Asiatic Society : এশিয়াটিক সোসাইটির ভোট মাঝপর্বেই স্থগিত
এই সময় | ২৮ মার্চ ২০২৪
স্নেহাশিস নিয়োগীদেশজুড়ে লোকসভা ভোটের মধ্যেই ২৪০ বছরের পুরোনো এশিয়াটিক সোসাইটির ভোটপর্ব স্থগিত করে দিল কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। এই সোসাইটির সদস্য হাজার তিনেক। গত ২৩ মার্চ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২১ মার্চ আচমকাই সোসাইটির নির্বাচন কমিশন এই ভোটগ্রহণ স্থগিতের নির্দেশ দেয়। অথচ সোসাইটির ৪ সহ-সভাপতি, জেনারেল সেক্রেটারি এবং ট্রেজারার-সহ নানা পদে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫ জন জিতে গিয়েছেন।
সংস্কৃতি মন্ত্রক কেন ভোট স্থগিতের নির্দেশ দিল?
সোসাইটির একাংশের দাবি, ১৯৮৪ সালের বিধি অনুযায়ী, তিন বছরের বেশি কেউ সাধারণ সম্পাদক পদে থাকতে পারেন না। কিন্তু বর্তমান জিএস সত্যব্রত চক্রবর্তী ২০১৬ সাল থেকে টানা রয়েছেন। মাস দেড়েক আগে শুরু এশিয়াটিক সোসাইটির ভোটপর্বের মাঝে সংস্কৃতি মন্ত্রকের তরফে সত্যব্রতর টানা ৮ বছরের মেয়াদ ও তাঁর ৮০ বছর পেরিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভোট স্থগিতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যদিও সত্যব্রত ফোনে পাল্টা বলেন, ‘এখন টানা তিন বছর পদে থাকলে ভোটে লড়াই করা যাবে না, সেই নিয়ম আর নেই। আগেই সংশোধনী হওয়ার পর এই ধারা বাতিল হয়ে গিয়েছে। না হলে আমি ৮ বছর থাকলাম কী করে?’ তাঁর দাবি, সোসাইটির জিএস পদে তাঁর টানা ৮ বছর থাকা ভোট স্থগিতের একমাত্র কারণ নয়। নিয়ম বলছে, সভাপতি পদে আগে কেউ টানা দু’বছর থাকলে, তিনিও আর ভোটে লড়তে পারতেন না।
সোসাইটির সভাপতি স্বপনকুমার প্রামাণিকেরও সেই হিসাবে আর ভোটে লড়ার কথা নয়। কিন্তু কাউন্সিলের চার সদস্যপদ ছাড়া একমাত্র প্রেসিডেন্ট পদেই ভোট হচ্ছে। ট্রেজারার পদেরও মেয়াদ তিন বছর। কিন্তু সেই পদেও সুজিতকুমার দাস ৮ বছর ধরে থাকার পরে এবারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন।
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য তথা সোসাইটির সভাপতি স্বপনের আশঙ্কা, ভোট স্থগিতের পিছনে সংস্কৃতি মন্ত্রকের বিশেষ পরিকল্পনা আছে। তাঁর কথায়, ‘সোসাইটির সদস্যরা পদাধিকারী বাছাইয়ে ভোট দেন। তাঁরা মনে করলে, যাঁরা বেশিদিন পদে রয়েছেন, তাঁদের ভোট না-ই দিতে পারেন। মন্ত্রকই সোসাইটির ভোটপর্ব সম্পন্ন করতে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠনে সম্মতি দিয়েছেন। সোসাইটির নতুন কমিটি গঠন না হওয়া পর্যন্ত পুরোনো কমিটিকেই কাজ চালাতে বলেছে। তারপর যা প্রশ্ন উঠছে, তা অবান্তর।’ তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে আলোচনা হবে।
নিউ আলিপুর কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ তথা সোসাইটির ট্রেজারার সুজিতও বলছেন, ‘আমরা কেউ বেতন পাই না। অধিকাংশ পদে বিনা লড়াইয়ে প্রার্থীরা জিতেও গিয়েছেন। কেন্দ্র চাইলেই তো সোসাইটির ১২ নং ধারা প্রয়োগ করে ম্যানেজমেন্ট টেকওভার করতে পারে। এর বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও করা যায় না!’ অবশ্য সোসাইটির প্রাক্তন কাউন্সিল সদস্য সমীর রায়চৌধুরী বলেন, ‘গত আড়াই দশকে সোসাইটিতে মাঝপর্বে ভোট স্থগিতের কোনও নজির নেই। এটা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’