Hair Straightening: চুল স্ট্রেট করার খেসারত! তরুণীর ২ কিডনি বিকল
এই সময় | ২৯ মার্চ ২০২৪
সোজা, সুন্দর, ঝলমলে কে না পেতে চায়। পার্লারেও ভিড় জমান হিলা। কেরাটিন, স্মুদনিং, স্ট্রেটনিং কতশত নামের ভিড়ে ভেসে গিয়ে চুলের সাময়িক সৌন্দর্য তো বাড়ে। তবে বার কয়েক চুল স্ট্রেট করিয়ে যা পরিণতি হল যুবতী তা শুনলে আঁতকে উঠতে বাধ্য।২০২০ সালের জুন মাস, ২০২১ সালের এপ্রিল মাস ও ২০২২ সালের জুলাই মাসে চুলের স্ট্রেটনিং করিয়েছিলেন ২৬ বছরের তরুণী। তবে যতবারই স্ট্রেট করিয়েছেন ততবারই জ্বর, বমি, ডায়েরিয়া, কোমর-পিঠে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে তাঁর। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হন। চিকিৎসকরা তখন তাঁকে জানালেন, রক্তে 'ক্রিয়েটিনিন'-এর পরিমাণ অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় তাঁর দু'টি কিডনিই অকেজো হয়ে হয়ে পড়েছে।
রাসায়নিক দেওয়ার প্রসাধনী দ্রব্য ব্য়বহার করার পর অনেকই অ্যালার্জি জনতি সমস্যায় ভোগেন। তাই যে কোনও প্রসাধনী দ্রব্য ব্য়বহার করার আগে অবশ্যই 'প্যাচ টেস্ট' করে নিতে বলা হয়। তবে প্রসাধনীর দ্রব্য ব্যবহারের পর কিডনির সমস্যা হওয়া অত্যন্ত বিরল ঘটনা। বিষয়টিকে চিকিৎসকরা 'কেস স্টাডি' হিসেবে প্রকাশ করেছেন 'দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন'-এ।
অনেকই তাঁদের কোঁকরানো চুল স্ট্রেট করার দিকে ঝোঁকেন। শুধু চুল সোজা করাই নয়, সালোঁর পেশাদার, দক্ষ কর্মীদের হাতের ছোঁয়ার এই পদ্ধতিতে চুলের জেল্লাও ফিরে আসে। সবই অবশ্য রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারের কল্যাণে। অধিক পরিমাণে রাসায়নিক ব্যবহার কখনই ত্বকের জন্য উপযোগী নয়। এগুলি ব্যবহার করার পর ত্বকে নানা রকমের প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। কারও র্যাশ বেরোয়, কারও আবার চুলকানি হয়। কারও চোখ-মুখ ফুলে লাল হয়ে যায়। তবে চুল স্ট্রেট করাতে গিয়ে কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার ঘটনা একেবারেই বিরল। চিকিৎসকরাও মনে করতে পারছেন না এরকম ঘটনা আগে কখনও শুনেছেন কিনা।
তরুণী জানিয়েছেন, পার্লারে গিয়ে চুল স্ট্রেট করানোর পর পরই মূত্রের সঙ্গে রক্তের ছিটে বেরিয়ে আসছিল। মূত্রনালির সংক্রমণ কিংবা কিডনির মারাত্মক কোনও সমস্যা ছাড়াই এমন উপসর্গ দেখে ভয় পেয়ে যান তরুণী। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকদের পরামর্শ নেন। চিকিৎসকরা জানান, চুল স্ট্রেট করতে সেলুনে যে ধরণের ক্রিম ব্যবহার করা হয় সেই ক্রিমে থাকে এক ধরনের অ্যাসিড। এর কারণে মাথার চামড়া জ্বালা করতে পারে। কিন্তু তার সঙ্গ কিডনির কোনও সমস্যা রয়েছে কিনা তা বুঝতে বেশ কয়েকটি ইঁদুরের উপর এই ধরনের রাসায়নিক প্রয়োগ করে পরীক্ষা করে দেখেন।
গবেষণায় ব্য়বহৃত পাঁচটি ইঁদুরের লোমে লাগিয়ে দেওয়া হয় চুল স্ট্রেট করার ওই ক্রিম। কিছুক্ষণ পর গবেষকরা ইঁদুরগুলির মূত্রের মধ্যে খুব ছোট ছোট ক্রিস্টালের মতো কিছু জিনিসের উপস্থিতি দেখতে পান। শুধু তাই নয়, ইঁদুরের শরীরের ওই ক্রিম ব্য়বহারের ২৮ ঘণ্টার মধ্যেও তাদের রক্তে অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায় ক্রিয়েটিনিনের পরিমাণও। চিকিৎসকরা এই পরীক্ষায় থেকে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। তাঁদের মতে, চুল স্ট্রেট বা সোজা করা ক্রিমের মধ্যে যে অ্য়াসিড থাকে তা মাথার ত্বকের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। ফলে কিডনির সমস্যা দেখা দিতেই পারে।