Rajnath Singh : ‘পরিবারবাদী’-তোপ, তবু দেশ গঠনে রাহুলকে চান রাজনাথ
এই সময় | ২৯ মার্চ ২০২৪
এই সময়: পরিবারবাদ, দুর্নীতি এবং আক্রমণেরভাষাকে হাতিয়ার করে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ শিবিরকে বিদ্ধ করলেন দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং বিজেপির প্রবীণ নেতা রাজনাথ সিং। ভোটের মরশুম শুরু হয়ে যেতেই কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলির বিরুদ্ধে পরিবারবাদকে প্রচারের বিষয় হিসেবে সামনে এনেছে বিজেপি। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীকে একদিকে আক্রমণ, অন্য দিকে পরামর্শ দিলেন রাজনাথ। টানলেন নিজের ছেলে উত্তরপ্রদেশের বিধায়ক পঙ্কজ সিংয়ের প্রসঙ্গও।বৃহস্পতিবার ‘টাইমস নাও সামিটে’ রাজনাথ জানিয়ে দেন, তিনি যখন ২০০৭ সালে বিজেপির সভাপতি ছিলেন, তখন পঙ্কজকে টিকিট দিতে রাজি চাননি। যদিও সে সময়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী এবং প্রাক্তন উপপ্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদবানি পর্যন্ত চেয়েছিলেন পঙ্কজ টিকিট পান। তারপরেও তিনি তাঁর ছেলেকে টিকিট দেননি। এনিয়ে তাঁর কোনও আক্ষেপ নেই। রাজনাথের বক্তব্য, ‘ঘটনাচক্রে ২০১৭ সালে পঙ্কজ টিকিট পান, যখন বিজেপির সভাপতি ছিলেন অমিত শাহ।’
এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসের পরিবারবাদকে কাঠগড়ায় তোলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। রাহুল গান্ধী সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য, ‘আমি ওঁর সম্পর্কে তেমন কোনও মন্তব্য করতে চাই না। তবে আমি চাইব, তাঁকে ভগবান শক্তি দিন। তাঁর নিজের দলের মধ্যে এ ধরনের ভাবনা (পরিবারবাদ) ও প্র্যাকটিস থাকা সত্ত্বেও আমি চাইব, তিনিও যেন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তাঁর মতো করে ভূমিকা নেন।’ যদিও কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা যে ভাষায় প্রধানমন্ত্রীকে প্রতিনিয়ত আক্রমণ করে চলেছেন তার তীব্র নিন্দা করেন রাজনাথ। ‘টাইমস নাও সামিটে’ তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের কোনও সিনিয়র নেতা এই ভাষায় বিরোধীদের আক্রমণ করেন না, যে ভাষায় প্রধানমন্ত্রীকে বিরোধীরা আক্রমণ করেন।’ রাজনাথ মনে করেন, বিজেপি মর্যাদা এবং সম্মানের রাজনীতি করাতেই বিশ্বাসী।
একই সঙ্গে তাঁর দাবি, রামমন্দির প্রতিষ্ঠা, সিএএ কার্যকর করা, কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ-সহ যা যা প্রতিশ্রুতি বিজেপি দিয়েছিল, গত দশ বছরের রাজত্বকালে সেই প্রতিশ্রুতিগুলিকে বাস্তব করে দেখিয়েছে বিজেপি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আরও দাবি করেন, ইডি-সিবিআইকে মোটেই বিজেপি নিজের স্বার্থে ব্যবহার করছে না। বিজেপির এই প্রবীণ মন্ত্রীর দাবি, ‘আদালত থেকেই তো বিরোধীরা কোনও রিলিফ পাচ্ছেন না। আদালতই বিরোধী নেতাদের জেলে পাঠাচ্ছে।’ মন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘তাহলে কি আমরা দুর্নীতিকে দেশে বাড়তেই দেবো? বিজেপি কখনও এটা করবে না। কারণ দেশে দুর্নীতি রোধ করাই বিজেপির অঙ্গীকার।’
গত কয়েক বছরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে সব থেকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ঘিরে। যাকে ‘অগ্নিবীর’ হিসেবে নামাঙ্কিত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজনাথের দাবি, সাধারণত জওয়ানদের গড় বয়স এতকাল হতো ৩০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনে করেন, ১৮-২০ বছর বয়সী অগ্নিবীররা যখন বাহিনীতে যোগ দেন, তখন তাঁদের রিস্ক নেওয়ার ক্ষমতাও অনেকটা বেড়ে যায়।
তাঁর দাবি, চার বছর পর যখন এই অগ্নিবীররা অবসর নেবেন, তারপরেও তাঁদের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করার যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়েছে কেন্দ্র। এদিন লাদাখ ও ভারতীয় সীমান্ত পুরোপুরি সুরক্ষিত আছে বলেও দাবি করেন রাজনাথ। মন্ত্রীর কথায়, ‘প্রতিরক্ষা খাতে ভারতের নিজস্ব উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর জন্য ৫০০-র বেশি আইটেম এবং প্রতিরক্ষার জন্য সব মিলিয়ে প্রায় ৪৬০০ আইটেম তৈরি করা হয়েছে সরকারি সংস্থাগুলি থেকে।’