Baltimore Bridge Accident : ভেজাল জ্বালানির জন্যই কি বাল্টিমোরের দুর্ঘটনা
এই সময় | ২৯ মার্চ ২০২৪
এই সময়: বাল্টিমোরে কার্গো শিপের ধাক্কায় ব্রিজ ভাঙার ঘটনায় নদী থেকে উদ্ধার হয়েছে দু’জন নির্মাণকর্মীর দেহ, কিন্তু নিখোঁজ বাকি চার জনের দেহ এখনও মেলেনি। ব্রিজের ভেঙে পড়া অংশ যে ভাবে জলের নীচে রয়েছে, তাতে ডুবুরিদের পক্ষে সেখানে ঢুকে দেহের খোঁজ করা মুশকিল। আপাতত তাই ব্রিজের ধ্বংসাবশেষ সরানোর কাজকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত দেড়টা নাগাদ প্যাটাপস্কো নদীর বুকে ভেসে আসা, মালপত্র বোঝাই কন্টেনার শিপ ‘ডালি’ বাল্টিমোরের বিখ্যাত ফোর লেন ‘ফ্রান্সিস স্কট কি ব্রিজ’-এর সেতুস্তম্ভে ধাক্কা মারে। তাতে ভেঙে পড়ে ব্রিজের একটা বড় অংশ। নদীতে পড়ে যায় বেশ কিছু গাড়ি। ছ’জন নিখোঁজের কথা জানায় পুলিশ। তবে ব্রিজের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নদীর বুকে তল্লাশি চালানো সহজ ছিল না।
আর নদীর ঠান্ডা জলে ২-৩ ঘণ্টার বেশি কারও পক্ষে বেঁচে থাকা মুশকিল, এই যুক্তিতে বুধবারই উদ্ধারকাজে ইতি টেনেছেন মার্কিন উদ্ধারকারীরা। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার মিলল ৩৫ বছরের আলেজান্দ্রো হার্নান্দেজ ফুয়েন্তেস এবং ২৬ বছরের ডোরিয়ান রোনিয়াল কাস্টিলো ক্যাবরেরার দেহ। এঁরা দু’জনেই নির্মাণ সংস্থার কর্মী বলে জানা গিয়েছে। দুর্ঘটনার সময়ে ব্রিজের উপর রাস্তা মেরামতির কাজ করছিলেন তাঁরা। নদীর প্রায় ২৫ ফুট নীচে পড়ে যাওয়া লাল রঙের পিক-আপ ট্রাক থেকে উদ্ধার হয়েছে এঁদের দু’জনের দেহ।
ইতিমধ্যে সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী কার্গো ‘ডালি’ থেকে উদ্ধার হয়েছে ডেটা রেকর্ডার। এই রেকর্ডার থেকে দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে আন্দাজ পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। ইউএস কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, প্রায় ১৫ লক্ষ গ্যালন জ্বালানি এবং বিপজ্জনক বেশ কিছু জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছিল পণ্যবাহী জাহাজটি। পণ্য পরিবহণের নিয়মভঙ্গ করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ। ‘ডালি’তে ২১ জন ক্রু মেম্বার ছিলেন, যাঁরা সকলেই ভারতীয়। তাঁরা দুর্ঘটনায় অল্পবিস্তর আহত হলেও বড়সড় কোনও ক্ষতি তাঁদের হয়নি।
সেতুতে ধাক্কা মারার কিছুক্ষণ আগেই জাহাজটিতে কারেন্টের সংযোগ চলে যায়। তখনই জাহাজের স্টিয়ারিং কাজ করছে না এবং কার্গোটি নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে বুঝতে পেরে ‘মে ডে কল’ বা বিপদ সঙ্কেত দেন ভারতীয় ক্রু সদস্যরা। ইউএস কোস্ট গার্ডের দাবি, এর ফলে বেশ কিছু গাড়িকে আগেই থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল, না হলে বিপর্যয় আরও বড় আকারের হতে পারত। কিন্তু ‘ডালি’তে আচমকা পাওয়ার কাট হলো কেন, সেটাই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। জাহাজের ক্যাপ্টেন, মেট এবং দু’জন ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গেও কথাবার্তা বলছেন তাঁরা।
ভেজাল জ্বালানির কারণে পাওয়ার কাট এবং স্টিয়ারিং বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কি না, খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। জাহাজের জ্বালানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। জ্বালানিতে ভেজাল থাকলে জাহাজের ইঞ্জিন এবং পাওয়ার জেনারেশনে সমস্যা হয়। জাহাজটির ইঞ্জিন রুমে সর্বত্র পোড়া জ্বালানি তেলের গন্ধ সন্দেহকে আরও পোক্ত করছে। সূত্রের খবর, কারেন্ট অফ হয়ে যাওয়ার পর জাহাজ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বুঝে প্রাণপণে স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে বন্দরের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ভারতীয় ক্রু। নোঙর ফেলেও সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। সেতুর স্তম্ভে গিয়ে ধাক্কা মারে কার্গোটি।