• ফ্লোরিডা আর বাংলার উপকূল মিলের কারণেই কি ঘনঘন টর্নেডো?
    আজ তক | ০১ এপ্রিল ২০২৪
  • যেন মূর্তিমান আতঙ্ক! কালো ধূমল তীব্র গতিতে এগিয়ে আসছে। মুহূর্তের মধ্যে সব লন্ডভন্ড। রবিবার জলপাইগুড়ির ঝড়ের ভিডিও দেখে শিহরিত গোটা দেশ। যা ইন্টারনেটে প্রবল গতিতে ভাইরাল হয়েছে।  আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এটা আর পাঁচটা সাধারণ কালবৈশাখী ঝড় নয়। এটাকে মিনি টর্নেডো বলা যেতে পারে। টর্নেডোর জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জলপাইগুড়ি শহর, ধূপগুড়ি এবং ময়নাগুড়িতে একাধিক ঘরবাড়ি। এখনও পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। কেন এই মার্চ-এপ্রিল মাসে প্রতিবছর টর্নেডো দেখা যাচ্ছে বাংলায়?  
     
    টর্নেডোর কি আগাম আভাস পাওয়া যায়? আবহবিদ রবীন্দ্র গোয়েঙ্কা বলেন,'টর্নেডোর কোনও পূর্বাভাস থাকে না। ভূমি স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে টর্নেডো দানবীয় রূপ ধরে। যতক্ষণ না ভূমি স্পর্শ করছে ততক্ষণ বোঝা যায় না। আর টর্নেডো ঘূর্ণিঝড়ের মতো বড় এলাকাজুড়ে ধ্বংসীলীলা চালায় না। নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।' 

    কেন কালবৈশাখী ঝড় হঠাৎ টর্নেডোর রূপ ধরে? রবীন্দ্র জানান, মূলত তাপমাত্রার ফারাকের কারণেই তৈরি হয়। ভোরে থাকে প্রচণ্ড ঠান্ডা। দিনের বেলায় গরম পড়ে। রাতে আবার ঠান্ডা। এই তাপমাত্রার ফারাক যত বাড়ে তত বেশি টর্নেডো তৈরির প্রবণতা তৈরি হয়। এ জন্য উত্তর বাংলা ও পশ্চিমের জেলাগুলি যেমন বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও মেদিনীপুর টর্নেডো প্রবণ। এছাড়া মুর্শিদাবাদ, বীরভূম এবং মালদাও রয়েছে টর্নেডো প্রবণ এলাকার তালিকায়। 

    এশিয়ায় টর্নেডো একদম বিরল। তবে বাংলা ব্যতিক্রম।  ১৯৮৩ সালের ১২ এপ্রিল গাইঘাটা দেখেছিল ভয়ঙ্কর টর্নেডো। এক বৃদ্ধাকে উড়িয়ে নিয়ে ফেলেছিল গাছের উপর। ২০০৭ সালে মালদায় প্রবল গতির টর্নেডোর কারণে মৃত্যু হয়েছিল ২২ জনের। ২০১৫ সালে অশোকনগরে হয়েছিল টর্নেডো। গাইঘাটায় টর্নেডো হয় ২০১৬ সালে। ২০২১ সালে হালিশহরে হয়েছিল টর্নেডো। যশ ঘূর্ণিঝড় যাওয়ার পর অশোকনগর-গুমায় টর্নেডো হয়।  ২০২১ সালে টর্নেডো হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপে। সর্বশেষ সংযোজন ৩১ মার্চে জলপাইগুড়ির ঘটনা। কেন বারবার বাংলায় হচ্ছে টর্নেডো? 

    মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা টর্নেডোপ্রবণ এলাকা। বছরের যে কোনও সময় সেখানে হানা দেয় টর্নেডো। সবথেকে বেশি টর্নেডো হয় সেখানেই। ফ্লোরিডার যে ভৌগলিক অবস্থান ও পরিবেশ তার সঙ্গে মিল রয়েছে বঙ্গোপসাগর কিনারে পশ্চিমবঙ্গের। হিমালয় থেকে ঠান্ডা হওয়া থাকে উপরে। আর বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয়বাষ্পপূর্ণ গরম বাতাস ঢোকে রাজ্যে। এভাবেই তৈরি হয় টর্নেডো। 
  • Link to this news (আজ তক)