এজেন্সির নোটিশে হস্তক্ষেপ জরুরী, মনে করেন প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনাররা...
আজকাল | ০২ এপ্রিল ২০২৪
আবু হায়াত বিশ্বাস, দিল্লি: লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধীদের বিরুদ্ধে বেড়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সির সক্রিয়তা। রাজ্যে রাজ্যে বিরোধী নেতাদের হেনস্থা করতে ইডি, সিবিআই, আয়কর দপ্তর নেমে পড়েছে। লোকসভার আগে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী শিবির অভিযোগ করছে ‘ম্যাক্স ফিক্সিং’ এর। যে সংস্থার নিরপেক্ষতা থাকা দরকার, তারা থাকছে না। ভোটের আগে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ পাচ্ছে না বিরোধীরা। এমনই অভিযোগ যখন উঠছে, তখন দেশের প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনাররা এই ইস্যুতে মুখ খুলেছেন। তারা মনে করছেন, লোকসভা ভোটের আগে আয়কর বিভাগ, ইডি, সিবিআইয়ের বেছে বেছে বিরোধী নেতাদের ওপর পদক্ষেপ ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ ব্যাহত করছে। প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এসওয়াই কুরেশির বক্তব্য, নির্বাচন চলাকালে এজেন্সির তৎপরতায় কমিশনের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ আছে এবং করাও উচিত। তাঁর কথায়, যে কাজ তিন মাস পরে করলেও চলে তা এখন না করতে কমিশন সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর বা এজেন্সিকে নির্দেশ দিতেই পারে। কুরেশির মতোই আরও এক প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বলছেন, তাদের সময়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি কখনও। এখন যেটা হচ্ছে। নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়ে যাওয়ার পর সব রাজনৈতিক দল যাতে সমান সুযোগ পায়, তা সুনিশ্চিত করতে হবে কমিশনকে। নির্বাচনী প্রচার চলাকালীন যদি আয়কর বিভাগ দেশের প্রধান বিরোধী দলকে নোটিশ জারি করে, তাদের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে এবং অর্থ তুলে নেয়, তখন কমিশনের আয়কর বিভাগকে জিজ্ঞাসা করা উচিত, নির্বাচনের পরে কি এই পদক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করা যেত না? প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনাররা মনে করেন, নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালে এজেন্সির এই তৎপরতায় ভোটের ময়দানে সব দলকে সমান সুযোগ দেওয়ার নীতি বিঘ্নিত হচ্ছে। এটা যাতে না হয় তা নিশ্চিত করা কমিশনেরই কাজ। ভোটের সময় কমিশনকে যে কাজটি নিষ্ঠার সঙ্গে করতে হয় তা হল সব দলের জন্য উন্মুক্ত পরিবেশ তৈরি রাখা। বিরোধীদের কেন্দ্রীয় সংস্থার মাধ্যমে হেনস্থা, আয়কর নোটিশ ধরানোর মধ্যে দিয়ে সেটা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে মনে করেন তারা। রবিবারই দিল্লির রামলীলা ময়দানে গণতন্ত্র বাঁচাও সমাবেশে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী দাবি করেছিলেন, ‘ইভিএম ছাড়া, ম্যাচ ফিক্সিং ছাড়া, সমাজমাধ্যম ছাড়া এবং গণমাধ্যমের উপর চাপ সৃষ্টি ছাড়া বিজেপির পক্ষে ১৮০টির বেশি আসন জেতা অসম্ভব।’ রাহুল তাঁর ভাষণে বলেছিলেন,‘এখন আইপিএল চলছে। যখন আম্পায়ারদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়, খেলোয়াড়দের কিনে নেওয়া হয় এবং অধিনায়ককে হুমকি দেওয়া হয় ম্যাচ জেতার জন্য, সেটা ক্রিকেটে ফিক্সিং। সামনেই লোকসভা ভোট। সেখানে আম্পায়ারদের নিজেই বেছেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। আমাদের দুই খেলোয়াড়কে খেলার আগেই গ্রেপ্তার করে নেওয়া হয়েছে।’