ঝাঁ চকচকে কোচ। লোকাল ট্রেনে গদির চেয়ার। তার উপর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন টয়লেট। ট্রেনের মধ্যে এলইডি সাইনবোর্ড। হার মানাবে মেট্রো কোচকেও! সদ্য চালু হওয়া অন্ডাল-বর্ধমান লোকাল ট্রেন দেখে খুশি হয়েছিলেন যাত্রীরা।কিন্তু, চালু হওয়ার চারদিনেই আস্ত ট্রেনের ভোলবদল! সিটের উপর গড়িয়ে পড়ছে ঝোল, বাদাম খোসা, বিস্কুট, প্যাকেটের আবর্জনায় ভর্তি গোটা কামরা। তার উপর আবার জল থৈ থৈ গোটা কামরা। এমনই ছবি ধরা পড়ল সদ্য চালু হওয়া অন্ডাল-বর্ধমান ট্রেনে। এরপরেই যাত্রীদের নাগরিক দায়িত্ব নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। প্রসঙ্গত, গত ২৪ মার্চ আসানসোল শাখায় দুটি নতুন ট্রেন চালু হয়। দুই বর্ধমান জেলার যাত্রীদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে পূর্ব রেল নতুন দুটি ট্রেন চালু করে। যার মধ্যে অন্ডাল- বর্ধমান ট্রেনটি রীতিমতো আধুনিক এবং যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যে মোড়া ছিল।
ঝাঁ চকচকে কামরা। আধুনিক মানের টয়লেট। লোকাল ট্রেনের গদিযুক্ত চেয়ার। আর এইরকম একটি ট্রেন চালুর চারদিনই চিত্রটা বদলে গেল। বসার সিটে গড়িয়ে পড়ছে তরকারির ঝোল। গোটা কামরা জলে থৈ থৈ। বাদম খোসা, প্ল্যাস্টিক প্যাকেটে ভর্তি। এককথায় চূড়ান্ত অপরিচ্ছন্ন। শুধু তাই নয়, টয়লেটের বেসিনে পড়ে নানান গুটখার প্যাকেট। চারপাশে গুটখার দাগ। এমনকী, পাঁচদিনের মধ্যে টয়লেটের ছিটকিনিও উধাও হয়ে গিয়েছে। আর এতেই প্রশ্ন উঠছে যাত্রী সচেতনতা নিয়ে। রেলের নজরদারি ছাপিয়েও যে প্রশ্ন বারবার উঠে আসছে তা হল, কেন যাত্রীরা নিজেদের নাগরিক দায়িত্ব নিয়ে এতটা অসচেতন!
এই ট্রেনের যাত্রী রাজেশ্বর নিয়োগী বলেন, 'নিয়মিত দুর্গাপুর বর্ধমান যাতায়াত করি। নতুন এই ট্রেনটি চালু হওয়ায় আমাদের যাতায়াতে অনেক সুবিধা হয়েছে। শনিবার এদিন নতুন ট্রেনের কামরা এতটাই অপরিষ্কার ছিল যে বসার জায়গাটা পর্যন্ত পরিষ্কার করে বসতে হয়েছে। হয়তো কোনও কোনও যাত্রী বসার জায়গাটিকে ডাইনিংয়ের মতো ব্যবহার করে খাবার খেয়েছেন। এই নিয়ে সকলকে সচেতন হতে হবে।'
এই প্রসঙ্গে পরিবেশকর্মী প্রকাশ দাস বলেন, 'একটা সুন্দর ব্যবস্থাপনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে নাগরিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। বিবেকবোধ জাগ্রত করতে হবে। সরকারি সম্পত্তি সুন্দর রাখার দায়িত্ব সকলের। কারণ তা সকলের ব্যবহারের জন্য। রেল কর্তৃপক্ষের উচিত এই বিষয়গুলিকে কঠোর হাতে দমন করা।'
এই বিষয়ে পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, 'বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।'