গর্ভপাত শুধু জীবন বনাম পছন্দের অধিকারের বিষয় নয়: বিচারপতি নাগরত্ন
এই সময় | ০২ এপ্রিল ২০২৪
নয়াদিল্লি: গর্ভপাতের মতো বিষয়কে শুধুমাত্র মহিলাদের শরীরের অধিকার বনাম জীবনের অধিকারের ডিবেট হিসেবে দেখা ঠিক নয়— এমনটাই মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি ভি নাগরত্ন। তাঁর মতে, গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত নিতে একজন মহিলাকে যে মানসিক, শারীরিক এবং মেডিক্যাল সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়— সেই বিষয়টিকে মাথায় রেখে এর মূল্যায়ন করা উচিত।শনিবার একটি ইভেন্টে বক্তব্য রাখছিলেন শীর্ষ আদালতের বিচারপতি। সেখানে গুজরাটের একটি ঘটনার কথা তুলে ধরেন তিনি। গুজরাটের এক আদিবাসী তরুণীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ করা হয়। তার জেরে গর্ভবতী হয়ে পড়েন তিনি। ২৬ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা তরুণী গর্ভপাতের আবেদন নিয়ে গুজরাট হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
গর্ভস্থ শিশুর জীবনের অধিকারকে গুরুত্ব দিয়ে গর্ভপাতের অনুমতি দেয়নি হাইকোর্ট। যদিও মেডিক্যাল বোর্ড জানিয়েছিল, গর্ভপাতে কোনও সমস্যা নেই। এই পরিস্থিতিতে তরুণী শীর্ষ কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ায় গর্ভপাতের অনুমতি দেয় বিচারপতি নাগরত্ন এবং বিচারপতি ভুঁইয়ার বেঞ্চ।
সেই রায়ের কথা মনে করিয়ে বিচারপতি নাগরত্নের মন্তব্য, ‘এই বিতর্ক জীবনের অধিকার এবং মহিলাদের শরীরের অধিকারের অনেক ঊর্ধ্বে। শুধুমাত্র এই দু’টি বিষয়ের মধ্যে মেরুকরণ করা ঠিক হবে না।’ বিচারপতি নাগরত্নের মতে, এ ধরনের ঘটনায় মহিলাকে কী ধরনের মানসিক সমস্যা এবং জটিলতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, সেটা খেয়াল রাখা উচিত।
বিচারপতির কথায়, ‘কোনও মহিলার পক্ষে গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ নয়। মেডিক্যাল কারণ থাকলেও মানসিক ভাবে তাঁকে প্রস্তুতি নিতে হয়...একজন মহিলা অনেক ভেবেচিন্তে গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত নেন।’ গত বছর ২৬ বছরের এক বিবাহিত মহিলার গর্ভপাতের আর্জির প্রেক্ষিতে বিচারপতি নাগরত্ন জানিয়েছিলেন, অপরিকল্পিত গর্ভধারণ এবং যৌন হেনস্থার মাধ্যমে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ট্রমা একই রকম। কারণ, দু’টি ক্ষেত্রেই মহিলারা স্বেচ্ছায় সন্তানের জন্ম দিতে চান না।