সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা জ্ঞানবাপী মসজিদ কর্তৃপক্ষের। কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির লাগোয়া জ্ঞানবাপী মসজিদের ভিতরে হিন্দুদের পুজোপাঠ বন্ধে স্থগিতাদেশ দিতে অস্বীকার করল সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ বারাণসীর জ্ঞানবাপী 'ব্যাসজি কা তহখানা'য় পুজো, আরতি চালিয়ে যেতে পারবেন হিন্দুরা। তবে মসজিদ চত্বরে হিন্দুপক্ষের ধর্মীয় আচার পালনের বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ হিন্দু পক্ষের পুজোর আরতির পাশাপাশি মুসলিমরাও জ্ঞানবাপীতে নমাজের আয়োজন করতে পারেন। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ খুশি হিন্দু পক্ষ।এই বিষয়ে বারাণসী জেলা আদালতের ৩১ আদালতের নির্দেশ ও এলাহাবাদ হাইকোর্টের ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্দেশ বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট।
ল্লেখ্য, জ্ঞানবাপীর ভিতরে ব্যাস তেহখানায় পুজোপাঠের অনুমতি দিয়েছিল বারাণসী জেলা আদালত। বারাণসী জেলা আদালতের সেই অনুমতিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টে গিয়েছিল মুসলিম পক্ষ। কিন্তু, এলাহাবাদ হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখে। এরপর শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় মুসলিমরা। সোমবার হাইকোর্টের সেই রায়ই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। এই মুহূর্তে পুজোপাঠে স্থগিতাদেশ দিতে নারাজ হয় সর্বোচ্চ আদালত।
সোমবার শীর্ষ আদালতে মুসলিম পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে ব্যাস তেহখানায় পুজো বন্ধের আবেদন খারিজ করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ। জ্ঞানবাপীতে রয়েছে মোট চারটি তেহখানা। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত প্রার্থনা চলত সেখানে। নতুন করে সেখানেই পুজো শুরু হয়েছে। সোমবার বিচারপতিদের বেঞ্চ জানায়, চলতি বছরের ১৭ এবং ৩১ জানুয়ারি আদালতের নির্দেশের পরে এই মসজিদে নির্বিঘ্নে নমাজ পড়েছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন। অন্যদিকে, হিন্দুদের পুজোর ব্যবস্থা শুধুমাত্র তেহখানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। আপাাতত এই তেহখানায় চলবে পুজো। দুই সম্প্রদায়ই উপাসনা করতে পারবে উপরোক্ত শর্ত মেনে বলে নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। যদিও আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, তেহখানায় পুজোর অনুমতির বিষয়ে আগামী জুলাই মাসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে জ্ঞানবাপী সমীক্ষা চালায় ASI। এএসআইয়ের রিপোর্টে বলা হয় মসজিদের ওজুখানা চত্বরে মিলেছে অসম্পূর্ণ শিবলিঙ্গের অস্তিত্বও। সেই সঙ্গেই রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে মসজিদ চত্বরেই মিলেছে হনুমান, বিষ্ণু, নান্দীর মূর্তিও। এছাড়াও রয়েছে মধ্যযুগীয় দেবদেবীর মূর্তি ও ভাস্কর্যও। অর্ধেক হনুমান ও অর্ধেক সাপের দৈব ভাস্কর্যও মিলেছে। এই অবস্থায় দেশের শীর্ষ আদালতের তরফে হিন্দু পক্ষকে পুজো চালিয়ে যাওয়ার মতো অনুমতি তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।