Indian Railways : মোটা টাকার এসি কামরায় চুরি হয়েছে সবচেয়ে বেশি, তথ্য রেলের
এই সময় | ৩০ মার্চ ২০২৪
এই সময়: যত ক্লান্তই থাকুন না কেন, ট্রেনে একেবারেই ঘুম আসতে চায় না অন্তরা দত্তর। কয়েক দিন আগে যখন কালকা মেলে বেড়াতে যাওয়ার সময়েও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে ট্রেনের দুলুনিতে একবার হালকা একটা তন্দ্রা এসেছিল। প্রায় অন্ধকার কামরায় কেউ একটা ওঁর সিটের কাছে দাঁড়িয়ে রয়েছে এমনটা মনে হতেই চটকা ভেঙে উঠে বসেছিলেন।অন্তরা বলেন, ‘আমি উঠে বসার সময়েই বুঝতে পেরেছিলাম কেউ একজন তাড়াতাড়ি সরে গেল। কিছু না ভেবেই বালিশের পাশে রাখা ফোনটার দিকে হাত বাড়িয়ে দেখি ফোনটা নেই।’ সঙ্গে সঙ্গেই জোরে চিৎকার করে উঠেছিলেন ‘চোর চোর’ বলে। সহযাত্রীদের কয়েকজন চেষ্টা করেও ধরতে পারেননি সন্দেহভাজনকে।
পরে দেখা যায়, একা অন্তরার নয়, চুরি হয়েছে আরও কয়েকজন যাত্রীর। কারও ফোন, কারও হ্যান্ডব্যাগ। ভিড়ে ঠাসা স্লিপার ক্লাস নয়, এসি টু এবং এসি থ্রি-টিয়ার কামরা থেকেই প্রতিদিন বহু যাত্রীর কিছু না কিছু খোয়া যায় চোরেদের হাতে। অর্থের বিনিময়ে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্য কিনতে পেরে যাঁরা রাতের ট্রেনে অনেকটা নিশ্চিন্ত হয়ে চোখ বোজেন, তাঁদের একাংশ ঘুম ভাঙার পর আবিষ্কার করেন রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে চোরের দল তাঁদের মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করেছে।
ভারতীয় রেলের দাখিল করা তথ্য বলছে ২০২০-তে দেশের সব ক’টা রেলওয়ে জ়োন মিলে মোট ৩৭টি চুরির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। ২০২১-এ ওই সংখ্যা বেড়ে ৫৭১ এবং ২০২২-এ সেটা আরও বেড়ে ৬৯৯ হয়েছিল। অর্থাৎ, রেলের হিসেব অনুযায়ী প্রতিদিন অন্তত দু’টি করে চুরির অভিযোগ দায়ের করেছেন যাত্রীরা।
যদিও রেলের কর্মীদের মতে এটা শুধুই লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে এমন চুরির সংখ্যা। চুরি সত্ত্বেও অভিযোগ হয়নি এমন সংখ্যার কোনও হিসেব নেই। রেলের কর্মীরা জানাচ্ছেন, যত চুরির অভিযোগ নথিবদ্ধ করা হয় তার প্রায় সবটাই এসি টু-টিয়ার বা এসি থ্রি-টিয়ার কামরার যাত্রীরা করেন।
যদিও সবচেয়ে অগোছালো ভাবে যাতায়াত করেন স্লিপার এবং জেনারেল ক্লাসের যাত্রীরা। এর অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে এই ধরনের কামরায় বিপুল ভিড় এবং স্বাচ্ছন্দ্যের অভাব। এই দুইয়ের প্রভাবে স্লিপার এবং জেনারেল ক্লাসে একসঙ্গে সবাই ঘুমিয়ে পড়েছেন এমনটা হয় না বললেই চলে।
অন্য দিকে এসি কামরা শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এবং এই ধরনের কামরায় সাধারণত যাত্রীরা রাত হলেই নিজের নিজের সিটে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সেই সুযোগই কাজে লাগায় চোরেরা। ভারতীয় রেলের হিসেব বলছে ট্রেন কামরায় চুরির তালিকায় ওপরের দিকে রয়েছে নর্দার্ন, ইস্ট সেন্ট্রাল, সেন্ট্রাল এবং সাউথ সেন্ট্রাল রেলওয়ের নাম।