প্রদ্যুত্ দাস: রবিবার বিকেলের কয়েক মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে বদলে গিয়েছে জলপাইগুড়ি শহরের চালচিত্র। ঘরবাড়ি ভেঙে তছনছ অবস্থা শহরের বিভিন্ন এলাকার। বাড়িঘর ভেঙে, গাছ ভেঙে, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে রয়েছে শহরের রাস্তায় রাস্তায়। এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন অবস্থায় রয়েছে জলপাইগুড়ির বেশকিছু এলাকা। তবে ঝড়ের প্রভাব সবচেয়ে বেশি ছিল জলপাইগুড়ির অন্তর্গত বার্নিশ এলাকায় এবং পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গোশালা মোড়, মাহুতপাড়া, পলিটেকনিক কলেজ ক্যাম্পাস, পাতকাটা কলোনি এলাকা সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়।
এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে ঝড়ের দাপটে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। আহত শতাধিক। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন জলপাইগুড়ি সদর ব্লক এবং ময়নাগুড়ি ব্লকের মানুষ। তবে এর মধ্যেও গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো ঘটনা ময়নাগুড়ি বার্নিশ গ্রামের রায় পরিবারের। কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে মেয়ের বিয়ের জন্য তৈরি করা ছিল কিছুটা সোনার গয়না, ছিল বেশ কিছু পরিমাণ নগদ টাকা পয়সাও। ঝড়ের দাপটে গয়না সমেত আস্ত আলমারিই উড়ে গিয়েছে। এখন বিয়ের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে পরিবার জুড়ে চলছে শুধুই দিশেহারা হাহাকার।জানা গিয়েছে, বার্নিশ গ্রাম পঞ্চায়েতেরই শিশুয়াবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা কলেন রায়। মেয়ের বিয়ের প্রস্তুতি চলছে। তাই বাড়িতেই আলমারিতে রাখা ছিল সোনার গয়না সহ টাকা পয়সা। তার কথায়, ঘূর্ণিঝড়ের দমকা হাওয়া উড়িয়ে নিয়েছে জিনিসপত্র সমেত আস্ত আলমারিটাই। তার কষ্টার্জিত সঞ্চয়টুকুও হারিয়ে গিয়েছে ঝড়ের সঙ্গে। টাকা পয়সা, গয়নাগাটি, কিছুই আর নেই। স্বাভাবিকভাবেই মাথায় হাত ময়নাগুড়ির এই বাসিন্দার। কয়েক মিনিটের ঝড় কেড়ে নিয়েছে অনেক কিছুই। কারোওর মাথার ওপর ছাদ নেই, কারোওর আস্ত বাড়িটাই ভেঙে পড়েছে, স্বজন হারা হয়েছেন কেউ, কারওর আবার শেষ সম্বলটুকুও হারিয়ে গিয়েছে ঝড়ের দাপটে। শহর জুড়ে এখন চারিদিকে শুধুই হাহাকারের ছবিই উঠে আসছে।
উল্লেখ্য, এলাকায় গিয়ে দুর্গতদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাল মাঝরাতে ঝড়ে বিধ্বস্ত এলাকা মুখ্যমন্ত্রীর পরিদর্শনের পর, আজ বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করতে ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ি পৌঁছেছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।