২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বাংলা জয়ের লক্ষ্যে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়েছিল বিজেপি। বাম-কংগ্রেসও জোট বেঁধেছিল। যদিও বিরোধীদের যাবতীয় চেষ্টা বিফল করে দিয়ে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয় বারের জন্য রাজ্যে ক্ষমতা দখল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের এই বিপুল সাফল্যের কৃতিত্বের অনেকটাই দেওয়া হয় ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরকে। তৃণমূলের নির্বাচনী রণকৌশল থেকে শুরু করে ইস্তেহার, প্রার্থী বাছাই- সবকিছুতেই প্রশান্ত কিশোর এবং তাঁর সংস্থা আইপ্যাকের বড় অবদান ছিল বলে সেই সময় শাসক দল সূত্রেই জানা গিয়েছিল। রাজনীতির আঙিনায় প্রশান্ত কিশোরের ভবিষ্যদ্বাণীর গুরুত্ব রয়েছে যথেষ্ট।সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রশান্ত লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির ভালো ফলের বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। তবে বিষয়টিকে তিনি ভবিষ্য়দ্বাণী বলতে রাজি নন। জনগণের উপরই গোটা বিষয়টি ছেড়েছেন তিনি। প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, 'এবারের নির্বাচনে বাংলায় বিজেপি তৃণমূলের চেয়ে ভালো ফল করবে।' তাঁর মতে, 'বাংলায় বিজেপির ফল সারপ্রাইজিং হবে। এবারের লড়াই তৃণমূলের জন্য বেশ কঠিনই হবে।' এ প্রসঙ্গে প্রশান্ত কিশোর বাংলায় ২০২১ সালের নির্বাচনের কথা উল্লেখ করেছিলেন। তিনি বলেছেন, সেই সময় গতি বজায় রাখতে বিজেপি হিমশিম খেয়েছিল। তবে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বাংলায় ভালো ফলাফল করবে বলে আশাবাদী পিকে।
ফেব্রুয়ারির চতুর্থ সপ্তাহে টাইমস নাওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রশান্ত কিশোর বলেছিলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে বড় রাজনৈতিক শক্তি বিজেপি। এবারের নির্বাচনে ২০১৯ সালের জয়ী আসন সংখ্যার নীচে যাবে না। আমার মনে হয় ২০১৯ সালের থেকে ভালো ফল করবে বিজেপি।' প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে তৃণমূলর জেতে ২২ আসন, বিজেপি জেতে ১৮টি ও কংগ্রেস দু'টি আসনে জয়লাভ করে। বস্তুত বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের পর ভোটকুশলী হিসাবে প্রশান্ত কিশোরের খ্যাতি অনেকটা বেড়ে যায়। তাঁকে নিয়ে সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে সোশাল মিডিয়া, সর্বত্র রীতিমতো হল্লা শুরু হয়ে যায়।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে শুক্রবার প্রশান্ত কিশোর বলেন, 'বর্তমানে সমাজে এমন একটা চিত্র তুলে ধরা হয়েছে যে কোনও নেতা বা ব্যক্তি যদি বিজেপির সঙ্গে যুক্ত না থাকেন, তাহলেই তাঁর বিরুদ্ধে ইডি-সিবিআই অভিযান চালাবে। আমি এটাও বলছি যে যারা দোষ করেছেন, অপরাধ করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিত। তদন্ত নিয়ে সমস্যা নেই জনগণের। কিন্তু সমস্যা তখনই দেখা দিচ্ছে, যখন তদন্তাধীন ব্যক্তি যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে। তারপরই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের এই বিষয়টা নিয়েই আপত্তি।'