• তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলপথ নির্মাণে জমিজট কাটানোর চেষ্টা জারি, ভাড়া কত?
    এই সময় | ৩০ মার্চ ২০২৪
  • তারকেশ্বর - বিষ্ণুপুর নতুন রেললাইন প্রকল্পটি সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করছে পূর্ব রেল। এই অঞ্চলের যোগাযোগ এবং পর্যটনের সম্ভাবনাকে বৃদ্ধি করার জন্য এটি একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এই কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে পোড়ামাটির মন্দির সমৃদ্ধ ঐতিহ্যবাহী বিষ্ণুপুর শহরকে শৈবক্ষেত্রে তারকেশ্বরের সঙ্গে সংযুক্ত করা সম্ভব হবে। এছাড়াও জয়রামবাটি এবং কামারপুকুরে যুগপুরুষ রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব এবং মা সারদাদেবীর মন্দিরে যাওয়াও অনেক সুবিধাজনক হয়ে উঠবে। অর্থাৎ পর্যটকদের ওই সমস্ত জায়গাগুলিতে আরও অনেক সহজে পৌঁছতে পারবেন, এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমনটাই দাবি করেছে পূর্ব রেল।ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে কামারপুকুর, জয়রামবাটি, বড়গোপীনাথপুর, ময়নাপুর এবং গোকুলনগর - জয়পুরে প্রস্তাবিত স্টপেজগুলির সঙ্গে হুগলি জেলায় পূর্ব রেলের যে অংশ রয়েছে, তার মধ্যে সংযোগ তৈরি করবে এই লাইন। বর্তমানে, বিষ্ণুপুর - জয়রামবাটি - কামারপুকুর - তারকেশ্বরকে ঘিরে পর্যটন সার্কিটটি মূলত সড়ক পরিবহণের উপরে নির্ভরশীল। ফলে একদিকে যেমন পর্যটকদের খরচ বাড়ে, সঙ্গে অন্যান্য সমস্যাও থাকে। বর্তমানে হাওড়া - গোঘাট লোকাল ট্রেনে সময় লাগে কমবেশি ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। এর এটি বিষ্ণুপুর পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন হয়ে গেলে সঙ্গে আরও ৩০ মিনিট সময় লাগবে। অর্থাৎ এই পথে বাসে বিষ্ণুপুর পৌঁছতে যেখানে ৫ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে, সেখানে একটি ইএমইউ ট্রেনে মাত্র ৩ ঘণ্টায় পৌঁছে যাবে। ইএমইউ ট্রেনের হাওড়া থেকে বিষ্ণুপুর পর্যন্ত ভাড়া হবে প্রায় ৩০ টাকা, যেখানে বাসে ভাড়া প্রায় ১৫০ টাকা।

    এত সুবিধার সম্ভাবনা থাকলেও তারকেশ্বর - বিষ্ণুপুর রেললাইনের কাজ শেষ হওয়া এখন চ্যালেঞ্জের মুখে বলেই জানাচ্ছে পূর্ব রেল। ভবাদিঘি এবং গোঘাট - কামারপুকুর অংশের কাছে বসবাসকারী গ্রামবাসীদের একাংশ রেলওয়ে ট্র্যাক স্থাপনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। পূর্ব রেলওয়ে জানাচ্ছে, এই প্রকল্পের ৮২,৪৭ কিলোমিটার প্রায় সম্পূর্ণ। শুধুমাত্র ভবাদিঘি এলাকায় ৯৫০ মিটার ট্র্যাক বসানোর কাজ বাকি আছে। পূর্ব রেল জানাচ্ছে, গ্রামবাসীরা সহযোগিতা করছেন, কিন্তু এখনও প্রায় ০.৭৮ একর জমি রেলওয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি।

    এই প্রসঙ্গে পূর্ব রেলওয়ের তরফে জানান হয়েছে, 'কলকাতা হাইকোর্ট ইতিমধ্যে এই এলাকায় জমি অধিগ্রহণের পক্ষে একটি আদেশ জারি করেছে এবং কোনও আইনি বাধা নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রেলওয়ে এখনও প্রয়োজনীয় জমি পায়নি।' প্রসঙ্গত, ভবদিঘি জলাশয়ের আয়তন ১৭.৪৮ একর। এই এলাকায় রেলওয়ে ট্র্যাক স্থাপনের জন্য মাত্র ৩.০৫ একর জমির প্রয়োজন। জমিতে ২৬৮ জনের অংশীদারিত্ব রয়েছে। সেখানে রেলওয়ে ১৯১ জনের কাছ থেকে জমি পাওয়া গিয়েছ। কিন্তু ৭৭ জনের জমি এখনও বাকি রয়েছে। এই বিষয়ে ইতিমধ্যে রাজ্যের পাশাপাশি স্থানীয়দের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। রেলের আশা, শীঘ্রই এর বন্ধুত্বপূর্ণ সমাধান সম্ভব হবে।
  • Link to this news (এই সময়)