পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং বিষ্ণুপুর তিন আসনেই বিদায়ী সাংসদদের ফের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী করেছে BJP। কিন্তু, ব্যতিক্রমী ঝাড়গ্রাম। কুনার হেমব্রমকে প্রার্থী করেনি গেরুয়া শিবির। এরপর ৮ মার্চ তিনি চিঠি দিয়ে দলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা জানান। এরপর জঙ্গলমহলের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একাধিক বদল এসেছে।১০ মার্চ ব্রিগেড সমাবেশ থেকে ঝাড়গ্রামের প্রার্থী হিসেবে সাঁওতালি সাহিত্যিক কালীপদ সরেনের নাম ঘোষণা করে তৃণমূল। অন্যদিকে, বামেরা প্রার্থী করেছে সোনামণি টুডুকে। এই দুই প্রার্থীই বর্তমানে প্রচারের ময়দান দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু, এখনও ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি BJP। আর তা নিয়েই গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষ ছুড়েছে বিরোধীরা।
প্রার্থীর নাম উহ্য রেখেই প্রচারে বিজেপি। আর রাজ্যে যখন ভোট দোরগোড়ায় সেই সময় BJP-র দেওয়াল লিখনে প্রার্থীর নাম না থাকায় রীতিমতো কটাক্ষের সুর রাজ্য শাসক দলের নেতার কণ্ঠে।
ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দুলাল মুর্মু BJP-কে আক্রমণ করে বলেন, 'ঝাড়গ্রাম সংরক্ষিত আসন। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কালীপদ সোরেনকে প্রার্থী করার পর বিজেপির মাথা ঘুরে গেছে। ওরা ঘাবড়ে গিয়েছে। এই রকম এক প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোন প্রার্থী দিলে কিছুটা কাছাকাছি পৌঁছনো যায় তা নিয়ে ওরা চিন্তায় পড়েছে। এর জন্য তারা আর এই রকম কোনও প্রার্থী খুঁজে না পেয়ে ঘোষণা করছে না।'
তিনি আরও দাবি করেন, 'BJP আদিবাসীদের জল-জমি-জঙ্গল সব কেড়ে নেবে। প্রচারের ক্ষেত্রে আমরা সুবিধা পাচ্ছি। এখনও বিজেপি পার্টির সাহস হয়নি ঝাড়গ্রামে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করার। এদিকে আমাদের প্রার্থীরা মানুষের দরজায় দরজায় পৌঁছে যাচ্ছে।'
কটাক্ষের সুর বামেদের কণ্ঠেও। এই প্রসঙ্গে সিপিএমের ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক প্রদীপ কুমার সরকার বলেন, 'ঝাড়গ্রামে BJP সাংসদ কুনার হেমব্রম তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই BJP ত্যাগ করেছেন। তা সেই দলের নেতৃত্বের কাছে বড় ব্যর্থতা। গত পাঁচ বছর আগে মানুষকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট নিয়েছিল BJP, এই নির্বাচনে মানুষকে তার জবাব না দিয়ে পালিয়ে যাওয়া, তা BJP অস্বীকার করতে পারবে না।'
এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও বলেন, ' BJP প্রার্থী হিসেবে বাজারে একটা নাম শোনা যাচ্ছে ডক্টর প্রণত টুডু। কিন্তু, এখনও নাম ঘোষণা করতে না। জাতপাতের রাজনীতি কষেই ওঁরা প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে চাইছে বলে মনে করি।'
এদিকে বিরোধীদের কটাক্ষে আমল দিতে নারাজ গেরুয়া শিবির। এই প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রাম জেলা BJP-র সহ সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডু বলেন, 'BJP একটি সর্বভারতীয় দল। তা ভারতবর্ষের মধ্যে সবথেকে বড় দলও বটে। এত বড় দলে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে গেলে তা অনেক বিচার বিবেচনা করে নিতে হয়। এই বার মোদীজি বলেছেন ৪০০ পার করার কথা। তাই সেই লক্ষ্য পূরণ আমাদের করতেই হবে। ৪০০ পার করার জন্য প্রতি জায়গায় খুঁটিনাটি বিচার করে সঠিক প্রার্থীদের উপর দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। ঝাড়গ্রামও তার ব্যতিক্রম নয়।'
তিনি আরও বলেন, ' আমরা শুনতে পাচ্ছি যে ৪ তারিখ প্রার্থী ঘোষণা হবে। জঙ্গলমহলের ক্ষেত্রে খুবই বিচারবিবেচনা করে প্রার্থী দেওয়া হচ্ছে। অন্যান্য দলগুলির থেকে আমাদের প্রার্থী যথেষ্ট ভালো হবে। প্রচারে আমরা ছিলাম, আছি, থাকব। দেওয়াল লিখনে নাম বাদে সবই লেখা হচ্ছে।'