Nirmala Sitharaman : নির্মলার অর্থবল নেই, রেখারা তা হলে কোন বলে ভোট ময়দানে
এই সময় | ২৯ মার্চ ২০২৪
এই সময়: সন্দেশখালির প্রতিবাদি মুখ রেখা পাত্রকে এবার লোকসভা ভোটে প্রার্থী করেছে বিজেপি। এখনও হলফনামা পেশ করেননি বসিরহাটের প্রার্থী রেখা। তবে সাধারণ পরিবারের হোমমেকার রেখার সম্পত্তির পরিমাণ যে আকাশছোঁয়া হবে না, সে কথা অনেকেই বলছেন। এদিকে ভোটে লড়ার মতো অর্থবল তাঁর নেই বলে বুধবার ঘোষণা করেছেন দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। কংগ্রেস, তৃণমূল থেকে বামেরা প্রত্যেকেই খোঁচা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রীকে।ভোটে লড়ার অর্থ নেই বলতে তিনি ঠিক কী বুঝিয়েছেন, তার বিশদ ব্যাখ্যা দেননি নির্মলা। তবে নির্বাচনী হলফনামায় দেওয়া তথ্য বলছে, প্রায় আড়াই কোটি টাকার মালিক সীতারামণ। ২০০৮ সালে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নির্মলা ২০১৪ থেকে তিন বার রাজ্যসভার সদস্য হয়েছেন। শেষ বার জিতেছেন ২০২২ সালে। সেই সময়ে নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হলফনামায় নির্মলা জানিয়েছিলেন, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ২ কোটি ৬৩ লক্ষ ৭৭ হাজার ৮৬১ টাকা। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বুধবার বলেছেন, ‘আমার বেতন এবং সঞ্চয় একান্ত ভাবেই আমার। তা দেশের সম্পদ নয়।’
নির্মলার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘বিজেপি দেশের ধনীতম দল। ভোটের খরচ তো তারা বহন করবে। এটা নির্মলাও জানেন। কিন্তু ঘটনা হলো, বিজেপির জনবিরোধী নীতির মুখ হয়ে গিয়েছেন তিনিও। সেই ভয়েই তিনি এ কথা বলেছেন অথবা বিজেপির পাপের বোঝা তিনি বহন করবেন না বলে এ কথা বলেছেন।’
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘আমরা বলছি না, নির্মলা সীতারামন অসৎ বা চোর। কিন্তু তিনি সরকারের পক্ষে যখন তিনি তর্ক করেন, তাঁকে দেখে খারাপ লাগে তিনি পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন দেখে।’ নির্মলার স্বামী বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ পারাকালা প্রভাকর বুধবারই নির্বাচনী বন্ডকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি বলে উল্লেখ করেছেন।
এই সূত্রে অধীরের বক্তব্য, ‘অর্থমন্ত্রীর স্বামী বলছেন, এটা শুধু ভারতবর্ষ নয়, পৃথিবীর মধ্যে সবথেকে বড় কেলেঙ্কারি। এর থেকে সরকারের কাছে লজ্জিত হওয়ার কী থাকতে পারে?’ অধীরের সংযোজন, ‘নির্মলা সীতারামন চোর আমরা কথা বলছি না, তাঁর অনেক টাকা আছে সেটাও বলছি না। দক্ষিণ ভারতে ভোট করতে টাকা লাগে তাই হয়তো তাঁর ক্ষমতায় কুলোচ্ছে না, এটাই উনি বোঝাতে চেয়েছেন।’
নির্মলা ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, বড় লোকসভার জন্য ভোটে ৯৫ লক্ষ টাকার বেশি খরচ করা যায় না। ছোট লোকসভায় সেই অঙ্ক ৭৫ লক্ষ টাকা। বড় এবং ছোট বিধানসভার জন্য খরচ করা যায় যথাক্রমে ৪০ লক্ষ এবং ২০ লক্ষ টাকা। তাহলে সেই অর্থ কি নিজের আয় বা সঞ্চিত অর্থ থেকে খরচ করতে চান না নির্মলা, সে প্রশ্ন উঠছে। কারণ, নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, পাঁচ বছর আগে যখন বাংলার বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদাররা ভোটে লড়েছিলেন, তখন তাঁদের সম্পত্তি ছিল কোটির থেকে অনেক দূরে। ২০১৯ সালে সুকান্তের ঘোষিত সম্পত্তি ছিল ৫৮,২৫,৮৬৬ টাকা, দিলীপের ৪৫,৩৬,৪৬২ টাকা।
নির্মলার বক্তব্য নিয়ে ‘ইন্ডিয়া’ শরিক ডিএমকে-র মুখপাত্র সর্বানন আন্নাদুরাই বলেন, ‘ভোটে লড়ার জন্য টাকার দরকার পড়ে না। দরকার হয় জনগণের সমর্থনের। দুঃখের বিষয় সেটাই অর্থমন্ত্রীর নেই। সেই জন্য তিনি ভোটে লড়তে ভয় পাচ্ছেন।’