• Arvind Kejriwal : ইডি ব়্যাকেট চালাচ্ছে কোর্টে দাবি কেজরির
    এই সময় | ২৯ মার্চ ২০২৪
  • নয়াদিল্লি: আরও চার দিন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হেফাজতে পাঠানো হলো আবগারি দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। তবে বৃহস্পতিবার রাউজ় অ্যাভিনিউ আদালতে নজর কাড়ল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর নিজের সওয়াল। কোর্টে দাঁড়িয়ে কেজরির দাবি, তাঁর দল আম আদমি পার্টি (আপ)-কে ধ্বংস করে দেওয়াই ইডি-র আসল উদ্দেশ্য। দিল্লির আবগারি দুর্নীতি পুরোটাই ইডি-র তৈরি একটা ধোঁয়াশা!আবগারি দুর্নীতিতে ধৃত কেজরিওয়ালকে সাত দিনের ইডি হেফাজতে পাঠিয়েছিল রাউজ় অ্যাভিনিউ কোর্ট। বৃহস্পতিবার ছিল হেফাজতের শেষ দিন। মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী সুনীতা কেজরিওয়াল বুধবার এক ভিডিয়ো বার্তায় দাবি করেছিলেন, আবগারি দুর্নীতির আসল পর্দাফাঁস বৃহস্পতিবার কোর্টে করবেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। ফলে কৌতূহল ছিল তুঙ্গে। বিচারক কাবেরী বাওয়েজার এজলাস ছিল ভিড়ে ঠাসা। দিল্লির মন্ত্রী আতিশি এবং সৌরভ ভরদ্বাজের সঙ্গে হাজির ছিলেন অরবিন্দ-পত্নী সুনীতাও৷ দুপুর ২টো নাগাদ কেজরিকে আদালতে পেশ করে ইডি৷ আবগারি দুর্নীতি সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে কেজরিকে আরও সাত দিনের হেফাজতে চান ইডির আইনজীবী অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এস ভি রাজু৷

    উল্টোদিকে আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেই সওয়াল করার অনুমতি চান কেজরিওয়াল৷ বলেন, ‘ইডির রিম্যান্ড আবেদনের বিরোধিতা করছি না৷ ওরা যতদিন চায় আমাকে হেফাজতে রাখুক৷ কিন্তু আসল কথা হলো, ইডির দু’টো উদ্দেশ্য রয়েছে৷ প্রথমত— আমাকে গ্রেপ্তার করে আম আদমি পার্টিকে গুঁড়িয়ে দেওয়া৷ দ্বিতীয়ত— আবগারি দুর্নীতির মামলার আড়ালে তোলাবাজির চক্র চালানো৷’

    কেজরির প্রশ্ন, ‘আবগারি দুর্নীতিতে ১০০ কোটির ঘুষের লেনদেন হলে সেই টাকা কোথায় গেল? আসলে দুর্নীতি শুরু হয়েছে ইডির তদন্ত শুরুর পর৷ ইডি ২৫,০০০ এবং সিবিআই ৩১,০০০ পাতার চার্জশিট দিয়েছে৷ কিন্তু আমাকে কেন গ্রেপ্তার করা হলো, তার জবাব কোথায়?’ কেজরির দাবি, এত পাতার চার্জশিটে মাত্র চার বার তাঁর নাম এসেছে। তার মধ্যে একটা নাম সি অরবিন্দ, যিনি দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়ার সচিব ছিলেন।

    সিসোদিয়ার উপস্থিতিতে সি অরবিন্দ মুখ্যমন্ত্রীকে কিছু নথি দিয়েছিলেন বলে দাবি। কেজরির প্রশ্ন, ‘আমার বাড়িতে রোজ কত বিধায়ক আসেন ফাইল দিতে...তেমন কারও একটা মন্তব্যের ভিত্তিতে একজন মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা যায়?’ এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত শরৎ রেড্ডি পরে রাজসাক্ষী হতে চেয়েছেন। তাঁর কথা উল্লেখ করে কেজরির দাবি, ‘শরৎ রেড্ডি গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিজেপিকে ৫৫ কোটি টাকার বন্ডে অনুদান দেন।

    তার পরই ইডি আদালতে তাঁর জামিনের বিরোধিতা না করায় তিনি ছাড়া পেয়ে যান। আমি ৫৫ কোটি টাকার বন্ডের কপি কোর্টে জমা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। ওরা র‍্যাকেট চালাচ্ছে, আমার কাছে প্রমাণ আছে... ইডি চাপ দিয়ে সাক্ষীদের বয়ান বদলাতে বাধ্য করছে। সাক্ষীদের ৭টি বয়ানের মধ্যে ৬টিতে আমার নাম নেই। সপ্তম বয়ানে আমার নাম নেওয়া মাত্র ওই সাক্ষীকে ছেড়ে দেওয়া হলো?’

    পাল্টা ইডির আইনজীবীর যুক্তি ছিল, ‘তদন্তে সহযোগিতা করছেন না কেজরি। বাজেয়াপ্ত করা মোবাইলের পাসওয়ার্ড দেননি। আবগারি দুর্নীতির টাকা গোয়ায় পাচার হয়েছে। গোয়ার কিছু নেতাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মুখোমুখি বসিয়ে কেজরিকে জেরা করা প্রয়োজন।’ এর পরই চার দিনের হেফাজত দেয় আদালত।

    দিল্লির উপরাজ্যপাল ভি কে সাক্সেনা বুধবার দাবি করেছিলেন, জেল থেকে দিল্লির সরকার চালাতে তিনি দেবেন না। এদিন কোর্টে ঢোকার আগে কেজরির মন্তব্য, ‘দিল্লির মানুষই এর জবাব দেবে।’ এদিকে স্ত্রী সুনীতা অভিযোগ তুলছেন, কেজরিওয়ালের শরীর মোটেই ভালো নেই। ইডি হেফাজতে তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। কেজরিওয়াল নিজে অবশ্য আদালতে এমন কোনও অভিযোগ করেননি। কেজরিওয়ালকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরাতে দিল্লি হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল একটি জনস্বার্থ মামলা। সেটা খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
  • Link to this news (এই সময়)