জেলের মধ্যেই স্বাস্থ্যের অবনতির পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু গ্যংস্টার তথা রাজনীতিক মুখতার আনসারির। বৃহস্পতিবার তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। এরপর জেলবন্দি মুখতারকে নিয়ে যাওয়া হয় গাজিপুরের বান্দা মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়ছে। গত মঙ্গলবার থেকে পেটে যন্ত্রণার সমস্যায ভুগছিলেন তিনি। এরপরেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে মুখতারে পরিবারের দাবি, জেলের মধ্যে মেরে ফেলা হয়েছে তাঁকে।
গ্যাংস্টার-রাজনীতিবিদ মুখতার আনসারির মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে উমর দাবি করেছেন, 'বাবাকে ধীরে ধীরে বিষ প্রয়োগ করা হচ্ছি।' উমরের দাবি, বাবার খাবারে বিষ দেওয়া হয়েছিল। সেই খাবার খেয়েই মৃত্যু হয়েছে বাবার।' গত ১৯ মার্চ নাকি মুখতারকে রাতের খাবারের সঙ্গে বিষ দেওয়া হয়েছিল, এমনই অভিযোগ করেছেন উমর। এছাড়াও মুখতার মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করেছেন উমর। বিষয়টি নিয়ে আদালতের যাওয়ার কথাও বলেছেন তিনি। উমরের দাবি, বাবার মৃত্যুর খবর প্রশাসনের তরফে তাঁদের জানানো হয়নি। তাঁর কথায়, 'বাবার মৃত্যু নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের কিছু বলা হয়নি। বিষয়টি আমি জানতে পারি সংবাদমাধ্যম থেকে।' এর পরই তিনি বলেন, 'দিন দু'য়েক আগেও আমি বাবার সঙ্গে দেখা করতে জেলে গিয়েছিলাম। কিন্তু বাবার সঙ্গে আমাকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। বিষ দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে আমরা আগেও যা বলেছি, এখনও সেই একই কথা বলব।'
জেল সূত্রে খবর, রোজা রেখেছিলেন মুখতার। উপবাস ভঙ্গ করার পর তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছিল। বান্দি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুনীল কৌশল জানিয়েছেন, পেটে ব্যথা নিয়ে ১৪ ঘণ্টা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। তার সেখানেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। তবে মুখতারের ভাই গাজিপুরের সাংসদ আফজল আনসারিরও একই অভিযোগ, তাঁর দাদাকে জেলের ভিতর বিষ প্রয়োগ করে মেরে ফেলা হয়েছে। মুখতারের মৃত্যুর খবর শুনেই তাঁর বাড়ির সামনে জড়ো হতে শুরু করেন অনুগামীরা। সেখানে বাড়ানো হয় নিরাপত্তা।
মৃত্যুকালে মুখতারের বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। তিনি উত্তরপ্রদেশের মৌ সদর বিধানসভার পাঁচ বারের প্রাক্তন বিধায়ক। ২০০৫ সাল থেকে উত্তরপ্রদেশ এবং পঞ্জাবের জেলে বন্দি ছিলেন মুখতার। ৬০টিরও বেশি ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। ২০২২ সালে সেপ্টেম্বর থেকে উত্তর প্রদেশে একাধিক আদালতে আটটি মামলায় সাজা পান তিনি। এর পর থেকে তিনি বন্দি ছিলেন বান্দা জেলে। গত বছর উত্তর প্রদেশ পুলিশ যে ৬৬ জন গ্যাংস্টারের তালিকা প্রকাশ করেছিল তাতেও মুখতারের নাম ছিল। সম্প্রতি মুখতার ৩৬ বছরের পুরনো এক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। সেই মামলায় তাঁকে আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেয়।