Trinamool Congress : ভোট শেষের আগে স্থগিত থাক এজেন্সির তদন্ত, দাবি তৃণমূলের
এই সময় | ০২ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়, নয়াদিল্লি: লোকসভা ভোটের গোটা প্রক্রিয়া শেষ হতে এখনও সব মিলিয়ে বাকি ৬২ দিন। তার মধ্যে যেন কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি যেন কাউকে জেরার জন্য নোটিস পাঠানো, জেরা বা গ্রেপ্তারির মতো পদক্ষেপ না-করে, সেই ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে পদক্ষেপের দাবি জানাল তৃণমূল। সোমবার তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের অফিসে গিয়ে দেখা করেন।যাতে সব দলকে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে কমিশন, সেই দাবি জানানো হয় জোড়াফুলের তরফে।
লোকসভা ভোটের মুখে কেন্দ্রীয় এজেন্সির অতিসক্রিয়তা নিয়ে সরব বিরোধীরা। দেশের অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে বাংলাতেও বিভিন্ন মামলায় তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী-লোকসভা ভোটের প্রার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ কর্মীদের ইডি-সিবিআই-আইটি-এনআইএ এর মতো বিভিন্ন এজেন্সি বারবার তলবের নামে ডেকে হেনস্থা করছে বলে অভিযোগ তুলেছে জোড়াফুল।
খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার কৃষ্ণনগরে প্রথম নির্বাচনী সভা থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ঘোষণা করেছেন, ‘অত ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কাউকে চিঠি দিলে উত্তর দিয়ে দিন, এখন নির্বাচনে ব্যস্ত রয়েছি। নির্বাচনের পরে দেখা যাবে।’ এই পরিস্থিতিতে এদিন কমিশনের কাছে তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের দাবি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এদিন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন, সাংসদ দোলা সেন, সাকেত গোখলে, সাগরিকরা ঘোষরা গিয়েছিলেন কমিশনের অফিসে। তাঁদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় এজেন্সির পদক্ষেপে সব থেকে বেশি লাভবান হচ্ছে বিজেপি। তাই তৃণমূলের দাবি, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সমান স্তরে খেলার সুযোগ দিতে হবে।
সেজন্য কমিশন যাতে ইডি, সিবিআই, আইটি এবং এনআইএ-র কাজে নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে সাময়িক স্থগিতাদেশ দেয়, সেই আর্জি জানানো হয়েছে। যদিও সূত্রের দাবি, তৃণমূলের লিখিত প্রস্তাব হাতে পেয়ে কমিশন এই মর্মে কোনও আশ্বাস দেয়নি। যদিও এই দাবির প্রেক্ষিতে বিজেপির এক প্রবীণ নেতার কটাক্ষ, ‘কেউ চুরি করলেও কি দাবি করতে পারে যে ভোট চলছে বলে কোনও তদন্ত করা যাবে না? এ তো অবাস্তব দাবি। তাহলে ভোটের সময়ে দেশে চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই হতেই থাকবে!’
দোলা বলেন, ‘ভোটারদেরও তো বুঝতে হবে যে কমিশন নিরপেক্ষ রয়েছে। তাই যাতে সব দল লড়াই করার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পায়, তা তো দেখতে হবে।’ কমিশনের কাছে তৃণমূলের অভিযোগ, সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকায় ভোটের প্রচার করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, যা করা যায় না। এছাড়াও বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মের ভিত্তিতে ভোট চাওয়ার অভিযোগও তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনে।
তৃণমূলের অভিযোগ, দুর্নীতির পাহাড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে বিজেপি, যার উদাহরণ হলো পিএম কেয়ার ফান্ড। নির্বাচনী বিধি লাগু থাকাকালীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কৃষ্ণনগরের প্রার্থী অমৃতা রায়কে ফোন করে ইডি-র বাজেয়াপ্ত টাকা সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে বিলি করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধেও এদিন অভিযোগ জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ ও অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যেভাবে সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে মন্তব্য করেছেন, তা নিয়েও নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। আবার তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে বিজেপি।
কয়েকদিন আগে বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের তথ্য দেবাংশু সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেছিলেন বলে কমিশনে অভিযোগ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিং এবং হরদীপ সিং পুরী। যার জবাবে দোলার বক্তব্য, ‘চোরের মায়ের বড় গলা!’