• বালি মাফিয়াদের দাপট, ময়ুরাক্ষীতে তলিয়ে যাচ্ছে বিঘা বিঘা জমি ...
    আজকাল | ২৯ মার্চ ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার সুন্দরপুর এলাকায় বালি মাফিয়াদের অবৈধ খননের ফলে বিঘার পর বিঘা জমি তলিয়ে যাচ্ছে ময়ূরাক্ষী নদীর জলে। অভিযোগ বালি মাফিয়ারা সুন্দরপুর ব্রিজ থেকে ১০০ মিটারের মধ্যে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে বড় বড় পাইপ ব্যবহার করে নদীর বুকে গভীর গর্ত করে বালি তুলে নিচ্ছে। তারপর সেই বালি পৌঁছে যাচ্ছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে।  তবে প্রশাসনের তরফ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে দ্রুত বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুন্দরপুর গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ মনসুর আলী অভিযোগ করেন, "সুন্দরপুর ব্রিজের কাছে হাতিশালা মৌজাতে আমার প্রায় ৩৩ কাঠা জমি আছে। ওই জমিতে এ বছর তিল এবং ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। শুকুর শেখ, আলী হোসেন এবং আরও কয়েকজন বালি মাফিয়া জোর করে আমার জমির উপর দিয়ে রাস্তা তৈরি করেছেন এবং জেসিবি মেশিন ব্যবহার করে জমি খুঁড়ে বালি তুলে নিচ্ছে।"তার আরও অভিযোগ, "আমার জমির ঠিক পাশেই তৈরী হয়েছে নতুন একটি বালিঘাট। প্রশাসনকে বলেও বেআইনি সেই বালিঘাট বন্ধ করতে পারিনি। বালিঘাটের প্রতিবাদ করায় আমাকে প্রচন্ড মারধরও করা হয়েছে।" ইউসুফ আলি নামে ওই গ্রামের অপর এক বাসিন্দা বলেন, "বেলগ্রামের কয়েকজন বালি মাফিয়া জোর করে আমার জমির ঠিক পাশে অবৈধ একটি বালিঘাট তৈরি করেছে। তারা জেসিবি মেশিন লাগিয়ে আমার জমি থেকে কুড়ি ফুট গভীর করে মাটি কেটে নিয়েছে। আমার জমির ঠিক পাশেই একটি বেআইনি বালি খাদান তৈরি করে সেখানে প্রায় ৭০ ফুট গর্ত করে পাইপ ব্যবহার করে নদী থেকে বালি তুলছে।" তাঁর বক্তব্য, "আমার জমি থেকে সুন্দরপুর ব্রিজ মাত্র ২০০ মিটার দূরে। এই ভাবে বালি তোলা হতে থাকলে যেকোনও সময় সুন্দরপুর ব্রিজ ভেঙে পড়তে পারে।" গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, বেআইনিভাবে জমি এবং নদী থেকে বালি তোলার ফলে ময়ূরাক্ষী নদীর পাড় বরাবর ভেঙ্গে যাচ্ছে নদী বাঁধ। তার ফলে বর্ষার মরসুমে ভাসতে পারে গোটা গ্রাম।  সুন্দরপুর গ্রামের একাধিক এলাকায় যে বেআইনিভাবে বালিঘাট চলছে তা মেনে নিয়েছেন সুন্দরপুর পঞ্চায়েত প্রধান শাহিনা বিবি। তিনি বলেন, "বেআইনি বালিঘাটগুলো নিয়ে আমি একাধিক জায়গাতে লিখিত অভিযোগ করেছি। তবে আজকের দিনেও এই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতে কয়েকটি বেআইনি বালিঘাট চলছে। কিভাবে তা চলছে প্রশাসন বলতে পারবে।"  বড়ঞা ব্লক ভূমি রাজস্ব আধিকারিক রঞ্জন দে বলেন, "বেআইনি বালিঘাট নিয়ে অভিযোগ পেলেই আমাদের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়। সুন্দরপুর গ্রামে বেআইনি বালিঘাটের অভিযোগ পেয়ে সেখানেও আমাদের তরফ থেকে অভিযান চালানো হয়েছিল এবং পোস্টারও লাগিয়ে বালি তোলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আসা হয়েছিল। তবে লোকসভা নির্বাচন চলে আসায় পুলিশ প্রশাসন বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত হওয়ার সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু লোক ফের ওই এলাকা থেকে বেআইনিভাবে বালি উত্তোলনের কাজ শুরু করা করেছে। বেআইনি কাজ বন্ধ করার বিষয়ে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।"বড়ঞা ব্লকের বিডিও গোবিন্দ দাস বলেন, "বেআইনি বালিঘাটের বিরুদ্ধে এখানে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। বেআইনি ঘাট সম্পর্কে কোনও অভিযোগ জমা পড়ে থাকলে নিশ্চিতভাবে সেখানেও অভিযান চালিয়ে তা বন্ধ করা হবে।"
  • Link to this news (আজকাল)