Katchatheevu Island Issue : গুপ্ত আরবি খাজানা! কেন রহস্যময়ী কচ্ছতিভু দ্বীপে নজর ভারত-শ্রীলঙ্কার?
এই সময় | ০২ এপ্রিল ২০২৪
পাক স্ট্রেইটের মাঝে অবস্থিত ছোট একটি দ্বীপ কচ্ছতিভু নিয়ে ভারত এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে বিরোধ বেড়েছে। লোকসভা নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে ততই বাড়ছে বিজেপি- কংগ্রেস বাকযুদ্ধ।এই দ্বীপটি ভারতের তামিলনাড়ুর কাছাকাছি। ১৯৭৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ‘ভারত-শ্রীলঙ্কা সামুদ্রিক চুক্তি’ স্বাক্ষর করেন। চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকেই শ্রীলঙ্কার অংশ হয়েছিল এই দ্বীপ। কিন্তু স্বাধীনতার পর ফের বিরোধ শুরু হয় দ্বীপের চারপাশে মাছ ধরা নিয়ে। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ঝামেলা শেষ করতে এবং দুই দেশের সম্পর্ক জোরদার করতে ১৯৭৪ সালে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন সরকার ‘ইন্দো-শ্রীলঙ্কা মেরিটাইম চুক্তি’র অধীনে কাচাথিভুকে দ্বীপরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তরের জন্য সম্মতি দেয়। এই নিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শংকর দেশের প্রাক্তন দুই প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু এবং ইন্দিরা গান্ধীর মনোভাবের কড়া সমালোচন করেছেন। শ্রীলঙ্কার হাতে কচ্ছতিভু দ্বীপটি হস্তান্তর করার জন্য এস জয়শঙ্কর তামিলনাড়ুর বর্তমান ডিএমকে সরকারকে দায়ী করেছেন।
কচ্ছতিভু দ্বীপটি নিয়ে দু’দেশের মাথা ব্যথার কারণ কী?ভারত এবং শ্রীলঙ্কার রামেশ্বরমের মধ্যে পাক স্ট্রেটে অবস্থিত ২৮৫ একরের একটি ছোট দ্বীপ হল কচ্ছতিভু। ব্রিটিশ উপনিবেশ থাকাকালীন ব্রিটিশরা এই দ্বীপকে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির সাথে যুক্ত করে। ১৪ শতকে একটি আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে তৈরি হয়েছিল এই দ্বীপটি। ব্রিটিশ আমলে ভারত-শ্রীলঙ্কা দুই দেশই শাসন করত এই দ্বীপে। এরপর তমিলনাড়ুর রাজা রামানদা কচ্ছতিভু দ্বীপের মালিক ছিলেন যা মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অংশ ছিল। ১৯২১ সালে ভারত এবং শ্রীলঙ্কা মাছ ধরার জন্য এই দ্বীপের অংশ দাবি করে। ফলে বাড়তে থাকে বিবাদ। ভারতের স্বাধীনতার পর এই বিরোধ মেটাতেই শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আলোচনা হয় এবং ১৯৭৪ সালে চুক্তির মাধ্যমে শ্রীলঙ্কাকে দ্বীপটি দিয়ে দেয় ভারত।
কচ্ছতিভু দ্বীপের চারপাশে মাছের মজুতচুক্তির মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার হাতে দ্বীপটি হস্তান্তরের পরও দু’দেশের মধ্যের বিবাদের অবসান ঘটেনি। জওহরলাল নেহরুর একটি বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে জয়শঙ্কর বলেন, নেহরু এই দ্বীপটিকে ছোট দ্বীপ বলে বর্ণনা করেছিলেন এবং এই ছোট দ্বীপটিকে কোনও গুরুত্ব দেননি। এই দ্বীপেরদাবি ছেড়ে দিতে দ্বিধা করবেন না। এমনকি ইন্দিরা গান্ধীও নাকি এই দ্বীপের কোনও গুরুত্ব নেই বলেছিলেন। অথচ এই দ্বীপটি সামুদ্রিক মাছ এবং সামুদ্রিক খাবারে পরিপূর্ণ। তামিলনাড়ুও এর থেকে প্রচুর আয় করে। ২০১৫ সালে ৯৩,৪৭৭ টন সামুদ্রিক খাবার রফতানি করেছিল। যা থেকে আয়ের পরিমাণ ছিল ৫৩০০ কোটি টাকা। ভারত প্রতি বছর বিলিয়ন ডলার মূল্যের সমু্দ্রিক খাবার রফতানি করে, যার একটি বড় অংশ আসে কচ্ছতিভু দ্বীপ থেকে এছাড়া এই এলাকায় রয়েছে চিংড়ি মাছের প্রাচুর্যও।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, এই চুক্তির কারণে গত ২০ বছরে মোট ৬,১৮০ জন মৎস্যজীবিকে আটক করেছে শ্রীলঙ্কা। সেইসঙ্গে ১,১৭৫টি মাছ ধরার নৌকাও বাজেয়াপ্ত করেছে শ্রীলঙ্কা।