• Jadavpur University : ফেস্টের মাইকে ঝালাপালা কান, ছাত্রেরা গেলেন থানায়
    এই সময় | ০২ এপ্রিল ২০২৪
  • এই সময়: ফেস্ট চলছে ফেস্ট, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেস্ট। সে চলুক, কিন্তু তাতে যদি আশপাশের বাসিন্দাদের ঘুম ছুটে যায়, তা হলে? আর শুধু এলাকার মানুষ তো নন, বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র, শিক্ষক, গবেষকদের অনেকে এতে সমস্যায় পড়েছেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেস্টে গভীর রাত পর্যন্ত তারস্বরে মাইক বাজছে, এমন অভিযোগ তুলেছেন ওই ভুক্তভোগীরা সবাই।পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, সমস্যায় পড়া অনেককে এই শব্দ দানবের দৌরাত্ম্য থেকে বাঁচতে রবিবার গভীর রাতে যাদবপুর থানায় ছুটতে হয়। সব মিলিয়ে, গোটা ঘটনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আলোড়ন। এতটাই যে, সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে রীতিমতো নোটিস টাঙিয়ে জানিয়ে দিতে হয়েছে যে, রাত ১০টার মধ্যে ক্যাম্পাসে যাবতীয় ফেস্ট-প্রোগ্রাম শেষ করে ফেলতে হবে, ৯০ ডেসিবেল শব্দসীমার উপর মাইক বাজানো যাবে না।

    যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন এয়ার থিয়েটারে এখন চলছে ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার ছাত্র সংসদ ফেটসু-র ফেস্ট। রবিবার রাতে সেই ফেস্টেই রাত দেড়টা-দুটো পর্যন্ত তারস্বরে মাইক বাজতে থাকে, এমনটা অভিযোগ। যার জেরে নিউ বয়েজ় হস্টেল, রিসার্চ স্কলার হস্টেল, ওল্ড পিজি হস্টেল, জিসি সেন ছাত্রাবাস-সহ আবাসিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের কান ঝালাপালা হওয়ার জোগাড়।

    এক গবেষকের কথায়, 'এমন অবস্থা হয়েছিল যে, জানলা-দরজা বন্ধ করেও টেকা যাচ্ছিল না। আয়োজকদের আমরা বহু বার অনুরোধ করি। শিক্ষকদের আবাসনে অনেক বয়স্ক মানুষ রয়েছেন, তাঁরাও অসুস্থ বোধ করছিলেন। কিন্তু কেউ কথা শোনেনি।' অবশেষে বাধ্য হয়ে রবিবার রাতেই যাদবপুর থানায় যান আবাসিক পড়ুয়াদের একাংশ। তাঁরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।

    পুলিশ কোনও রকমে বুঝিয়েসুজিয়ে তাঁদের হস্টেলে ফেরত পাঠায়। প্রতিবাদীদের মধ্যে কেউ কেউ ছিলেন বিশেষ ভাবে সক্ষম। যাদবপুরের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের বক্তব্য, 'যে সব শিক্ষক ক্যাম্পাসে থাকেন, ওই ঘটনায় তাঁদের অবস্থা করুণ হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে এই অব্যবস্থা ও অনিয়ম চলতে পারে না। আমরা এর প্রতিবাদ করছি।'

    যাদবপুরের ফেস্ট-এর এই শব্দ দানবের তাণ্ডব ক্যাম্পাসের বাইরে, এলাকার মানুষজনও অসন্তুষ্ট। গত বছরই এলাকার বাসিন্দা, কবি শ্রীজাত এই টানা শব্দ তাণ্ডবের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। ফেটসু-র তরফে ফেস্ট-এর এক আয়োজকের বক্তব্য, 'অনিবার্য কারণে রবিবার অনেক রাত পর্যন্ত ফেস্ট-এর প্রোগ্রাম চালাতে হয়েছিল। এই ধরনের অভিযোগ ওঠা সত্যিই উচিত নয়। আমরা অবশ্যই আগামী দিনে সতর্ক থাকব।'

    ভুক্তভোগীরা এর প্রতিকার চেয়ে সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করেন। রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুর দপ্তরে বেশ খানিকক্ষণ তাঁদের আলোচনা হয়। পরে বিকেলের দিকে স্নেহমঞ্জু একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করেন। যেখানে পরিষ্কার করে বলে দেওয়া হয়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নির্ধারিত শব্দমাত্রা ৯০ ডেসিবেল এবং যাবতীয় অনুষ্ঠান রাত ১০টার মধ্যে শেষ করতেই হবে।
  • Link to this news (এই সময়)