জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: 'নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান, বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান/ দেখিয়া ভারতে মহাজাতির উত্থান জগজন মানিবে বিস্ময়, জগজন মানিবে বিস্ময়।' ১৪০ কোটির দেশের মানুষরাই চন্দ্রযান পাঠান মহাকাশ গবেষণার জন্য়, আর সেই দেশের মানুষই তিলে তিলে অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারে আঁধারে ডুব দেন। এক অদ্ভুত বৈপরীত্যের মিশেল এই দেশ। সম্প্রতি দক্ষিণ ভারতে এমন এক ঘটনা ঘটেছে, যা শুনলে শুধু আপনি বিস্মিতই হবেন না, আপনার এও মনে হতে পারে যে, এ কোন ভুবনে আমরা করছি বাস! সালটা ২০২৪ না কি ২০০ বছর পিছিয়ে গিয়েছে! এবার আসা যাক ঘটনায়। তামিলনাড়ুর ভিলুপুরম জেলায় অবস্থিত ওটানন্দল গ্রাম। সেখানকার এক পাহাড়চূড়ায় অবস্থিত বিখ্যাত রথিনাভেলপান্ডিয়ান মুরুগান মন্দির। অসাধারণ সৌন্দর্যের জন্য এই মন্দিরের আলাদাই পরিচিতি। মন্দিরের প্রধান দেবতা মুরুগান। পাঁচ ফুট উচ্চতা। প্রতিদিন শয়ে শয়ে ভক্ত আসেন প্রার্থনা করতে। প্রতি বছর এই মন্দিরে পাঙ্গুনি উথিরাম উৎসব পালিত হয়। ভগবান শিব এবং দেবী পার্বতীর সঙ্গেই ভগবান শ্রীরাম এবং দেবী সীতার বিয়ের উদযাপন হয় এই পুজোয়। মুরুগান (কার্তিকেয়), দেবসেনা ও সেইসঙ্গে রঙ্গনাথ (বিষ্ণু) এবং অন্ডলের বিয়ের উদযাপনকেও জোড়া হয়। এটি হিন্দু দেবতা আয়াপ্পানের পূর্ণবিকাশ হিসেবেও ধরা হয়চলতি বছর ১৫ মার্চ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত চলেছে এই অনুষ্ঠান৷ এই ন'দিনের বিশেষ উদযাপনের সময়, রথিনাভেলপান্ডিয়ান মুরুগান মন্দিরের রীতি মেনে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান পালিত হয়েছে৷ এর মধ্য়েই অনন্য এক আচার নজর কেড়েছে। ঈশ্বরের আশীর্বাদের প্রতীক হিসাবে মোট ন'টি লেবু দেওয়া হয়েছিল। যে লেবুগুলি দিয়ে পুজো করা হয়েছিল মুরুগানের, তা নিলামের তোলা হয়। নিলামের ধুন্ধুমার বেঁধে গিয়েছিল যাঁরা দর হেঁকেছিলেন, তাঁদের মধ্য়ে। চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার একটাই কারণ। বিশ্বাস করা হয় যে, এই লেবু দিয়ে পুজো দিলে সন্তান আসবে পৃথিবীতে। প্রতিটি লেবুর দর ছিল ১০০ টাকা, বহু মানুষ নিলামে অংশ নেন। সেখান থেকে দর বাড়তে বাড়তে লেবু প্রতি ১০০০, ২০০০ ও ৩০০০ এবং তারও বেশি হয়। এমনকী একটি লেবু ৫০ হাজার ৫০০ টাকাতেও নিলাম হয়েছে। শুনলে অবাক হবেন যে, ন'টি লেবু নিলামে মোট ২ লক্ষ ৩৬ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়াও উৎসবের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে পুজো করা লেবু নিলাম হয়েছিল ২৬ হাজার ৫০০ টাকায়। দরদাতাদের মধ্যে ছিলেন অরুলদাস এবং কানিমোঝি। কল্লাকুরিচি জেলার এই দম্পতি সন্তানধারণে অক্ষম ছিলেন, তাঁরাই সর্বাধিক সংখ্যক লেবু কিনেছিলেন। উৎসবের প্রথম দিনে পুজো করা লেবু কিনেছেন তাঁরা ৫০ হাজার ৫০০ টাকায়।