• ঝগড়ার সময় স্ত্রীকে 'ভূত', 'ডাইনি' বলা নিষ্ঠুরতা নয়! পর্যবেক্ষণ আদালতের
    এই সময় | ৩১ মার্চ ২০২৪
  • সাংসারিক অশান্তি নতুন কিছু নয়। পান থেকে চুন খসলে কিংবা মতের অমিল হলে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকে। অনেক ক্ষেত্রে প্রাক্তনের মুখ থেকেও নানা কটু কথা শোনা যায়। বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেলে কি স্বামী-স্ত্রী একে অপরের সম্পর্কে বলা অসংসদীয় শব্দগুলি আইনের চোখে অপরাধ?এই নিয়ে পটনা হাইকোর্টের একটি পর্যবেক্ষণ প্রকাশ্যে এসেছে। যা রীতিমতো চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে। ঝগড়ার সময় একে অপরকে 'ভূত' কিংবা 'ডাইনি' বলা কি নিষ্ঠুরতা? একটি মামলায় রায় দিতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দিল পটনা হাইকোর্ট। বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর বেঞ্চে চলেছিল এই মামলা।

    ১৯৯৪ সালে মহিলার বাবা তাঁর জামাইয়ের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, মেয়ের স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পণের টাকার জন্য বারবার মানসিক চাপ দিচ্ছিল। মেয়ের উপর শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্থা করা হচ্ছিল বলেও অভিযোগ জানানো হয়। তাঁর জামাইয়ের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা হয়।

    তদন্তের পর পুলিশ চার্জশিট দাখিল করে। সেই অনুযায়ী ট্রায়াল কোর্টের নির্দেশে এক বছরের কারাবাসের শাস্তি হয় জামাইয়ের। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন স্বামী। তিনি আদালতে জানান, কার কাছে পণ চাওয়া হচ্ছিল, কী ভাবেই বা হেনস্থা করা হচ্ছিল, তার কোনও প্রমাণ দাখিল করা হয়নি। শারীরিক অত্যাচারের কোনও প্রমাণ পাওয়া যানি বলেও দাবি করা হয়। সেখানেই শ্বশুর দাবি করেন, তাঁর মেয়েকে নানাভাবে হেনস্থা করা হত। ‘ভূত’ ও ‘পিশাচ’ বলে গালাগাল করা হত।

    সওয়াল-জবাব শেষে আদালতের পর্যবেক্ষণ, স্ত্রীকে শুধুমাত্র ‘ভূত’ ও ‘ডাইনি’ বলাটা কোনও নিষ্ঠুরতা নয়। বিচারপতি আরও উল্লেখ করেছেন, অনেক ক্ষেত্রেই বৈবাহিক সম্পর্ক ব্যর্থ হলে, স্বামী ও স্ত্রী একে অপরকে নিশানা করে অনেক কু'কথা বলে থাকেন। আদালত আরও উল্লেখ করেছে, স্ত্রী তাঁর বাবাকে একাধিক চিঠি লিখে হেনস্থার কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু, আদালতে প্রমাণ হিসেবে একটি চিঠিও দাখিল করা হয়নি।

    এমনকী স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন গাড়ি চেয়েছিল, না পেয়ে অত্যাচার করেছিল, এমন কোনও প্রমাণও মেলেনি। এই মামলায় পুনর্বিবেচনার আর্জিতে অনুমতি দিয়েছে আদালত।
  • Link to this news (এই সময়)