্গেই যদি এমন অবস্থা হয় সাধারণ মানুষদের কি অবস্থা! তিনি আরও জানান, ?অসাধু প্রোমোটারদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। অবিলম্বে আইন কড়া করতে হবে। সাধারণত পুরসভার কোনও বরোয় বাড়ি তুলতে হলে তা নজরে রাখতে হয় সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে। তিনি রিপোর্ট করেন এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে। এক্ষেত্রে কেন নজরে এল না তাদের??
সূত্রের খবর, কলকাতার পুরসভার যে বরোতে এই ঘটনা হয়েছে সেই ১২ নম্বর বরোতে গত কয়েক বছরে একাধিক বেআইনি নির্মাণ উঠেছে। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ বরো এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শিবপ্রসাদ জানা সব দেখেও চোখ বন্ধ করে রয়েছেন। এক্ষেত্রেও পুরসভা কাজ বন্ধ করে তাঁকে নির্দেশ দেন পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে। বিল্ডিং বিভাগের ভিতরের খবর, এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শিবপ্রসাদ জানা এই ঘটনাটিকে ‘ছোট ঘটনা’ হিসাবে দেখাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা হতে দেননি বিল্ডিং বিভাগের উচ্চ পদস্থ এক আধিকারিক। তিনি বলেছেন, ‘‘গার্ডেনরিচের ঘটনার পর কোনওভাবে এই ধরণের নির্মাণ বরদাস্ত করা হবে না। যারাই এসবে মদত দেবে তাদের লাইসেন্স বাতিল হবে।’’