সুলভে স্কচ-হুইস্কি! গ্রামে গ্রামে বিয়ার বার, মহিলা প্রার্থীর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে চক্ষু চড়কগাছ
এই সময় | ০১ এপ্রিল ২০২৪
ভোটের বাজারে ভোটারদের মন পেতে হরেক রকমের প্রতিশ্রুতি দেওয়া রাজনীতিবিদদের পুরনো অভ্যাস। সরকারে এলেই সমস্ত সুযোগ-সুবিধা হাতের কাছে পাওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হয় ভোটারদের। কর্মসংস্থান, মাথার উপর ছাদ, বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবাগুলি প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতির তালিকায় সবার উপরে থাকে। কিন্তু, কখনও শুনেছেন ভোটারদের মদ খাওয়ানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন রাজনীতিবিদরা? অবাক লাগলেও তেমনটাই ঘটেছে বাস্তবে।মহারাষ্ট্রের নির্দল প্রার্থী ভনিতা রাউত। চন্দ্রপুর জেলার চিমুর গ্রামে ঘুরে ঘুরে ভোটারদের স্বল্পমূল্যে হুইস্কি-বিয়ার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে সাংসদ হিসেবে জয়ী করলেই এলাকাবাসীরা পাবেন কম দামে হুইস্কি-বিয়ার। এ হেন অদ্ভূত নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে চক্ষু চড়কগাছ ভোটারদেরও।
অখিল ভারতী মানবতা পার্টির এই প্রার্থী নির্দল হিসেবে এবার ভোটে দাঁড়িয়েছেন। গরিব ভোটারদের মন জয় করতে ভনিতা রাউত অভিনব কায়দায় প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেড়াচ্ছেম মহারাষ্ট্রের গ্রামে গ্রামে। তিনি বলেন, 'প্রত্যেক গ্রামে বিয়ার বার তৈরি করে দেওয়া হবে। বিনামূল্যে পাওয়া যাচ্ছে বিদেশি স্কচ-হুইস্কি। গরিবরাও দেদার মদ খেতে পারবেন এবার থেকে। সংসদ তহবিল থেকেই এই খাতে খরচ করা হবে। আমায় জিতিয়ে আনলেই গ্রামে গ্রামে সুরাপ্রেমীদের পোয়াবারো।' ভনিতা রাউতের সমর্থনে রীতিমতো স্লোগানিং হচ্ছে, 'যাহা গাঁও, ওঁহা বিয়ার বার'। অর্থাৎ গ্রামে গ্রামে বিয়ার বার। এটাই এবারের ভোটে তাঁর মূল্য ইস্যু বলে জানিয়েছেন নির্দল প্রার্থী ভনিতা রাউত।
মহারাষ্ট্রের এই লোকসভা প্রার্থী তাঁর এই অদ্ভূত নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, 'জিতে এলে রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে এবার থেকে গ্রামে গ্রামে বিদেশি স্কচ-হুইস্কি দেওয়া হবে। তবে মদ্যপান যারা করবেন এবং যারা এই মদ বেচবেন, উভয়েরই লাইসেন্স বাধ্যতামূলক। আসলে গরিব মানুষ দিনভর পরিশ্রম করে রাতে একটু মদের গ্লাস হাতে রিল্যাক্স করেন। কিন্তু, ভালো মানের হুইস্কি কিংবা বিয়ার কেনার ক্ষমতা তাঁদের নেই। কেবলমাত্র দেশি মদ খান তাঁরা। যা খুব তাড়াতাড়ি শরীরে খারাপ প্রভাব ফেলে। আমি চাই গরিব মানুষরাও বিদেশি স্কচ-হুইস্কির নেশা উপভোগ করুক। আমি চাই মদের প্রকৃত নেশাটা উপভোগ করুক তাঁরা।'
নিত্য মদ্যপানের জেরে বহু মানুষের শারীরিক ক্ষতি হচ্ছে। পরিবারের প্রতি হেনস্থা, মহিলাদের উপর অত্যাচারের মতো ঘটনাও ঘটছে এর জেরে। সে ক্ষেত্রে ভনিতা রাউতের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি কতটা যুক্তিপূর্ণ? জবাবে নির্দল প্রার্থী বলেন, 'এ কারণেই আমি চাই মদ কেনাবেচার জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হোক। কেবলমাত্র সাবালক হলে তবেই মদ খাওয়ার ছাড়পত্র দেবে প্রশাসন। তবেই অপরাধ কমানো সম্ভব হবে।' ভনিতা রাউতের সংযোজন, 'আমি চাই সমাজে মদ খেয়ে অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ার আগে মানুষের মনে পাপবোধ কাজ করুক।'
উল্লেখ্য, ভনিতা রাউত এই প্রথমবার লোকসভা ভোটে লড়ছেন না। ২০১৯ সালেও তিনি নাগপুর থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। আবার সে বছরই মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে চিমুর আসন থেকে লড়েছিলেন তিনি। ২০১৯ সালেও তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে ছিল সুলভে বিদেশি স্কচ-হুইস্কি দেওয়ার বার্তা। তবে সে সময় নির্বাচন কমিশন তাঁর সিকিউরিটি ডিপোজিটের টাকা বাজেয়াপ্ত করেছিল। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ফের একবার লোকসভা নির্বাচনে এ হেন প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন ভনিতা রাউত।