MCC Violation : ভোট এলেই রাজনেতাদের মুখে কুকথার ফুলঝুরি, নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগে কী ব্যবস্থা নিতে পারে কমিশন?
এই সময় | ২৮ মার্চ ২০২৪
কুরুচিকর আক্রমণ থেকে হুমকি, বড় প্রতিশ্রুতির ঘোষণা। ভোটের উত্তাপ যতই বাড়ছে তত অভিযোগের বহরও বাড়ছে। ইতিমধ্যেই কমিশন শোকজ করেছে অনেককেই। উত্তরের পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কতটা কড়া পদক্ষেপ নিতে পারে নির্বাচন কমিশন? আইন কী বলছে?
কমিশন সূত্রে খবর, এ ধরনের ক্ষেত্রে প্রথমে জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের থেকে রিপোর্ট তলব করা হয়। গোটা বিষয়টির রিপোর্ট ভিডিয়ো সহ মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক অফিসে পাঠানো হয়। তারপর বিধি ভঙ্গের তথ্য, প্রমাণ হাতে থাকলে প্রথমে কমিশন সেই প্রার্থীকে শোকজ করে। তাঁর এ প্রসঙ্গে কী বক্তব্য তা শোনা হয়। তা সন্তোষজনক না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কমিশনের এক কর্তা বলেন, ‘সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা না পেলে কমিশন প্রয়োজনে ভারতীয় দন্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করতে পারে। Representation of People Act, 1951-তেও ব্যবস্থা নেওয়ার সংস্থান রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন আইনে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।’
দিলীপের মন্তব্য নিয়ে নির্বাচন কমিশনে তৃণমূল
তবে এ ধরনের অভিযোগে প্রার্থীপদ খারিজ হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে সেই নজির এ রাজ্যে নেই। যদিও জেলা প্রশাসনের এক কর্তা মানছেন, 'কমিশন কী করতে পারে তা নিয়ে কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে।' অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক দলগুলি প্রার্থীপদ খারিজের দাবি করে থাকেন। তাও কি সম্ভব? সিইও অফিসের এক কর্তাকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'অভিযোগের ওপর তা নির্ভর করবে।' ওই কর্তা মানছেন, 'এরকম ক্ষেত্রে প্রার্থীপদ খারিজের উদাহরণ কম রয়েছে। তবে নির্বাচনে খরচ সংক্রান্ত বিষয়ে ভুল তথ্য জমা করলে বা এক্সপেনডিটার সংক্রান্ত ইস্যুতে গুরুতর শাস্তি হতে পারে।' তবে বিধি ভেঙে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর বিরুদ্ধে অনেক কড়া ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
নির্বাচনী বিধি নিয়ে নির্দেশিকা
উল্লেখ্য, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে দিলীপ ঘোষের মন্তব্য শুধু নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ নয়। এ ধরনের মন্তব্যে IPC 506, 509 ধারায় মামলা রুজু করা যায়। এ বিষয়ে অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক অরিন্দম নিয়োগী এই সময় ডিজিটাল-কে বলেন, ‘ECI-কে প্রয়োজনীয় রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।’ আবার শাসকদলের প্রচারে নাবালক, নাবালিকাদের দেখা গিয়েছে। এক্ষেত্রেও শিশু সুরক্ষা অধিকার আইনে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। আবার তৃণমূলের প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের বিরুদ্ধে বিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠলেও কোনও কু কথা বলেননি তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৬০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবার নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি জারি করা হয়। সেবার কেরালায় বিধানসভা নির্বাচন হয়। তবে আদর্শ আচরণবিধি সংক্রান্ত নিয়ম সময়ের সঙ্গে বদলাচ্ছে। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া, রাজনৈতিক দলগুলির ওয়েবসাইটে যে বিষয়গুলি পোস্ট করা হয়, সেগুলিও আদর্শ আচরণবিধির আওতায় পড়ে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের উপর নজরদারি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। লোকসভা ভোটেও বিশেষ নজরে থাকবে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স হ্যান্ডেল।
এখনও অবধি রাজ্যে যাঁর যাঁর বিরুদ্ধে বিধি ভঙ্গের অভিযোগ হয়েছে, সেক্ষেত্রে কমিশন তাঁদের শোকজ করেছে। কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেদিকেই এখন তাকিয়ে সব মহল।