• Lok Sabha Election 2024: নববধূর নামে টিকিটও হাসিল ডনের!
    এই সময় | ৩১ মার্চ ২০২৪
  • অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্য়ায়। নয়া দিল্লি

    সাংসদ হইবার হলো তাঁর সাধ! শুধু সাধ নয়, সেই সাধ্যও ছিল তাঁর। লোকে বলে, বিহারে একটা সময়ে নাকি তাঁর কথায় বাঘে-গোরুতে এক ঘাটে জল খেত। হাফ ডজন খুন এবং নওয়াদা জেল পালানোর ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে টানা ১৭ বছর জেলে খেটে আসা বিহারের সেই কুখ্যাত 'ডন' অশোক মাহাতো তাই সাংসদ হওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করতেই হইচই পড়ে গিয়েছিল বিহারের রাজনীতিতে। কিন্তু তা কী করে সম্ভব? ভারতের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী, ভোটে লড়ার ক্ষেত্রে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষের পরে অন্তত ছ'বছর তো অপেক্ষা করতেই হবে। তা হলে কি ষাটে পা দেওয়া ডনের 'জননেতা' হওয়ার সাধ মাঠে মারা যাবে? এমন একটা জল্পনা ডানা মেলতেই মোক্ষম চাল চেলেছিলেন ডন। গত বছর ডিসেম্বরে জেল থেকে বেরিয়েই বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন- 'পাত্রী চাই'। সূত্রের খবর, আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব নিজে নাকি তাঁকে আশ্বাস দিয়েছিলেন- তাঁকে না হোক, ডনপত্নীকে টিকিট দিতে দলের কোনও বাধা নেই। অতএব- ঝট বিয়া, পট টিকিট! দিনকয়েক আগে পাটনার জগদম্বা মন্দিরে গিয়ে নিজের থেকে ১৬ বছরের ছোট অনিতা মাহাতোকে বিয়ে করেন ডন। কথা রেখেছেন লালুও। ডনপত্নীকে মুঙ্গের আসন থেকে ভোটে লড়ার টিকিট দিল আরজেডি। যাঁর প্রতিপক্ষ জেডি(ইউ)-এর প্রভাবশালী নেতা রাজীব রঞ্জন ওরফে লালন সিং।মোটমুটি ১৭ বছর পর ফের শিরোনামে অশোক মাহাতো। মাঝখানে অবশ্য তাঁর গ্যাংকে নিয়ে তৈরি হওয়া ওয়েব সিরিজ সুপারহিট হয়েছিল গোটা দেশে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, নিজের জন্য না-হলেও যে ভাবে তিনি ফ্যামিলি-টিকিট হাসিল করলেন, তার মধ্যেও সুপারহিট ওয়েব সিরিজ়ের মশলা রয়েছে। তাঁর এখনই সাংসদ হওয়ার ক্ষেত্রে আইনি গেরো রয়েছে- এটা বুঝতে পেরেই কার্যত রাতারাতি বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন ডন। চুলোয় যাক শুভ তিথি-নক্ষত্র! গত মঙ্গলবার অশোক বিয়ে করেন ৪৬-এর পাত্রী অনিতা কুমারীকে৷ দিল্লির একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরতা অনিতার আদি বাড়ি বিহারের লখিসরাইয়ে৷ নিজের পুরোনো 'নেটওয়ার্ক' কাজে লাগিয়ে মঙ্গলবার রাতে পাটনার কাছে জগদম্বা মন্দিরে অনিতাকে বিয়ে করার পরে যে পদক্ষেপ করেছেন অশোক, তা রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতো৷ শ্বশুরবাড়ি থেকেই অশোক সরাসরি পাটনায় পৌঁছে দেখা করেন আরজেডি সুপ্রিমো লালুর সঙ্গে৷ আর্জি একটাই, বিহারের মুঙ্গের লোকসভা আসনের টিকিট চাই। মিনিট কুড়ির বৈঠক শেষে লালু বা অশোক কেউই কোনও মন্তব্য করেননি৷ জল্পনার অবসান সদ্য ভাইরাল হওয়া একটি ছবিতে। যেখানে অনিতার হাতে খামবন্দি দলীয় প্রতীক তুলে দিতে দেখা গিয়েছে খোদ লালুকে। হ্যাঁ, মুঙ্গেরই কনফার্মড।

    নিজে জননেতা হওয়ার সাধ আপাতত চেপে রেখেই বৌয়ের জন্য প্রচারে ঝাঁপাতে চলেছেন ডন। কিন্তু আরজেডি যদি কথা না রাখত? প্ল্যান বি-ও তৈরি ছিল ডনের। বিয়ের দিনই বলেছিলেন, 'হাতের সব তাস দেখিয়ে বাজিমাত করা যায় না৷ সব বিকল্প সম্ভাবনার কথাই মাথায় রাখছি৷' সূত্রের খবর, তেমন হলে নির্দল প্রার্থী করেও বৌকে ভোটে নামাতে মরিয়া ছিলেন ডন।
  • Link to this news (এই সময়)