প্রচারের তুমুল ব্যস্ত তিনি। ছুটে বেড়াচ্ছেন তমলুকের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। জন্মদিনটা সেখানেই কাটিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য। প্রচারের ফাঁকে কেকও কেটেছেন। কিন্তু, নির্বাচনী ব্যস্ততার মাঝে কোনও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের তরফ থেকে শুভেচ্ছাবার্তা তিনি পাননি।সৌজন্য এবং রাজনীতি দুটো বিপরীত প্রান্তের শব্দকে একসুতো অতীতে একাধিকবার বেঁধেছে বাংলা। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অসুস্থতার খবর শুনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৌড়ে যাওয়া হোক বা রাজ্য BJP সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কোভিডের কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রীর খোঁজ নেওয়া- অতীতে রাজনৈতিক সৌজন্যের বিস্তর নজির বঙ্গ রাজনীতির পাতা উল্টালে পাওয়া যাবে।
কিন্তু, শব্দের বৈপরিত্যকে কি অধুনা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বঙ্গের রাজনীতিকরা? প্রচারের জন্য আপাতত তমলুকেই রয়েছেন BJP-র প্রার্থী তথা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বামেদের প্রার্থী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিপক্ষ দেবাংশুর জন্মদিনে কোনও বার্তা দিতে চাননি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই সময় ডিজিটাল-এর তরফে তাঁকে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘কোনও মন্তব্য করব না’। তবে সৌজন্যতা দেখিয়েছেন সায়ন।
তিনি এই সময় ডিজিটাল মারফত দেবাংশুকে শুভেচ্ছা জানান। এই বাম প্রার্থী বলেন, ‘আমি শুনলাম দেবাংশুর জন্মদিন। ওকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। সুস্থ থাকুক, ভালো থাকুক।’ রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিদের শুভেচ্ছাবার্তা না পাওয়ার বিষয়টিকে সহজভাবেই নিয়েছেন দেবাংশু। তিনি এই সময় ডিজিটাল-কে বলেন, 'সবার কাছে তো সব তথ্য থাকে না। আমার বিপরীতে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের জন্মদিন কবে সেই তথ্য আমার কাছেও নেই। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রচারের ব্যস্ততার মধ্যে এটা জানা বা শুভেচ্ছা জানানো সম্ভব হয় না। ফলে প্রতিপক্ষটা শুভেচ্ছা জানাবেন তা আমি আশাও করি না।'
বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে জন্মদিনটা কাটাচ্ছেন দেবাংশু। সারাদিন কী করলেন? এই প্রসঙ্গে দেবাংশু জানান, সাধারণ মানুষের মধ্যেই দিন কাটিয়েছেন তিনি। বিশেষভাবে সক্ষমদের সঙ্গেও কাটিয়েছেন কিছুটা সময়। এতেই তাঁর জন্মদিন সার্থক হয়েছে বলে দাবি করেছেন দেবাংশু ভট্টাচার্য।
উল্লেখ্য, তমলুক কেন্দ্রে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপুল জনপ্রিয় সায়ন এবং দেবাংশু। পাশাপাশি দুই জনেই তরুণ মুখ। অন্যদিকে, প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একটা আলাদা জনপ্রিয়তা রয়েছে। প্রচারের ময়দানে একে অপরকে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়তে নারাজ কোনও পক্ষই। এখন দেখার ভোটের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর শেষ হাসি কে হাসেন?