মাথায় ২ লাখ টাকা দেনা; ঘরে অপেক্ষায় মা-স্ত্রী, মালয়েশিয়া কাজে গিয়ে মর্মান্তিক পরিণতি বনগাঁর যুবকের
২৪ ঘন্টা | ০১ এপ্রিল ২০২৪
মনোজ মণ্ডল: বিদেশে কাজ করতে গিয়ে মর্মান্তিক পরিণতি হল বনগাঁর যুবকের। পাম বাগানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন বনগাঁর যুবক কৃ্ষ্ণপদ হালদার(৪৫)। সেখানেই শরীর খারাপ হয়ে যায় কৃষ্ণপদর। তাতেই মৃত্যু হয় তার। রবিবার তার দেহ বাড়িতে ফিরতেই কান্নায় ভেঙে পড়ল তার পরিবার। থমথমে গোটা গ্রাম।
বনগদাঁর ট্যাংড়া গ্রামে বাড়ি কৃষ্ণপদর। মৃত্যুর পর আট দিনে ভয়ংকর অস্থায় কেটেছে কৃষ্ণের পরিবারের লোকজনের। আট দিন পরে দেহ ঘরে আসতেই আর নিজেদের ধরে রাখতে পারেনি গোটা পারিবার। স্থানীয়রা জানালেন, বছর ৪৫ এর কৃষ্ণপদর স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেত। টিনের চাল দেওয়া মাটির ঘরে থাকতেন তারা। বেশ কিছু টাকাও দেনা হয় বাজারে। সেই টাকা শোধ করতে দু পয়সা বেশি রোজগারের জন্য বিদেশে পাড়ি দিয়েছিল কৃষ্ণপদ।বিদেশে যাওয়ার দেড় মাসের মধ্যে ওই দুর্ঘটনা ঘটে যায়। চলতি মাসের ২২ তারিখ হঠাৎই বাড়িতে ফোন আসে কৃষ্ণপদ অসুস্থ। তড়িঘড়ি তাকে তার সহকর্মীরা হাসপাতালে ভর্তি করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। মৃত কৃষ্ণর স্ত্রীর বক্তব্য 'বাজারে দেনা ছিল। এখানে তেমন কাজ নেই। তাই স্বপ্ন ছিল বিদেশে গিয়ে মোটা টাকা রোজগার করে দুই ছেলের পড়াশুনোর পাশাপাশি একটি ঘর বেঁধে পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর। কিন্তু তা আর হল না। কীভাবে দুই সন্তানের লেখাপড়া হবে তা বুঝে পাচ্ছেন না মহিলা। ট্যাংরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান স্বরূপ বিশ্বাস পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন ।মৃতের মা দুর্গারানী হালদার বলেন, ওর মরার বয়স হয়নি। কীভাবে কী হল বুঝতে পারছি না। ফোনে কথা হতো। ওর সঙ্গের ছেলেরা খুব ভালো। এখন দুটো ছেলেকে নিয়ে কীভাবে চলবে। এখানে ভালো ভাবে কাজ হতো না। ২ লাখ টাকা ধার হয়ে গিয়েছিল। তাই বাইরে গিয়ে টাকা আয় করে ঘর দুয়ার করবে। এই বয়সে কেন চলে গেল বুঝতে পারছি না। বৃহস্পতিবার কথা হয়েছিল। ওর বুকে যন্ত্রণা হচ্ছিল শুনতে পাচ্ছি। তাতেই সব শেষ।