এই সময়: ইএম বাইপাস যেন নগর কলকাতার নতুন লাইফলাইন। সেই রাস্তা দিয়ে যাঁরা নিয়মিত যাতায়াত করেন, তাঁদের অনেকে নির্মীয়মাণ মেট্রো স্টেশন এবং লাইনের ছবি দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রশ্ন তুলছেন— 'কবে মেট্রোর অরেঞ্জ লাইনে ঠিকঠাক পরিষেবা চালু হবে?' বিভ্রান্তি আরও বাড়ছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষ মুখ না-খোলায়। অবশেষে শনিবার মুখ খুলে কলকাতা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সরাসরি কলকাতা পুলিশ ও কলকাতা পুরসভার বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন।তবে মেট্রোর অভিযোগ পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছে পুলিশ ও পুরসভা। তাদের পাল্টা অভিযোগ, নিজেদের অক্ষমতা ঢাকতেই রাজ্যকে কাঠগড়ায় তুলছেন মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। উল্টে তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে লালবাজার জানিয়েছে, কী ভাবে মেট্রো কর্তৃপক্ষ সময়সীমা মানেননি, সে কথা। মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি (সিসিআরএস) জনককুমার গর্গ সম্প্রতি কলকাতা মেট্রোর ইয়েলো এবং অরেঞ্জ লাইনের কাজ খতিয়ে দেখেছেন।
ইয়েলো লাইনে নোয়াপাড়া থেকে দমদম ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত মেট্রো লাইনের সম্প্রসারণ হবে। অরেঞ্জ লাইনে বেলেঘাটা থেকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় স্টেশন পর্যন্ত সম্প্রসারণ হবে মেট্রোর। সিসিআরএস অরেঞ্জ লাইনের কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তার পরেই মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এ দিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'ইএম বাইপাস পার করে বেলেঘাটা স্টেশনে যাতে যাত্রীরা নিরাপদে ঢুকতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করতে আরও ৯০ মিটার রাস্তা তৈরি করতে হবে।
তার জন্য কিছু দিন ইএম বাইপাসের একাংশে যান চলাচল বন্ধ রাখা প্রয়োজন। তার জন্য অনুমতি চেয়ে আমরা কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের জয়েন্ট কমিশনারকে ৫ জানুয়ারি, ১২ মার্চ এবং ১৪ মার্চ চিঠি দিয়েছি। ৬ ফেব্রুয়ারি চিঠি দেওয়া হয়েছে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকেও। একাধিক বৈঠকও করা হয়েছে পুলিশের সঙ্গে। কিন্তু এখনও আমরা প্রয়োজনীয় অনুমতি পাইনি।'
মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্রও একই অভিযোগ করেছেন। লালবাজার পাল্টা বিবৃতিতে জানিয়েছে, চিংড়িহাটার কাছে মেট্রোর কাজের জন্য ৩০ দিন যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। সেই অনুমতি দেওয়ার পর নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গিয়েছে— ৫০ দিন পরেও কাজ শেষ হয়নি। বাড়তি সময়ের বিষয়ে অবগত করেননি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তা ছাড়া, ২৮৬ নম্বর থেকে ২৮৭ নম্বর মেট্রো পিলারের মাঝখানের কাজ শেষ করতে ৪৩ দিন দেরি করেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। একটি বেসরকারি স্কুলের সামনে ৬০ দিনের জন্য যানবাহন নিয়ন্ত্রণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল মেট্রোকে।
অথচ সেই কাজে বাড়তি ১২৭ দিন লেগেছে। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'মেট্রোর কাজে কলকাতা পুরসভা সব সময়ে সহযোগিতা করেছে। এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদিত প্রকল্প। আমরা চাইব, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, তা চালু হোক। প্রকল্পের জন্য আমরা ওদের অনেক ফি মকুব করেছি। এর পরেও অসহযোগিতার অভিযোগ দুর্ভাগ্যজনক।'