• Garden Reach Building Collapsed : নির্মীয়মাণ বাড়ি তোমরা ভাঙনি কেন, মেয়রকে প্রশ্ন প্রাক্তন বিচারপতির
    এই সময় | ২৯ মার্চ ২০২৪
  • এই সময়: ফোনের ও পারের কথা শোনা যায়নি। শোনা গেল এ পারের কথা। ‘কী বলছো! বাম আমলে হয়েছে তো এগুলো ভেঙে দাওনি কেনো? তোমরাও তো ১২ বছরের উপরে ক্ষমতায় আছো। তোমাদের প্রশাসন কী করছিল? গার্ডেনরিচের ভেঙে পড়া বাড়িটি নির্মীয়মাণ। তা হলে বাম আমলে কী করে হয়।’ প্রেস কনফারেন্সের মধ্যেই মোবাইলে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে কথোপকথনে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়।এ দিন প্রেস ক্লাবে ওই প্রেস কনফারেন্স চলাকালীন, বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়কে সরাসরি ফোনে ধরেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। প্রেস কনফারেন্স থামিয়ে, কল রিসিভ করে মিনিট চারেক মেয়রের সঙ্গে কথা বলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। ফোনের ওপারে মেয়রে কথা শোনা না গেলেও, আলাপচারিতার সময়ে বেশ উদ্বিগ্ন দেখায় অশোক গঙ্গোপাধ্যায়কে।

    পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, মেয়র তাঁকে ফোন করেছিলেন। এই ফোনের প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে মেয়র বলেন, ‘আমার সঙ্গে ওঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে।’ প্রেস কনফারেন্স চলাকালীন, দুই হেভিওয়েটের এমন টেলিফোন সচরাচর দেখা যায় না। ফলে এদিন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়কে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ফোন করার বিষয়টি ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে।

    বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে ফোনে বলতে শোনা যায়, ‘বাড়ি ভেঙে পড়ছে আর কাউন্সিলার দামী গাড়িতে ঘুরছে!’ অশোক গঙ্গোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে পরে বলেন, ‘আমাকে মেয়র বলছেন, ওই কাউন্সিলারের বাবার টাকা আছে। আমি বললাম, ছাড়ো ওই সব কথা। কার বাবার কত টাকা আছে, তা আমরা জানি।’

    বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আদতে খিদিরপুরের বাসিন্দা। ঘটনাচক্রে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বিধানসভা কেন্দ্র বন্দরের আওতায় পড়ে এই এলাকা। অশোক গঙ্গোপাধ্যায়কে ফোনে বলতে শোনা যায়, ‘তুমি আমার বাড়িতে এসো। তোমাকে আমার বাড়ির ছাদে নিয়ে গিয়ে দেখাব, চার দিকে বেআইনি বাড়ি কী ভাবে হচ্ছে।’ তিনি জানান, তাঁর বাড়ির চারপাশে অন্তত খান ছয়েক বেআইনি নির্মাণ রয়েছে। ফোনে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মেয়রকে বলেন, ‘এই সব ঘটনার ক্ষতিপূরণের টাকা আমরা দিতে যাবো কেন? আমাদের টাকা তো সরকারের টাকা। এই সব বেআইনি নির্মাণ দূষণ সৃষ্টি করছে। আলো-বাতাস আটকাচ্ছে। বেআইনি নির্মাণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে।’

    শহরের বেআইনি নির্মাণ নিয়ে এদিন প্রেস কনফারেন্স ডেকেছিল হাশিম আব্দুল হালিম ফাউন্ডেশন। সেখানে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে বিশিষ্ট উপস্থিত ছিলেন। কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির সঙ্গে টেলিফোনে ব্যক্তিগত আলাপচারিতা প্রকাশ্যে আসায় এদিন ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশও করেন মেয়র।

    এদিকে, কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকরা বৃহস্পিতবারও গার্ডেনরিচ এলাকা-সহ শহরের একাধিক জায়গায় বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজ করেন। গার্ডেনরিচে একটি বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে তাঁরা স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে পড়েন। কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘কোন নির্মাণগুলো বসবাসের ক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, সেই গুরুত্ব বুঝে শহর জুড়েই বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজ চলছে। গার্ডেনরিচেও একই গুরুত্ব দিয়ে এই কাজ হচ্ছে।’
  • Link to this news (এই সময়)