এই সময়: ইডির বাজেয়াপ্ত করা তিন হাজার কোটি টাকা জনতাকে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের মুখে পড়লেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে মজুরি বৃদ্ধি নিয়েও কেন্দ্রের মোদী সরকারকে বিঁধলেন তৃণমূলনেত্রী। কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়ের সঙ্গে ফোনে কথোপকথনের সময়ে গত বুধবার মোদী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ইডি পশ্চিমবঙ্গে যে টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে, সেটা কীভাবে জনতাকে ফিরিয়ে দেওয়া যায়, তা নিয়ে আইনজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হবে।লোকসভা ভোটের পর নতুন সরকার এসে এই কাজ করবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন মোদী। প্রধানমন্ত্রীর এই প্রতিশ্রুতি নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম হিসেবে করে দেখান, তিন হাজার কোটি টাকা সারা দেশের মানুষের মধ্যে বিলি করা হলে গড়ে মাথাপিছু ২১ টাকা বরাদ্দ হবে।
কৃষ্ণনগরে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে রবিবার ধুবুলিয়ায় মমতা বলেন, 'বলছে, ইডির টাকা জনগণকে দিয়ে দেবো! কত পেয়েছ তুমি স্কুল ডিপার্টমেন্ট থেকে? ৩০০৮ কোটি টাকা। তাতে কী হয়? একটা লোক ২১ টাকাও পাবে না। মনে আছে, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা দেবে বলেছিল?'
মমতার এই তির্যক মন্তব্য নিয়ে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী যখন বলেছেন, তিন হাজার কোটি টাকা ফেরত দেবেন, তিনি নিশ্চয়ই ফেরত দেবেন। এটা মোদীর গ্যারান্টি। তৃণমূল চাইছে, এটা তাদের ফেরত দেওয়া হোক। খাটের তলা থেকে যে টাকা উদ্ধার হয়েছে, তা তৃণমূলকে ফেরত দেওয়া হোক। কিন্তু এগুলো তো সম্ভব নয়।'
প্রধানমন্ত্রী টাকা ফেরত দেবেন বলে বিজেপি নেতারা নিশ্চিত হলেও কোনও বিচারধীন বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অর্থ কোনও মেকানিজ়মে ফেরত দেওয়া হবে, তার কোনও ব্যাখ্যা বিজেপি নেতারা দিতে পারেননি। একই ভাবে একশো দিনের কাজে মজুরি বৃদ্ধি নিয়েও মমতা এদিন প্রশ্ন তুলেছেন। ভোট ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর এই বৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে।
মমতার বক্তব্য, 'একশো দিনের কাজে বাংলায় সাত টাকা বাড়ল। আরে তুই তো তিন বছর টাকা দিস না! তিন বছর একশো দিনের কাজে বিজেপি টাকা দিয়েছে? তারা আবার বলছে, সাত টাকা বেড়েছে! এ যেন সর্বঘটের মিথ্যা কথা বলার কাঁঠালি কলা! একশো দিনের কাজে ৫৯ লক্ষ জব কার্ড হোল্ডারকে আমরা টাকা দিয়েছি।'
আবাস প্রকল্পেও বাংলার প্রাপ্য অর্থ বন্ধ রয়েছে। যদিও বিজেপি বিভ্রান্তিকর প্রচার চালাচ্ছে বলে তৃণমূলনেত্রী মনে করছেন। মমতার কথায়, 'কাউকে কাউকে ফোন করে বলছে, আপনি আবাস যোজনা পেয়েছেন? না পেলে আপনি আবার নাম লেখান। এই দেখুন, আমার কাছে একটি এফআইআর-এর কপি রয়েছে। বিজেপি অফিস থেকে ফোন করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, আপনারা নাম লেখান, ইলেকশনের পর বাসস্থান দেব। এতদিন দিসনি কেন? আবার ফোন করলে বলবেন, দিদি বলেছে, দিদি দিয়ে দেবে। তোমাদের দরকার নেই।'