• উত্তরবঙ্গ জুড়ে ঝড়ের তাণ্ডব! ক্ষতিগ্রস্ত বিস্তীর্ণ এলাকা, সাহায্যের আশ্বাস প্রশাসনের
    এই সময় | ০১ এপ্রিল ২০২৪
  • কয়েক মিনিটের ঝড়ের তাণ্ডব। তাতেই, উত্তরবঙ্গের একাধিক এলাকা লন্ডভন্ড। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীরা। এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে, মোট চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বাড়ি-ঘর ভেঙে পড়ে বহু মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। আগামীকাল, সোমবার জলপাইগুড়ি হাসপাতালে যাওয়ার কথা রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দ্রুত উদ্ধার কার্য চালিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার কথা জানিয়েছে স্থানীয় জেলা প্রশাসন।এদিনের ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয় কোচবিহারের মাথাভাঙায়৷ প্রায় আধ ঘণ্টা স্থায়ী ছিল ঝড়, তাতেই লন্ডভন্ড হয়ে যায় কোচবিহার ২ ব্লক ও মাথাভাঙা ১ ব্লকের বিভিন্ন এলাকা। মাথাভাঙ্গার কুর্শামারি, পচাগড় এলাকায় তিন গ্রামবাসী আহত হয়েছেন। আহতরা মাথাভাঙা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন৷ জানা গিয়েছে, বড় গাছ পড়ে ভেঙে যায় একাধিক বাড়ি । বিভিন্ন গ্রামে বিদ্যুৎ এর খুঁটি উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়৷ আহত গ্রামবাসী কেশব বর্মন বলেন বিকেলের ঝড়ে একাধিক গ্রামে উড়ে গেছে টিনের চাল। বিশালাকার গাছ পড়ে গিয়ে গ্রামে চলাচলের রাস্তায় যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। তার ঘর ভেঙ্গে যায় গাছ পড়ে। তিনি তখন ঘরেই ছিল। মাথায় চোট পেয়েছেন তিনি। পরে মাথাভাঙা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়েছেন৷

    অন্যদিকে, রবিবার বিকেল সাড়ে চারটে থেকে মাত্র পাঁচ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড় আর শিলাবৃষ্টিতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় আলিপুরদুয়ার এক নম্বর ব্লক ও কুমারগ্রাম ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। উপড়ে যায় বহু বিদ্যুতের খুঁটি ও ট্রান্সফরমার। শুধমাত্র আলিপুরদুয়ার এক নম্বর ব্লকের পাতলাখাওয়া, চকোয়াখেতি, ঘরঘরিয়া, চিলাপাতা ও তোপসিখাতা এলাকায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কমপক্ষে এক হাজার কাঁচা ও পাকা বাড়ি। শিলের তোরে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছে অগুনতি বাড়ির টিনের চাল। উপড়ে গিয়েছে প্রচুর গাছ। বিদ্যুৎ সরবরাহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় অন্ধকারে ডুবে আছে আলিপুরদুয়ার এক নম্বর ব্লকের সিংহভাগ এলাকা।

    অবিলম্বে ক্ষতিপূরণের দাবিতে ফালাকাটা-আলিপুরদুয়ার রাজ্য সড়কের তোপসিখাতায় শুরু হয়েছে পথ অবোরোধ। বড় দিনের বেলা হলেও, এদিন জেলা জুড়েই গাঢ় মেঘের কারণে চারটের পর থেকেই অন্ধকার নেমে আসে। তবে জেলা প্রশাসনের দাবি, ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে বাড়িঘরের ব্যপক ক্ষতি হলেও হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি। ঝড়ের সময় চকোয়াখেতি এলাকায় নির্বাচনী প্রচার সারছিলেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। তিনি বলেন 'চোখের নিমেষে সব কিছু লন্ডভন্ড হয়ে যায়। প্রচুর মানুষের ক্ষতি হয়েছে। নির্বাচনের বিধিনিষেধ থাকার দরুন বিষয়টি জেলা প্রশাসনের গোচরে আনা হয়েছে।' জেলা শাসক আর বিমলা বলেন 'বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করেছে রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন নিগম।

    ঝড়ের তাণ্ডব দেখা যায় জলপাইগুড়ি জেলাতেও। জলপাইগুড়ির বার্নিশ ও পাহাড়পুর সংলগ্ন এলাকা একাধিক প্রচুর বাড়ি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জলপাইগুড়ি জেলা থেকেই মোট চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে এখনও পর্যন্ত। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কার্যে হাত লাগিয়েছে বলে খবর। স্থানীয় জেলা প্রশাসনের তরফেও দ্রুত উদ্ধার কার্যে নামা হয়েছে।
  • Link to this news (এই সময়)