• India Alliance Rally : রামলীলায় ‘ফিল গুড’, ভোট নিয়ে টেনশনও
    এই সময় | ০১ এপ্রিল ২০২৪
  • অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়, নয়াদিল্লি: রাজধানী দিল্লি মোটামুটি সারা বছর এতটাই ব্যস্ত থাকে যে, আলাদা করে দেশের অন্য সব প্রান্তের মতো ভোটের উত্তাপ এখানে তেমন টের পাওয়া যায় না। কিন্তু মার্চের শেষ দিনটা যেন ব্যতিক্রমীই। এমনিতে রবিবার, ছুটির দিন। বসন্তের যাই-যাই লগ্নে যখন দিল্লির টেম্পারেচার সবে চড়তে শুরু করেছে, ঠিক তখনই ভোটের উত্তাপ একলপ্তে অনেকখানি বাড়িয়ে দিল রামলীলা ময়দান।খাতায়-কলমে ইন্ডিয়া জোটের ২৮টি দলের সমাবেশ হলেও, রবিবার রামলীলা ভরানোর ‘অঘোষিত দায়িত্ব’ যেন ছিল কংগ্রেস ও আপের শীর্ষ নেতৃত্বের উপরে৷ অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং হেমন্ত সরেনের গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর মঞ্চকে মোদী-বিরোধী সর্বভারতীয় রাজনৈতিক মঞ্চের চেহারা দেওয়ার লক্ষ্যে আয়োজিত এদিনের সমাবেশ যাতে সুপারহিট হয়, তা নিশ্চিত করতে অল-আউট ঝাঁপিয়েছিল আপ ও কংগ্রেস৷

    দিনের শেষে দু’দলের মুখেই ফুটল হাসি। খুশি বাকিরাও। ২৮টি বিজেপি-বিরোধী দলের প্রথম সারির নেতা-নেত্রীদের সমাবেশে অবশেষে ‘ফিল গুড’ ছবি ধরা পড়ল এতদিন খানিক খাপছাড়া দেখানো ইন্ডিয়া জোটের।

    এ দিন রামলীলা ভরিয়ে দিতে জনতার একটা বড় অংশ এসেছিল পাঞ্জাব থেকে৷ সে রাজ্য ক্ষমতাসীন আপ। স্বভাবতই তাই কেজরিওয়ালের ভাবশিষ্য তথা পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবত মান সমাবেশ ভরানোর চেষ্টায় ত্রুটি রাখেননি৷ ‘চেনা রুটে’ বাস ভরে-ভরে লোক পাঠিয়েছিল পাঞ্চাবের বেশ কয়েকটি কৃষক সংগঠন৷ মঞ্চে অরবিন্দ-পত্নী সুনীতা কেজরিওয়ালের ভাষণ শেষের পরে পাঞ্জাবের আপ সমর্থিত কৃষক নেতা ও সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অবশ্য মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল।

    প্রতিবাদে শক্ত চোয়াল কি ভোটের টেনশনেই খানিকটা ঝুলে পড়েছে? নেতা কেজরির পাশে দাঁড়িয়ে তাঁরা প্রয়োজনে সারা বছর আন্দোলন করতে প্রস্তুত জানানোর পরেই পাঞ্জাবের আপ সমর্থিত কৃষক নেতা দলবীর সিংয়ের যুক্তি, ‘হাম কোশিশ তো ভরপুর করেঙ্গে, লেকিন ফির সে ভাজপা কি সরকার বননা লাগভগ তয় হ্যায়৷’

    মানে? বিজেপিকে হারাতে গেলে যে ভাবে একজোট হয়ে ইন্ডিয়া জোটের নেতাদের ঝাঁপানো দরকার ছিল, তা হয়নি বলেই দাবি একাংশের৷ এ অবস্থায় দুর্দান্ত ফলের আশা করা কি ঠিক হবে— দোলাচলে অনেকেই। অমৃতসর থেকে রামলীলায় যোগ দিতে আসা সুরজিত্‍ বাদলের যেমন ব্যাখ্যা, ‘খেতি করনে কে পহেলে সোচনা জরুরি হোতা হ্যায়। বাদ মে নেহি৷ ইঁহা তো কোই প্ল্যানিং হি নেহি হ্যায়৷ এতদিন পরে আজ এঁরা একজোট হয়ে কেজরিওয়ালজিকে সমর্থন করছেন৷ কেন্দ্রীয় এজেন্সির ভূমিকার বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন৷ এই আন্দোলনটাই যদি তিন-চার মাস আগে হতো, তা হলে নিশ্চিত লাভ হতো ইন্ডিয়া জোটের।’

    এই সমর্থকদেরই হাতে দিনভর শোভা পেয়েছে হরেক রকমের পোস্টার, প্ল্যাকার্ড৷ কোনওটায় লেখা— ‘ইয়ে অন্ধা কানুন হ্যায়’, তো কোনওটায়— ‘ম্যায় ভি কেজরিওয়াল’৷ রামলীলা ময়দানেই দেখা হয়ে গেল এক ঝাঁক বাঙালি আপ-সমর্থকের সঙ্গে৷ বাংলায় লেখা পোস্টার, ব্যানার—‘মোদী তোমার স্বৈরতন্ত্র চলছে না, চলবে না’।

    স্লোগান শুনে একবার অন্তত মনে হবে আপনি হয়তো কলকাতার ব্রিগেডের ময়দানে রয়েছেন৷ এই প্রতিবাদী বাঙালিরা অবশ্য কেউ কেউ কলকাতার। বেশির ভাগই এসেছিলেন দিল্লির বিভিন্ন প্রান্ত, নয়ডা থেকে৷ ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কেজরিওয়ালজি এক নম্বরে ছিলেন, আছেন ও থাকবেন,’— দাবি করে এঁদেরই প্রতিনিধি দিলীপ দাসের দাবি, ‘ষড়যন্ত্র করে কেজরিওয়াল এবং আপকে কিছুতেই দমিয়ে রাখা যাবে না৷ এই চেষ্টা আগে হয়েছে। আবার হবে। লাভ হবে না বিজেপির।’
  • Link to this news (এই সময়)