এই সময়: সৃষ্টির আদিকাল থেকে রয়েছেন ওঁরা। ‘শিব’ এবং ‘শক্তি’। অন্তত হিন্দু পুরাণ সে কথাই বলে। তবে এ বার মহাকাশেও সন্ধান পাওয়া গেল ‘শিব’ ও ‘শক্তি’র। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির মহাকাশ গবেষণায় ব্যবহৃত স্পেস অবজ়ারভেটরি, ‘গাইয়া’র যান্ত্রিক চোখে ধরা পড়ল সেই উপস্থিতি! তবে পুরাণের ‘শিব’ ও ‘শক্তি’ নয়।গাইয়া স্পেস অবজ়ারভেটরির চোখে ‘শিব-শক্তির’ অস্তিত্ব ধরা পড়া প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজ়িক্সের প্রধান এবং মহাকাশবিজ্ঞানী সন্দীপ চক্রবর্তী বলছেন, ‘শিব এবং শক্তি নিছক নাম। এর মধ্যে বিজ্ঞান খুঁজবেন না। আকাশে বহু গ্রহ-নক্ষত্রের নামই বিভিন্ন দেশের পৌরাণিক চরিত্রের নামে তৈরি।’
বিশিষ্ট ওই বিজ্ঞানী বলছেন, ‘একেবারে শুরুতে জগতে কোনও ধাতুর অস্তিত্ব ছিল না। শুধু হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাস ছিল। সে জন্য একেবারে গোড়ার দিকে যে নক্ষত্রগুলো তৈরি হয়েছিল, তাদের কেন্দ্রে ধাতু পাওয়া যায় না। যাদের নাম শিব ও শক্তি দেওয়া হয়েছে, তারা এই গোত্রের।’
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, প্রথম যুগের ওই প্রোটো-গ্যালাক্সিগুলো পরবর্তী সময়ে নষ্ট হয়ে গেলেও তাদের অবশেষ এখনও মহাবিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছে। আকাশগঙ্গা ছায়াপথে সদ্য সন্ধান মিলেছে যাদের, সেই শিব ও শক্তি এমনই দু’টি প্রোটো-গ্যালাক্সির অবশেষ। মহাকাশবিজ্ঞানীরা মনে করেন, মহাবিশ্বের বয়স প্রায় ১৩৭০ কোটি বছর।
মহাবিশ্ব তৈরি হওয়ার পর সব কিছু যে একসঙ্গে তৈরি হয়েছিল, তা নয়। বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, সৌরজগৎ তৈরি হয়েছিল ‘মাত্র’ ৪৬০ কোটি বছর আগে। আবার যে মিল্কি ওয়ে বা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের মধ্যে এই সৌরজগৎ রয়েছে, সেটির বয়স ১২০০ কোটি বছরের কাছাকাছি। সৌরজগৎ কী ভাবে সৃষ্টি হয়েছিল, সে বিষয়ে মহাকাশবিজ্ঞানীদের মোটের উপর একটা একটা ধারণা তৈরি হলেও আকাশগঙ্গার সৃষ্টিরহস্য এখনও অনেকটাই অজানা।
বিজ্ঞানীদের একাংশ মনে করেন একাধিক ‘প্রোটো-গ্যালাক্সি’ মিশে গিয়ে তৈরি হয়েছে এক-একটি ছায়াপথ। ওই ‘প্রোটো-গ্যালাক্সি’গুলোই আসলে বিভিন্ন ছায়াপথ গঠনের আদি উপাদান। আকাশগঙ্গার ক্ষেত্রে এমনই দু’টি উপাদান হলো, ‘শিব’ ও ‘শক্তি’।