মানুষের চামড়ায় বাঁধানো বই! অবশেষে খুলে নেবে হার্ভার্ড...
২৪ ঘন্টা | ৩০ মার্চ ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অবাক কাণ্ড হার্ভার্ডে। বই বাঁধানো রয়েছে মানুষের চামড়া দিয়ে। এবার হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি বলেছে যে কীভাবে এই অস্বাভাবিক বাইন্ডিং-কে ‘নৈতিকভাবে বিতর্কিত প্রকৃতির’ কারণে সরিয়ে দেবে।Des Destinées de l'Ame (বা ডেস্টিনিস অফ দ্য সোল) নামক বইটি ১৯৩০ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাউটন লাইব্রেরিতে রাখা হয়েছে। কিন্তু ২০১৪ সালে যখন পরীক্ষায় এটি মানুষের চামড়া দিয়ে বাঁধানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছিল তখন আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল এই বই।
বুধবার, বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে যে ‘সতর্ক অধ্যয়ন, স্টেকহোল্ডারদের ব্যস্ততা এবং বিবেচনার’ পরে এটি মানুষের চামড়ার বাঁধাই সরিয়ে ফেলবে এবং ‘এই মানব দেহাবশেষের চূড়ান্ত সম্মানজনক সৎকার করতে’ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করবে।বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই গ্রন্থাগারে ৯০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাখা ছিল বইটি। ১৮৮০-এর দশকে আর্সিন হুসে আত্মা ও মৃত্যু-পরবর্তী জীবন নিয়ে মেডিটেশন বিষয়ক বই ‘দে দেসতিনে দো লামো’ লিখেছিলেন। তিনি বইটি তার ডাক্তার বন্ধু লুডোভিক বোল্যান্ডকে দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। তিনিই মানুষের চমড়া দিয়ে বইটি বাঁধাই করেছিলেন।প্রাকৃতিক কারণে মারা যাওয়া এক নারী রোগীর শরীরের চামড়া দিয়ে বইটি বাঁধাই করেছিলেন। ওই নারীর লাশের কোনও দাবিদার ছিল না বলেও জানা যায়।১৯৩৪ সালে হার্ভার্ডে আনা হয় ‘দে দেসতিনে দো লামে’। তখন এই বইয়ের সঙ্গে ছিল চিকিৎসক বুলান্ডের একটি চিরকুট।সেই চিরকুটে লেখা ছিল, ‘মানব আত্মা নিয়ে লেখা একটি বইয়ে মানব মলাট থাকাটাই উপযুক্ত’। অজ্ঞাত ওই নারীর জীবন নিয়েও গবেষণা করছে হাফটন লাইব্রেরি।বোল্যান্ড লিখেছিলেন, ষোড়শ শতাব্দী থেকে ‘এনথ্রোপোডার্মিক’ শব্দটি বেশ প্রচলিত, যার অর্থ হচ্ছে মানুষের চামড়া দিয়ে বইয়ের মলাট করা। ওই শতকে এর প্রচলন ছিল।তখন কেউ অপরাধ করলে তার চামড়ায় তা লিখে দেওয়া হতো। অনেক সময় কেউ কেউ মরে যাওয়ার পর তার চামড়া দিয়ে বইয়ের মলাট বানিয়ে তাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের অনুরোধও করে যেতেন।১৯ শতকের অসংখ্য বিবরণ রয়েছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীদের মৃতদেহ বিজ্ঞানকে দান করা হয়েছিল। তাদের চামড়া পরে যারা বই বাঁধাই করে তাদের দেওয়া হয়েছিল।