• ‘ভগবান আমায় একটা অন্য শরীর দিলে..', ক্যানসারের সাথে লড়াই,আক্ষেপ স্বাগতালক্ষ্মীর
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২৮ মার্চ ২০২৪
  • তাঁর জীবনজুড়ে রয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। গীতবিতানের সব গান রেকর্ড করে রবীন্দ্রসংগীতের জগতে ইতিহাস গড়েছেন স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত। বাঙালির প্রাণের শিল্পী। তাঁর ধ্যানজ্ঞান ‘ভগবত গীতা’ আর রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথের গানের সঙ্গে ‘রামায়ণ’কে জুড়েছেন তিনি। সারাজীবন গানের সাধনা করেছেন, আজও নিজেকে সঙ্গীতের ছাত্রী বলেন। ভগবত গীতা-র সঙ্গে ১৮টা রবীন্দ্রসঙ্গীতকে জুড়ে 'গীতাবিতান' সৃষ্টি করেছেন। 

    সঙ্গীতের এই সাধক ছোট থেকেই নানারকম দুরারোগ্য ব্যাধিতে জর্জরিত। করোনাকালের আগে সামনে এসেছিল তাঁর মারণরোগ ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর। তবে সদ্য এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ক্লাস নাইন থেকেই বেঁচে থাকার লড়াই চালাচ্ছেন তিনি। নানান অসুস্থতা ঘিরে ধরেছিল তাঁকে। জীবনের আক্ষেপের কথা বলতে গিয়ে গলা বুজে এল তাঁর। এ জীবে তাঁর একটাই প্রার্থনা–পরের জন্মে ঈশ্বর যেন তাঁকে একটা সুস্থ স্বাভাবিক শরীর দান করেন।

    না-পাওয়ার আক্ষেপ রয়েছে? বেঙ্গলি মিউজিক ডিকশনারি নামে এক ইউটিউব চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, ‘কম-বেশির কথা তখন ভাবব যখন আমার আকাঙ্খা থাকবে। আমার আশেপাশের মানুষরা আমাকে ভালোবেসে বলেন, তুমি এটা কেন পেলে না? তাঁরা যে আমাকে ভালোবেসে বলছেন সেটা তো আমার কাছে অ্যাওয়ার্ডের চেয়ে কমকিছু নয়। আমাকে সকলে বলে আমার সহনশীলাতা একটু বেশি।’ 

    যখন সব মানুষজন জেনেছে আমার ক্যানসারের লড়াই চলছে, সেইসময় আমার ক্যানসারের লড়াইটা সবচেয়ে কম ছিল। খবর হওয়াটা সবসময় ঠিকঠাক সময়ে হয় না। আমার লড়াই শুরু ক্লাস নাইন থেকে। জানি, যে শরীর ঈশ্বর আমাকে দান করেছে, তাতে প্রচুর গোলযোগ। সেইসময় থেকে আমার নর্ম্যাল লাইফ নেই। সেটা বৃহৎ আকার ধারণ করল ২০১৯-এ। এরপর কেমোথারপি, আরও অনেককিছু হল। খবরটা হয়েছে তার পরে। যে সময় আমি মুম্বইতে শো করতে গেলাম।' 

    তাঁর অসুস্থতা নিয়ে ইন্ডাস্ট্রির অনেকে তাচ্ছিল্য করেছেন, তবে সহনশীলতা নিয়েই সেই কটাক্ষের মোকাবিলা করেছেন অসুস্থ স্বাগতালক্ষ্মী। জীবনের আক্ষেপ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে খানিক ভেবে গায়িকা বললেন, ‘আমাকে ঈশ্বর একটু ভালো স্বাস্থ্য দিতে পারতেন। যদি আবার জন্মাই যেন একটু ভালো শরীর নিয়ে জন্মাই। এই লড়াইটা একটু বেশি হয়ে গিয়েছে। আমার এই যুদ্ধটা না থাকলে আমি…আমার প্রায় ১২-১৪টা সার্জারি হয়েছে শরীরে। সেই সময়টা আমি কিছু করে উঠতে পারিনি।’ 

    শরীর সঙ্গত দেয় না। কিন্তু শ্রোতাদের ভালোবাসাই তাঁর এনার্জির সোর্স। আজকাল রবীন্দ্রনাথের গান নিয়ে নানান পরীক্ষা-নীরিক্ষা চলে। সেই নিয়ে কী মত তাঁর? গায়িকা বললেন, ‘আমি শ তিনেক গান লিখেছি। তবে আমার কাছে আমার গান খুব কম শুনতে চায় লোকে। এটা তো রবীন্দ্রথানের জয়, উনি এমন কিছু করেছেন, যে আমাদের গ্রাস করে নিয়েছেন। উনি আমাদের বেঁধে রেখেছেন। এটা এক আশ্চর্য জেলখানা, যেখান থেকে বেরোতে ইচ্ছে করে না। সেই জেলখানাতেই মুক্তির স্বাদ।’ 

     

     

     

     
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)