জয়ের ব্যবধান ছিল মাত্র বারো হাজারের কাছাকাছি। ঝাড়গ্রাম কেন্দ্র থেকে গতবারের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম কার্যত কান ঘেঁসে বেরিয়ে যান। গত বিধানসভা নির্বাচনে এই জেলায় ফল আরও খারাপ করে বিজেপি। আদিবাসী সমাজের মধ্যে বিজেপির উত্থানের গ্রাফ নামতে থাকে সময়ের সঙ্গে। ভোটের আগেই আবার পদ ছেড়ে দেন বিজেপি সাংসদ। শেষমেষ এই কেন্দ্রে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়তে ঝাড়গ্রাম হাসপাতালের প্রাক্তন চিকিৎসককে দাঁড় করাল বিজেপি।অবশেষে ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের জন্য বিজেপি প্রার্থীর নাম ঘোষণা হল শনিবার। চিকিৎসক পদ থেকে চলতি মাসেই ইস্তফা দিয়েছেন প্রণত টুডু। দল তাকেই ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে। কয়েকদিন ধরেই গুঞ্জন চলছিল প্রনত টুডু নাম নিয়ে। সেই জল্পনার অবসান হল শনিবার। প্রণতের আদিবাড়ি ঝাড়গ্রাম লোকসভার অন্তর্গত পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড় থানার দোবাটি গ্রামে। কর্মসূত্রে ঝাড়গ্রাম শহরে থাকেন তিনি। গত ১২ বছর তিনি ঝাড়গ্রাম হাসপাতালের রেডিয়োলজি বিভাগে ছিলেন।
সক্রিয় রাজনীতি না করলেও গত কয়েক মাস বিজেপির জেলা কার্যালয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন প্রণত। বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কাজের সঙ্গেও যুক্ত তিনি। বিভিন্ন গ্রামে স্বাস্থ্য শিবির, জঙ্গলমহলের মণীষীদের জন্মজয়ন্তী পালন, ভাষা প্রসারের মত নানা কাজে ইতিপূর্বে প্রণতকে দেখা গিয়েছে। প্রণত বলছেন, ‘ভালো লাগছে দল প্রার্থী করাই। নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়ব। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আস্থা ভরসা রেখেছে। আগামী দিনে ঝাড়গ্রামের জন্য সুদিন আসবে।’
ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ফাঁকা রেখেই দেওয়াল লিখন করে দিয়েছিল বিজেপি। তবে প্রার্থীর নাম ঘোষণা না হওয়ায় প্রচার জমছিল না। অবশেষে, নাম ঘোষণা হওয়ায় সময় নষ্ট না করেই আগামী দিন থেকে জোরকদমে প্রচার শুরু করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। অবশেষে প্রার্থীর নাম ঘোষণা হওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে জেলা নেতৃত্ব।
এই কেন্দ্র থেকে গতবারের লোকসভা নির্বাচনে নিরাশ হতে হয়েছিল রাজ্যের শাসক দলকে। আদিবাসী অধ্যুষিত কেন্দ্রে জয়জয়কার হয়েছিল বিজেপির। যদিও, গত বিধানসভা নির্বাচনে শক্তি পুনরুদ্ধার করে নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। বিধানসভা নির্বাচনে ঝাড়গ্রাম, গোপীবল্লভপুর, শালবনি সহ এই কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র জিতে নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। কুড়মি সমাজের আন্দোলনের মাঝেও এই কেন্দ্র থেকে জন সমর্থন পেতে সমর্থ্য হয় শাসক দল। সেই দিক থেকে দেখলে গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে বিজেপির শক্তি কমতে থাকে। নতুন বিজেপি প্রার্থী খেলা ঘোরাবেন? উত্তর দেবে সময়।