এই সময়, কৃষ্ণনগর: ইডির সমন উপেক্ষা করে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র বৃহস্পতিবার দিনভর নিজের কেন্দ্রে ভোট প্রচারেই ব্যস্ত রইলেন। বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন (ফেমা) লঙ্ঘনের অভিযোগে এদিনই ইডির তলবে দিল্লিতে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। তবে সেখানে তিনি থাকেননি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্পষ্ট বললেন, ‘ইডি ইডির কাজ করছে। আমি আমার কাজ করছি।’কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বুধবারের কথোপকথনের প্রসঙ্গ টেনেও কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। সোশ্যাল মিডিয়ায় নমোর উদ্দেশে তাঁর খোঁচা, ‘প্রধানমন্ত্রী দুঃখজনকভাবে সমাজ সংস্কারক হিসেবে রাজা রামমোহন রায়ের সঙ্গে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে গুলিয়ে ফেলেছেন।’ এরপরেই তাঁর মন্তব্য, ‘ছি ছি, হোম ওয়ার্কটা ভালো করে করুন।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাতে কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী নদিয়া রাজবাড়ির বধূ অমৃতা রায়কে ফোন করে ‘ভোটের প্রচার কেমন চলছে’ জানার ফাঁকে নদিয়ার মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে ‘সমাজ সংস্কারক’ বলেছিলেন মোদী। এদিন সকাল এগারোটা থেকে ঘণ্টা দু’য়েক তিনি ছিলেন কালীগঞ্জ থানার নয়াচর গ্রামে। সেখানে সাংবাদিকরা ইডির সমনের ব্যাপারে তাঁর কাছে জানতে চান।
মহুয়া পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘কে ডেকেছে? ইডি যে ডেকেছে বলছেন, সমন আপনারা দেখেছেন? আমি তো আপনাদের কিছু বলিনি। আপনারা কীভাবে জানলেন?’ তাঁর সংযোজন, ‘আমি দিল্লি হাইকোর্টে একটা মামলা করেছিলাম ইডি তাদের তদন্তের বিভিন্ন জিনিস লিক করছে বলে। ওরা আদালতে জানিয়েছিল, ওরা সাংবাদিকদের কাছে কিছু লিক করেনি। তাহলে কীভাবে জানলেন আপনারা?’
কেন্দ্রীয় এজেন্সি তথা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উদ্দেশে মহুয়ার কটাক্ষ, ‘আগে তো সিবিআই এসেছে। এরপরে ইডি আসবে, আইটি আসবে। নরেন্দ্র মোদী এসেছেন কৃষ্ণনগরে। এরপর অমিত শাহ আসবেন। সবাইকে বলব, আপনারা আসুন। এখানকার সরপুরিয়া খেয়ে যান।’
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কৃষ্ণনগরের রাজ পরিবারের সদস্য অমৃতা রায়ের কথোপকথনের প্রসঙ্গে মহুয়া এদিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘বাংলার মানুষ একটি রাজা ও একটি রানিকেই চেনেন। রাজা বলতে রাজা রামমোহন রায়। আর রানি বলতে রানি রাসমণি। বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়কে আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি। আপনি ভোটের ময়দানে নামুন। আমাদের ৮২টি অঞ্চল আছে, ১৮৪৮টি বুথ আছে। প্রত্যেকটাতে যান, ঘুরুন। আমি শুনেছি ভিড়ে নাকি আপনার কষ্ট হয়। সেই ভয়টাকে অতিক্রম করে মানুষের সঙ্গে মেশার চেষ্টা করুন। নিশ্চয় ভোটের ময়দানে ভালো খেলা হবে।’
মহুয়ার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অমৃতা রায়ের বক্তব্য, ‘প্রধানমন্ত্রী গুলিয়ে ফেলেননি। উনি গুলিয়ে ফেলার লোক নন। দেশের অনেকের চেয়ে উনি অনেক কিছু ভালো জানেন, বোঝেন। কেউ যদি ওঁর মন্তব্য নিয়ে কটাক্ষ করেন, তাহলে সেটা নির্বুদ্ধিতার পরিচয়।’