Housing Complex In Kolkata : হাউজ়িং জিন্দাবাদ, সম্পূর্ণা যেন সব পেয়েছির আসর
এই সময় | ০১ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়: সম্পূর্ণা তৃতীয়া — নামটাতেই যেন আবাসনের প্রকৃত পরিচয়। নিত্যদিনের চাহিদার প্রায় সবই আছে এই হাউজ়িংয়ে। যেমন আছেন চিকিৎসক বাসিন্দারা, আছেন শিল্পী, আছে ‘সুফল বাংলা’র স্টল। নিউ টাউনের এই আবাসন যেন সত্যিই এক স্বয়ংসম্পূর্ণ বাসস্থান।হঠাৎ রাতদুপুরে শরীরটা ঠিকঠাক লাগছে না, দরকার ডাক্তারি পরামর্শ, কোনও চিন্তা নেই। দু’জন স্বনামধন্য চিকিৎসক থাকেন আবাসনে। রান্না করতে গিয়ে ধনেপাতা বা কাঁচা লঙ্কায় টান? পাবেন আবাসনের ভিতর ‘সুফল বাংলা’র স্টলে। মন ভালো রাখতে একটু উৎসব-অনুষ্ঠানের আয়োজন হলে মন্দ হয় না? আবাসনে আছেন সঙ্গীতশিল্পীরাও।
বেঙ্গল ডিসিএলের ‘সম্পূর্ণা তৃতীয়া’ আবাসনটি রাজারহাট মেন রোডে ডিরোজিও কলেজের ঠিক পিছনে। কাছাকাছি সিটি সেন্টার ২। চলছে মেট্রো স্টেশনের কাজ। বিমানবন্দরও দূরে নয়। আর কী চাই!
আবাসনটির বয়স কিন্তু বেশি নয়, মাত্র পাঁচ বছর। এরই মধ্যে এখানকার দুর্গাপুজো স্থান করে নিয়েছে এনকেডিএ-র পুজো তালিকার সেরা দশে। হবে না-ই বা কেন? আবাসিকরা জানাচ্ছেন, সেখানে সকলে থাকেন মিলেমিশে। নিজেদের মধ্যে আন্তরিক এই সম্পর্কেই সঙ্গেই আশপাশের দু’টি আবাসনের সঙ্গেও তাঁদের সুসম্পর্ক।
আবাসন কমিটির সম্পাদক শ্যামল কুমার গিরি তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি তিনটি আবাসনের এক-দেড় হাজার মানুষ মিলে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, নানা উৎসব-পার্বন পালন করা হয়। আবার কারও বিপদে আপদেও ঝাঁপিয়ে পড়ি একসঙ্গে।’ আবাসনের সভাপতি দিলীপ কুমার সাহা ইন্ডিয়ান অয়েলে চাকরি করতেন।
তাঁর কথায়, ‘এখানে বিভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি, সম্প্রদায়ের মানুষ জোটবদ্ধ হয়ে রয়েছি। যাবতীয় পুজো, অনুষ্ঠান পালন করা হয়। আবার, যে কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে ত্রাণ পাঠানো হয় দুর্গত অঞ্চলে। এ ছাড়া বছরভর চোখ পরীক্ষা শিবির, স্বাস্থ্য শিবির, মরণোত্তর অঙ্গদানের মতো কর্মসূচি তো আছেই।’
জীবনের অনেকটা সময় বেনারসে কাটিয়ে এই আবাসনে ফ্ল্যাট কিনেছেন চিকিৎসক দম্পতি শিবনাথ ভট্টাচার্য ও রীতা ভট্টাচার্য। দু’জনেই বলেন, ‘ছোট থেকে বেনারসে কাটানোর পর সেই মায়া ত্যাগ করে রাজারহাটে থাকতে প্রথম প্রথম সমস্যা হতো। কিন্তু সম্পূর্ণা-য় আমাদের জীবনের সব বৃত্ত সম্পূর্ণ হয়েছে। এখানাকার মানুষের সুখ দুঃখ, ভালো-খারাপের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছি আমরা।’
আবাসনের ‘লেডিস সার্কল’টা বেশ বড়। অনেক সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেই হাউজ়িয়ের নারীশক্তির বড় ভূমিকা রয়েছে। নিবেদিতা সিনহা নামে এক আবাসিকের বক্তব্য, ‘কোভিডের সময় থেকে এখানকার তিনটি আবাসন যেন এক সুতোয় বাঁধা।’ পুষ্টিবিদ সৌমেন্দু ঘোষ, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী মৈনাক দাশগুপ্তদের কথায়, ‘২৪ ঘণ্টা যাবতীয় পরিষেবা পেতে ইলেকট্রিশিয়ান, লিফট ম্যান, প্লাম্বার, নিরাপত্তারক্ষীদের আবাসনেই থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
সৃজনী দাস নামে আবাসনের বাসিন্দা এক ছাত্রী বলেন, ‘পুজোর সময়ে মণ্ডপে একটা ড্রপ বক্স রাখি। তাতে যে যেমন পারেন, সহযোগিতা করেন। তা দিয়েই বিপদে আপদে সাপোর্ট স্টাফদের পাশে দাঁড়ানো হয়।’ এ সবেরই পাশাপাশি আবাসনের যুগ্ম সম্পাদক সুব্রত কুমার দাস বলেন, ‘আবাসনের উল্টোদিকে ২০ নম্বর গ্রিন ভার্জের জন্য জায়গা বরাদ্দ থাকলেও সেখানে কোনও কাজ হয়নি। আবাসনের বাইরে জঙ্গল ও আবর্জনা জমে থাকে। যে কারণে মশা, মাছির উৎপাত। বর্ষায় আবাসনের বাইরের রাস্তা জলে ডুবে ভোগান্তি বাড়ায়।’