অভিরূপ দাস: গার্ডেনরিচের (Garden Reach) মর্মান্তিক দুর্ঘটনার ক্ষত এখনও টাটকা, এরই মাঝে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল পিকনিক গার্ডেনে (Picnic Garden)। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল নির্মীয়মাণ বহুতলের একাংশ। ঘটনায় কপালজোরে প্রাণে বাঁচলেন এলাকাবাসী। এই ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। স্থানীয় পুরসভার তরফে জানা যাচ্ছে, যে বাড়ির অংশ ভেঙে পড়েছে তা কোনওরকম অনুমোদন ছাড়াই নির্মাণ হচ্ছিল।
৩/১ এ পিকনিক গার্ডেন থার্ড লেনের ওই বাড়িতে শনিবার সকালে মিস্ত্রীরা রঙ করছিলেন। দড়িতে পাটাতন ঝুলিয়ে রঙ করার সময় বহুতলের কার্নিশের কিছুটা অংশ ভেঙে পড়ে। সে সময় নিচ দিয়ে একজন মোটরবাইক নিয়ে যাচ্ছিল। আচমকাই তাঁর ঘাড়ে পড়ে কার্নিশের টুকরো। চোট পান ওই ব্যক্তি। স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে ঘটনার পর এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। ওই বহুতল নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অভিযোগ করেছিলেন খোদ কাউন্সিলর ফৈয়জ আহমেদ খান।
স্থানীয় কাউন্সিলর ফৈয়জ আহমেদ খানের দাবি, ওই বাড়িটি বেআইনি। স্থানীয়রা বাড়ি নির্মাণের সময় আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল। তারপর কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগে অভিযোগ জানান কাউন্সিলর। পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা গিয়ে অনুমোদিত প্ল্যান দেখতে চান। সূত্রের খবর, কোনওরকম প্ল্যান দেখাতে পারেননি বিল্ডার। এরপর স্টপ ওয়ার্ক নোটিস দেওয়া হয় বাড়িটিতে। বাড়ি ভেঙে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।
তারপরও কেন এতদিনেও বিল্ডিং ডেমোলিশন করা হল না? কাউন্সিলর জানিয়েছেন, আমার কাছে খবর আছে ওই বিল্ডিংয়ের ডেমোলিশন অর্ডার বেরিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, পুরসভার সেই নির্দেশের প্রেক্ষিতে কোর্টে গিয়েছিলেন বিল্ডার। সেখান থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে এসেছেন। যার ফলেই এখনও গুঁড়িয়ে দেওয়া যায়নি বিল্ডিং। কাউন্সিলর জানিয়েছেন, স্টে অর্ডার এনেছেন কিনা তা আমি জানি না। কিন্তু ৩/১ এ পিকনিক গার্ডেন থার্ড লেনে ওই বহুতল সম্পূর্ণ আইন বর্হিভূতভাবে তৈরি। শনিবার তা রঙ করা হচ্ছিল। কাউন্সিলর জানিয়েছেন, বেআইনি বিল্ডিং তৈরি করা ঠেকাতেই হবে। এক বছর আগে আমি নিজে ওই বহুতলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলাম। সে কাগজপত্র আমার কাছে আছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি গার্ডেনরিচে ঝুপড়ির উপর বহুতল ভেঙে পড়ার জেরে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। আহত হয়েছেন একাধিক মানুষ। মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন স্থানীয়রা। ঘটনার পর বেআইনি নির্মাণ নিয়ে তৎপর হয় পুরসভা। পাশাপাশি কলকাতা হাই কোর্টের তরফেও শহরের বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হয়। এহেন পরিস্থিতির মাঝে নতুন করে এই ঘটনায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।